‘ঐক্যবদ্ধ হলে প্রশাসন বাধ্য হবে বিএনপির কথা শুনতে। হয় বিএনপির কথা শুনবে, না হয় এখান থেকে ইএনওগিরি-ওসিগিরি ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যেতে হবে। তাদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না, অনেক সুযোগ দিয়েছি। এখন আর সুযোগ দেওয়ার সময় নেই। এখন আমাদের দাবি আমাদের আদায় করে নিতে হবে।’

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও পটিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিচ মিয়ার এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। 
 
আজ মঙ্গলবার এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া। তিনি বলেন, রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে একটি কুচক্রী মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। কৌশলে মূল বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছে। স্থানীয় ইউএনও-ওসি দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো দাবি-দাওয়া ও অভিযোগ শোনেন না। তারা শোনেন জামায়াতের কথা। এবং বিএনপির পরিবর্তে জামায়াতের ইশারায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন তারা।

ইদ্রিস মিয়া আরও বলেন, ‘ওই দিন আমি নেতাকর্মীদের বলেছিলাম, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়। নিজেদের মধ্যে কোনো বিভেদ রাখা যাবে না, দলের স্বার্থে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে স্থানীয় প্রশাসন অবশ্যই আমাদের অভিযোগগুলো গুরুত্ব দেবে। মূলত আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে এভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী ও কুচক্রী মহল মিথ্যা তথ্য প্রচার করেছে। অপপ্রচার ও গুজব রটানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

ভাইরাল ভিডিওটিতে দেখা যায়, ইদ্রিচ মিয়ার পেছনে ঈদ পুনর্মিলনীর ব্যানার টাঙানো। সাতকানিয়া সাংগঠনিক ইউনিট বিএনপি লেখা রয়েছে ব্যানারে।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার বিকেলে সাতকানিয়া উপজেলা বিএনপির সব সাংগঠনিক ইউনিটের যৌথ উদ্যোগে স্থানীয় একটি কমিউনিটি হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইদ্রিচ মিয়া। 

জানতে চাইলে ইদ্রিচ মিয়া বলেন, ইউএনও-ওসিকে নিয়ে এ ধরনের কোনো বক্তব্য তিনি কোথাও দেননি। তাঁকে হেয় করার উদ্দেশ্যে ভিডিওটি বানানো হয়েছে।

গত ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে আহ্বায়ক করা হয় মো.

ইদ্রিস মিয়াকে। পরে গত ৬ মে ৫৪ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর আগে ইদ্রিস মিয়া চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সহসভাপতি ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ন ত কর ম ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি

ঠিকমতো চোখে দেখে না আট বছরের শিশু মরিয়ম। মাদ্রাসা থেকে ঘরে ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। নানা ঘটনাচক্রে একসময় পৌঁছায় কক্সবাজার সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার ( ইউএনও) কার্যালয়ে। পরে ইউএনওর সহায়তায় ঘরে ফিরেছে শিশুটি। ঘরে ফেরার আগে তার ‘লাল পরি’ সাজার ইচ্ছাপূরণও হয়েছে।

শিশু মরিয়মের বাড়ি কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় পূর্ব পোকখালী চরপাড়া গ্রামে তার বাড়ি। সেখানেই একটি মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। গত বুধবার মাদ্রাসা ছুটির পর মায়ের জন্য অপেক্ষায় ছিল সে। তবে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক ব্যক্তি তাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায় কক্সবাজার সদরে।

ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মরিয়ম কক্সবাজার পৌরসভার কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় চোখেমুখে ভয় আর আতঙ্কের ছাপ নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল। কৌতূহলী এক পথচারী কথা বলে তার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ওই পথচারী মরিয়মকে নিয়ে যান তিন কিলোমিটার দূরে উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ে। সেখান থেকে এক আনসার সদস্য মরিয়মকে ইউএনও কার্যালয়ে নিয়ে আসেন।

ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী এ সময় শিশু মরিয়মের সঙ্গে কথা বলে তার বিস্তারিত ঠিকানা জানার চেষ্টা করেন। শিশুটি কেবল তার বাড়ি ঈদগাঁওয়ের পোকখালী এতটুকুই বলতে পারছিল। পরে ঈদগাঁওয়ের ইউএনওর মাধ্যমে শিশুটির বাড়ির ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়।

কাপড় কিনে দেওয়ার সময় মরিয়ম বলল, সে লাল পরি সেজে বাড়ি ফিরবে। তাকে লাল জামা, লাল চুড়ি, লাল লিপস্টিক ও লাল ওড়না দিয়ে লাল পরি সাজানো হয়। নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী, ইউএনও, কক্সবাজার সদর উপজেলা

শিশুটি প্রথমে পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিল বলে সন্দেহ ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিনের। তিনি বলেন, আলাপে শিশুটি জানায়, সে তার তিন-চার বছর বয়স পর্যন্ত ভালোভাবেই চোখে দেখত। এরপর থেকে ক্রমে তাঁর চোখের আলো ঝাপসা হতে শুরু করে। এখন সে তেমন দেখতে পায় না। তার বাবা মারা গেছেন। মা ও বড় ভাই অন্ধ। পরিবারে অষ্টম শ্রেণিপড়ুয়া একটি বোন আছে, সে–ই কেবল চোখে দেখতে পায়। ঘরের কাজ সব বোনই সামলায়। তাদের পরিবার থাকে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

শিশুটির কাছ থেকে চোখের বিষয়টি জেনে তাকে কক্সবাজার শহরের পানবাজার এলাকার কমিউনিটি চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয় বলে জানান ইউএনও। তিনি বলেন, ‘শিশুটির সঙ্গে কথা বলে মনে হলো তার চোখের সমস্যা এত জটিল না। হাসপাতালে নেওয়ার পর চক্ষুবিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিমল চৌধুরী তার চোখের পরীক্ষা করেন। এরপর বিনা মূল্যে শিশু মরিয়মকে চশমা ও এক মাসের ওষুধ কিনে দেওয়া হয়। চশমা চোখে দিয়ে সে জানিয়েছে, আগের চেয়ে অনেক ভালো দেখতে পাচ্ছে।’

শিশুটিকে মায়ের হাতে তুলে দেন কক্সবাজার সদরের ইউএনও নিলুফা ইয়াছমিন চৌধুরী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘লাল পরি’ হয়ে ঘরে ফিরল হারিয়ে যাওয়া শিশুটি