সাত ভারতীয়সহ আরও ৪৮ জনকে ঠেলে পাঠাল বিএসএফ
Published: 14th, June 2025 GMT
ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড় ও লালমনিরহাটের পাঁচ সীমান্ত দিয়ে আরও ৪৮ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দিয়েছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ। এর মধ্যে ৭ জন ভারতীয় নাগরিকও রয়েছে। শনিবার ভোরে তাদের ঠেলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে লালমনিরহাটে ঠেলে দেওয়া ৬ জনকে বিজিবি আবার ভারতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বাকিদের আটক করে পুলিশে হস্তান্তর করেছে বিজিবি। এ নিয়ে গত ৪১ দিনে ১৪৮৩ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিল বিএসএফ।
শনিবার ভোরে ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার চাপসার সীমান্ত দিয়ে ২৩ জনকে বাংলাদেশের সীমানায় ঠেলে দেয় বিএসএফ। পরে সীমান্তের চৈত্রানপুকুর এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি। আটক ব্যক্তিদের মধ্যে ৭ জন শিশু, ১২ জন নারী রয়েছেন। বিজিবি জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা স্বীকার করেছেন, তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভারতের বিভিন্ন স্থানে বসবাস ও কাজ করছিলেন।
এ বিষয়ে হরিপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জাকারিয়া মণ্ডল বলেন, বিজিবির মাধ্যমে ২৩ জনকে আটকের বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিজিবি তাদের কার্যক্রম শেষে আটকদের থানায় হস্তান্তর করবে। এরপর তাদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চগড়ে পৃথক দুই সীমান্ত দিয়ে চার ভারতীয়সহ ১৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
বিজিবি সূত্র জানায়, শনিবার ভোরে সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মিস্ত্রিপাড়া সীমান্তের মেইন পিলার ৪২১ দিয়ে ভারতের ১৩২ ব্যাটালিয়নের ইশানগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা ১১ জনকে ঠেলে দেয়। সকালে তাদের মাগুড়া ইউনিয়নের রজলী থেকে আটক করে বিজিবি। কাছাকাছি সময়ে তেঁতুলিয়া উপজেলার পেদিয়াগছ সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩২ এর ১ নম্বর সাব পিলার এলাকা দিয়ে পাঁচজনকে ঠেলে দেওয়া হয়। পরে পেদিয়াগছ সীমান্ত এলাকা থেকে তাদের আটক করে বিজিবি।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরুল ইসলাম জানান, আটক ১২ জন বাংলাদেশি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বাকি ৪ জন ভারতীয় নাগরিক বলে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাদের ফেরত পাঠাতে বৈঠকের আহ্বান করা হয়েছে। বিএসএফ তাদের ভারতীয় হিসেবে পরিচয় নিশ্চিত করার পর ফেরত পাঠানো হবে।
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে এ দিন তিন ভারতীয়সহ ৬ নারী ও পুরুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএফ। ভোরে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া সীমান্ত দিয়ে তাদের ঠেলে দেওয়া হয়।
বিজিবি জানায়, ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ভারতের ১৬৯ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের রতনপুর ক্যাম্পের সদস্যরা তিন ভারতীয়সহ ৬ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয়। তারা বাংলাদেশের প্রায় দেড় কিলোমিটার অভ্যন্তরের ওই ইউনিয়নের আজিজপুর গ্রামের কমলার বাজারে ঘোরাফেরা করছিলেন। স্থানীয়রা দেখে খবর দিলে বিজিবি তাদের আটক করে।
শ্রীরামপুর বিজিবি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার নায়েব সুবেদার জুবায়ের রহমান জানান, ঠেলে দেওয়া ৬ জনকেই আবার বিজিবি ও স্থানীয়রা মিলে ভারতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। ওই ব্যক্তিরা বর্তমানে ভারতীয় একটি চা বাগানে অবস্থান করছেন।
জেলার হাতীবান্ধায় দুই সীমান্তে বিএসএফের ঠেলে দেওয়া ৩ জনকে আটক করেছে বিজিবি। আরও ৩ জন সীমান্তের শূন্যরেখায় অবস্থান করছেন।
এলাকাবাসী ও বিজিবি জানায়, উপজেলার গোতামারী ইউনিয়নের দইখাওয়া সীমান্ত দিয়ে ৩ জনকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেয় বিএসএফ। পরে বিজিবি তাদের আটক করে হাতীবান্ধা থানায় সোপর্দ করে। আটক ব্যক্তিরা ৮-১০ বছর আগে অবৈধভাবে ভারতে কাজের জন্য গিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন। তবে বড়খাতা ইউনিয়নের পূর্ব সারডুবি সীমান্তে ৩ জনকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা রুখে দেয় বিজিবি ও এলাকাবাসী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প শইন ব এসএফ উপজ ল র ব এসএফ ৩ জনক ৬ জনক
এছাড়াও পড়ুন:
তেঁতুলিয়া সীমান্তে পুশইনের সময় ভারতীয় নাগরিকসহ আটক ৩
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার পেদিয়াগঞ্জ সীমান্তে পুশইনের সময় তিনজনকে আটক করেছে বিজিবি। শনিবার সকালে পেদিয়াগঞ্জ বিওপির সদস্যরা তাদের আটক করে। তাদের একজন বাংলাদেশি ও দুইজন ভারতীয় নাগরিক।
বিজিবি জানায়, তেঁতুলিয়া পেদিয়াগঞ্জ বিওপির সীমান্তের মেইন পিলার ৪৩০/২ এস থেকে প্রায় ৭০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে গুচ্ছগ্রাম থেকে ভারতের প্রতিপক্ষ ১৩২/পুরোহিতগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা চান্দাপাড়া এলাকা থেকে বিএসএফের পুশইন করা দুইজন নারী ও একজন পুরুষকে আটক করে বিজিবির টহলদল।
আটক বাংলাদেশি হলেন কোরবান গাজী (৩৩)। তিনি যশোর জেলার শাশসা থানার বড় কলোনি গ্রামের মারফত আলীর ছেলে। ভারতীয় নাগরিকরা হলেন- মোছা. নাজমা (২৭) ও এবং মোছা. ফারজানা (২৩)। নাজমা পালঘর জেলার বুড়িগুলি থানার পোস্ট-পেলার কান্দেওয়ালি গ্রামের ইয়াসিন সরকারের মেয়ে এবং ফারজানা পালঘর জেলার ধানিউ থানার পোস্ট-পালঘাট-ভাসাই গ্রামের মারফত আলী গাজীর মেয়ে।
আটককৃত ব্যক্তিদের তেঁতুলিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।