আপনি কি কালকের ম্যাচে খেলবেন– প্রতিটি ম্যাচের আগে অধিনায়ক হিসেবে সংবাদ সম্মেলনে এমন বিব্রতকর প্রশ্ন শুনতে হয় জামাল ভূঁইয়াকে। ম্যাচ নিয়ে লক্ষ্য এবং সম্ভাবনার কথাগুলো দারুণভাবে উপস্থাপন করা ডেনমার্কপ্রবাসী এ মিডফিল্ডার হতাশার সুরে বল ঠেলে দেন পাশে থাকা কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার কোর্টে, ‘এটা ভালো বলতে পারেন কোচ। আমি জানি না।’
প্রশ্নের উত্তরটি বাস্তবেই দেখা মেলে ম্যাচের দিন। মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে শুরুর একাদশে তো ছিলেনই না, বদলি হিসেবেও জামালকে মাঠে নামাননি কোচ ক্যাবরেরা। তাতে অনেকেই জাতীয় দলে জামালের শেষ দেখতে পাচ্ছেন।
২০১৩ সালে প্রথম প্রবাসী ফুটবলার হিসেবে লাল-সবুজের জার্সিতে আর্বিভাব হয় জামালের। পারফরম্যান্স এবং ব্যক্তিত্বের কারণে বাংলাদেশের ফুটবলের পোস্টারবয় হয়ে ওঠেন ডেনমার্কে বেড়ে ওঠা এ তারকা। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরেই ক্যারিয়ারে ভাটার টান দেখা যাচ্ছে ৩৫ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডারের। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এই সময় পর্যন্ত একটি ম্যাচেও পুরো ৯০ মিনিট খেলা হয়নি জামালের। এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে খেলা দুটি ম্যাচেই বেঞ্চে গা গরম করেছেন তিনি। গত ২৫ মার্চ শিলংয়ে ভারতের বিপক্ষে এবং মঙ্গলবার সিঙ্গাপুর ম্যাচে কোচের পরিকল্পনায় ছিলেন না জামাল। তিনি বাংলাদেশের ফুটবলের ‘নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন’। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে মধ্যমাঠে শমিত সোম, হামজা চৌধুরীর ওপরই ভরসা রাখেন কোচ ক্যাবরেরা। কিন্তু অধিনায়ক হয়ে এক মিনিটও খেলার সুযোগ পেলেন না– এমন প্রশ্ন শুনে বিরক্ত জামালের উত্তর, ‘কোচকে জিজ্ঞাস করেন। তিনিই ভালো জানেন। আমাকে কেন প্রশ্ন করছেন।’
জামালের অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছে কতটা হতাশ। তবে বয়সের কারণে আগের মতো সামর্থ্য নেই জামালের। ৪ জুন ভুটানের বিপক্ষে প্রীতি ফুটবল ম্যাচে বাংলাদেশের ২-০ গোলের জয়ে একটিতে অ্যাসিস্ট ছিল তাঁর। সেই ম্যাচে ৪৫ মিনিট খেলেছিলেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে তাঁকে নামাননি কোচ। গত বছরের নভেম্বরে মালদ্বীপের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে ছিলেন না সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর পাশে থাকার জন্য। তার আগে সেপ্টেম্বরে ভুটানের বিপক্ষে দুটি ম্যাচেও জামালকে পুরো ৯০ মিনিট খেলাননি ক্যাবরেরা। দুটি ম্যাচেই ৭০ মিনিটের পর মাঠে নামানো হয় তাঁকে। প্রথম ম্যাচে খেলেছিলেন ১৬ মিনিট, দ্বিতীয়টিতে ১৫ মিনিট। একাদশে ছিলেন সর্বশেষ তিনটি ম্যাচে ২৭০ মিনিটের মধ্যে জামাল ভূঁইয়া খেলেছেন ৭৬ মিনিট। অর্থাৎ, ১৯৪ মিনিট বেঞ্চে কাটাতে হয়েছে তাঁকে। এই পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে, জামালের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার এখন হুমকির মুখে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দলীয় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত পাঁচ বিএনপিকর্মী
নোয়াখালীর হাতিয়ায় হামলায় আহত হয়েছেন বিএনপির পাঁচ কর্মী। তাদের মধ্যে চারজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার তমরদ্দি বাজারে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ জন্য একই দলের অন্য নেতার অনুসারীদের দায়ী করেছেন ভুক্তভোগীরা।
আহত ব্যক্তিরা হলেন– সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫) ও পায়েল (২৫)। তাদের বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারোবেকী গ্রামে। আহত সবাই ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের কর্মী-সমর্থক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে তমরদ্দি বাজারের একটি চা দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন কয়েকজন। এ সময় কয়েকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা করে। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।
ওই হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শিহাব উদ্দিনের ভাষ্য, সবার শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। কিছু আঘাত অনেক গভীর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অনেকের শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ জন্য চারজনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে চিকিৎসার পরামর্শ দেন।
ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দারের ভাষ্য, মঙ্গলবার ইউনিয়ন বিএনপির ঈদ পুনর্মিলনীতে আসার পথে হামলায় তাঁর কয়েকজন কর্মী আহত হন। এ ঘটনায় দুটি মামলা হলেও কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি। ওই আসামিরাই বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত। তারা সবাই উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের লোক।
তবে আলমগীর কবিরের দাবি, হামলায় তাঁর কোনো নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন না। এমন অভিযোগ সত্য নয়।
হাতিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) খোরশেদ আলম বলেন, বিএনপি নেতা তানভীর হায়দার ও আলমগীর কবিরের লোকজনের সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছেন। সংবাদ পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাদের বিরোধ অনেক পুরোনো। আগের ঘটনায় দুটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।