টিকটকে যুক্ত হলো নতুন এআই টুল, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
Published: 17th, June 2025 GMT
ছোট আকারের ভিডিও সহজে তৈরি ও বিনিময়ের সুযোগ থাকায় নিয়মিত টিকটক ব্যবহার করেন অনেকেই। বিভিন্ন বিষয়ের ভিডিওর পাশাপাশি একাধিক ছবির সমন্বয়ে তৈরি স্লাইড শো বেশ জনপ্রিয় টিকটকে। আর তাই টিকটকে নিয়মিত বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে নিজেদের পণ্য ও সেবার প্রচারণা চালিয়ে থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এবার সহজে বিজ্ঞাপন তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির নতুন টুল চালু করেছে টিকটক। ছবি ও লেখাকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওতে রূপান্তর করতে সক্ষম টুলটি কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞাপনদাতারা সহজেই নিজেদের চাহিদামতো ভিডিও বিজ্ঞাপন তৈরি করতে পারবেন।
টিকটকের তথ্যমতে, নতুন টুলটি দিয়ে সহজেই ছবি বা বার্তা লিখে বিজ্ঞাপনের ভিডিও ক্লিপ তৈরি করা যাবে। শুধু তা–ই নয়, বিজ্ঞাপনে থাকা এআইনির্ভর অ্যাভাটার বিভিন্ন পণ্য হাতে নিয়ে প্রদর্শন করতে পারবে। পোশাক পরে দেখানোর পাশাপাশি স্মার্টফোনে কোনো অ্যাপ ব্যবহারের দৃশ্য তুলে ধরতে পারবে অ্যাভাটার।
গত বছর বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য এআইনির্ভর ‘টিকটক সিম্ফনি’ টুল চালু করে চিকটক। টুলটিতে ভিডিওর স্ক্রিপ্ট লেখার সহায়ক ভার্চ্যুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট, ভয়েস ডাবিং ও জেনারেটিভ অ্যাভাটার তৈরির সুবিধা থাকলেও এবার ছবি ও বার্তা থেকে ভিডিও তৈরির পাশাপাশি অ্যাভাটারের মাধ্যমে পণ্য উপস্থাপনার সুবিধা পাওয়া যাবে। এর ফলে আগের তুলনায় সহজেই টিকটকের জন্য ভালো মানের বিজ্ঞাপন তৈরি করা যাবে। সিম্ফনি ক্রিয়েটিভ স্টুডিওর মাধ্যমে নতুন টুলটি শিগগিরই বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে।
বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞাপন খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। কম সময় ও খরচে কনটেন্ট তৈরির সুবিধা থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এই প্রযুক্তি নিয়মিত ব্যবহার করছে। মেটা এরই মধ্যে বিজ্ঞাপন তৈরির প্রতিটি ধাপে এআই ব্যবহারের পরিকল্পনা করেছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় বিজ্ঞাপন নির্মাণের প্রক্রিয়া চালু করার কথা জানিয়েছে।
সূত্র: ম্যাশেবল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র র জন য ট কটক
এছাড়াও পড়ুন:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস
স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’
সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।
অনাহারে মৃত্যু ১৫৪গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।
গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।
ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।
বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।
গাজায় স্টিভ উইটকফশুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।