ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটের পাঁচ সীমান্ত দিয়ে আরও ৪৮ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। এর মধ্যে ৭ জন ভারতীয় নাগরিকও রয়েছে। শনিবার ভোরে তাদের ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে লালমনিরহাটে ঠেলে দেওয়া ৬ জনকে বিজিবি আবার ভারতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বাকিদের আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। এ নিয়ে গত ৪১ দিনে ১৪৮৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিল বিএসএফ। 

শনিবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার চাপসার সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে বাংলাদেশের সীমানায় ঠেলে দেয় বিএসএফ। পরে সীমান্তের চৈত্রানপুকুর এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৭ জন শিশু, ১২ জন নারী রয়েছেন। বিজিবি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বসবাস ও কাজ করছিলেন। 

এ বিষয়ে হরিপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জাকারিয়া মণ্ডল বলেন, বিজিবির মাধ্যমে ২৩ জনকে আটকের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিজিবি তাদের কার্যক্রম শেষে আটকদের থানায় হস্তান্তর করবে। এরপর তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পঞ্চগড়ে পৃথক দুই সীমান্ত দিয়ে চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। 

বিজিবি সূত্র জানায়, শনিবার ভোরে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মিস্ত্রিপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৪২১ দিয়ে ভারতের ১৩২ ব্যাটালিয়নের ইশানগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা ১১ জনকে ঠেলে দেয়। সকালে তাদের মাগুড়া ইউনিয়নের রজলী থেকে আটক করে বিজিবি। কাছাকাছি সময়ে তেঁতুলিয়া উপজেলার পেদিয়াগছ সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩২ এর ১ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে পাঁচজনকে ঠেলে দেওয়া হয়। পরে পেদিয়াগছ সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি। 

পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম জানান, আটক ১২ জন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বাকি ৪ জন ভারতীয় নাগরিক বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের ফেরত পাঠাতে বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। বিএসএফ তাদের ভারতীয় হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত করার পর ফেরত পাঠানো হবে।

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে এ দিন তিন ভারতীয়সহ ৬ নারী ও পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। ভোরে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের ঠেলে দেওয়া হয়। 

বিজিবি জানায়, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ভারতের ১৬৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রতনপুর ক্যাম্পের সদস্যরা তিন ভারতীয়সহ ৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয়। তারা বাংলাদেশের প্রায় দেড় কিলোমিটার অভ্যন্তরের ওই ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রামের কমলার বাজারে ঘোরাফেরা করছিলেন। স্থানীয়রা দেখে খবর দিলে বিজিবি তাদের আটক করে। 

শ্রীরামপুর বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার জুবায়ের রহমান জানান, ঠেলে দেওয়া ৬ জনকেই আবার বিজিবি ও স্থানীয়রা মিলে ভারতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ওই ব্যক্তিরা বর্তমানে ভারতীয় একটি চা বাগানে অবস্থান করছেন। 

জেলার হাতীবান্ধায় দুই সীমান্তে বিএসএফের ঠেলে দেওয়া ৩ জনকে আটক করেছে বিজিবি। আরও ৩ জন সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন। 

এলাকাবাসী ও বিজিবি জানায়, উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের দইখাওয়া সীমান্ত দিয়ে ৩ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয় বিএসএফ। পরে বিজিবি তাদের আটক করে হাতীবান্ধা থানায় সোপর্দ করে। আটক ব্যক্তিরা ৮-১০ বছর আগে অবৈধভাবে ভারতে কাজের জন্য গিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি সীমান্তে ৩ জনকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা রুখে দেয় বিজিবি ও এলাকাবাসী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প শইন ব এসএফ উপজ ল র ব এসএফ ৩ জনক ৬ জনক

এছাড়াও পড়ুন:

নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ

নওগাঁর ধামইরহাট সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভোরে ধামইরহাট উপজেলার আগ্রাদ্বিগুন সীমান্ত পিলার ২৫৬/৭ এস কাছ দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হলে বিজিবির সদস্যরা তাদেরকে আটক করেন। তাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং আটজন নারী। 

বৃহস্পতিবার দুপুরে এসব তথ্য জানিয়েছেন পত্নীতলা ১৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

আরো পড়ুন:

গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ

বড়লেখা সীমান্ত দিয়ে ১০ রোহিঙ্গাকে ঠেলে দিয়েছে বিএসএফ

আটকরা হলেন—আছমা বেগম (৪০), খাদিজা বেগম (৩৪), পাখি বেগম (২৪), রুমা বেগম (২৫), কাকলি আক্তার (২৭), রুজিনা আক্তার (৩৩), কোহিনুর বেগম (২৬), নাসরিন বেগম (৩৩), মঞ্জুরুল ইসলাম (৩৬), সুমন হোসেন (২৭)। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের নাগরিক।

বিজিবি জানিয়েছে, আগ্রাদ্বিগুন বিওপির টহল কমান্ডার জেসিও সুবেদার মো. জিহাদ আলীর নেতৃত্বে একটি টহল দল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে আনুমানিক এক কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে মহেষপুরে ওই ১০ জনকে ঘোরাঘুরি করতে দেখে আটক করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, তারা বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে ভারতে যান। মুম্বাই শহরে পুরুষ দুজন রাজমিস্ত্রি হিসেবে এবং নারী আটজন গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতেন। সেখানে তাদেরকে আটক করে ভারতীয় পুলিশ। গত ২৯ জুলাই ভারতের হরিবংশীপুর বিএসএফ ক্যাম্পে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে বিএসএফ ওই ১০ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিলে বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা/সাজু/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চুয়াডাঙ্গায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক, ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর
  • দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে ১৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করেছে বিএসএফ 
  • নওগাঁয় ১০ জনকে ঠেলে দিল বিএসএফ
  • নওগাঁর সীমান্ত দিয়ে ১০ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • পঞ্চগড়ের দুই সীমান্ত দিয়ে আরও ১৭ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
  • গাংনী সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠিয়েছে বিএসএফ
  • চোরাচালানে গিয়ে বিএসএফের হাতে আটক, ফিরিয়ে এনে ব্যবস্থা নিচ্ছে বিজিবি
  • মেহেরপুর সীমান্ত দিয়ে ১৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ