বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ১৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
Published: 19th, June 2025 GMT
বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধে ৯০০ কোটি টাকা খরচ হবে বগুড়া অংশে। প্রকল্প অনুমোদনের ৬ বছর পর অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিউর রহমানের ১৬ জুন স্বাক্ষর করা চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বগুড়া হতে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন, সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুকূলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত অর্থ হতে মূলধন ব্যয় খাতের ‘ভূমি অধিগ্রহণ’ বাবদ অর্থ অবমুক্তকরণ হলো।
এ সম্পর্কে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, বগুড়া অংশে ভূমি অধিগ্রহণে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা চাহিদা ছিল। বরাদ্দ মিলেছে ৯০০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৮৫ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ (ব্রড গেজ ও মিটার গেজ) নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। বগুড়া জেলার সীমানায় অধিগ্রহণ করা হবে ৪৭৯ দশমিক ১৫ একর। বাকি ৪২০ দশমিক ৬৮ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হবে সিরাজগঞ্জে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতের ব্যয় হিসেবে প্রকল্পে ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি রেলপথ না থাকায় এ অঞ্চলের ট্রেনগুলো বর্তমানে সান্তাহার, নাটোর ও পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। বাড়তি পথ ঘুরতে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে, তেমনি বেশি ভাড়াও গুণতে হচ্ছে। বগুড়া থেকে যেখানে সড়কপথে ঢাকা পৌঁছাতে লাগে ৬ ঘণ্টা, সেখানে ট্রেনে যেতে লাগে ১০–১১ ঘণ্টা। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, দুই জেলার মধ্যে দূরত্ব ৭২ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ চালু হলে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ হয়ে মাত্র ৫ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় ঋণের অর্থে ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৪৬ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দেবে ভারত। শুরুতে প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু পরামর্শক নিয়োগ এবং নকশা চূড়ান্ত করা নিয়ে বিলম্বের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ৩০ জুন চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একটি হলো- বগুড়ার ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭৩ কিলোমিটার এবং অপরটি বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার। মূলত সান্তাহারের দিক থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে সান্তাহার হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরগামী ট্রেনগুলো যাতে বগুড়া স্টেশনকে এড়িয়ে সরাসরি চলাচল করতে পারে, সে জন্য কাহালু-রানীরহাট রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একটি হলো- বগুড়ার ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭৩ কিলোমিটার এবং অপরটি বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার।দুটি রেলপথ মিলিত হওয়ার কারণে বগুড়া শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে রানীরহাটে একটি জংশনও নির্মাণ করা হবে। আরেকটি জংশন হবে সিরাজগঞ্জে। এ ছাড়া নতুন রেলপথের জন্য দুই জেলায় আরও ছয়টি স্টেশন স্থাপন করা হবে। সেগুলো হলো শেরপুর, আড়িয়া বাজার, ছোনকা, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ ও কৃষ্ণদিয়া।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপাপ্ত সভাপতি সাইরুল ইসলাম বলেন, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি রেলপথ নির্মিত হলে রংপুর অঞ্চলের অন্তত আটটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। জয়পুরহাট এবং নওগাঁরও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতি হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ও ব্যবসা বাণিজ্যের চেহারা পাল্টে যাবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র লপথ ন র ম স র জগঞ জ র প রকল প র র ন রহ ট বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়া-সিরাজগঞ্জ রেল প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে ১৯০০ কোটি টাকা বরাদ্দ
বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ নির্মাণে ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধে ৯০০ কোটি টাকা খরচ হবে বগুড়া অংশে। প্রকল্প অনুমোদনের ৬ বছর পর অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব শফিউর রহমানের ১৬ জুন স্বাক্ষর করা চিঠি থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। এতে বলা হয়েছে, ‘বগুড়া হতে শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন, সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পের অনুকূলে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে বরাদ্দকৃত অর্থ হতে মূলধন ব্যয় খাতের ‘ভূমি অধিগ্রহণ’ বাবদ অর্থ অবমুক্তকরণ হলো।
এ সম্পর্কে বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) পি এম ইমরুল কায়েস বলেন, বগুড়া অংশে ভূমি অধিগ্রহণে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা চাহিদা ছিল। বরাদ্দ মিলেছে ৯০০ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৮৫ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ (ব্রড গেজ ও মিটার গেজ) নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য মোট ৯৬০ একর জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন হবে। বগুড়া জেলার সীমানায় অধিগ্রহণ করা হবে ৪৭৯ দশমিক ১৫ একর। বাকি ৪২০ দশমিক ৬৮ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হবে সিরাজগঞ্জে। ভূমি অধিগ্রহণ খাতের ব্যয় হিসেবে প্রকল্পে ১ হাজার ৯২১ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি রেলপথ না থাকায় এ অঞ্চলের ট্রেনগুলো বর্তমানে সান্তাহার, নাটোর ও পাবনার ঈশ্বরদী হয়ে প্রায় ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। বাড়তি পথ ঘুরতে একদিকে যেমন সময়ের অপচয় হচ্ছে, তেমনি বেশি ভাড়াও গুণতে হচ্ছে। বগুড়া থেকে যেখানে সড়কপথে ঢাকা পৌঁছাতে লাগে ৬ ঘণ্টা, সেখানে ট্রেনে যেতে লাগে ১০–১১ ঘণ্টা। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, দুই জেলার মধ্যে দূরত্ব ৭২ কিলোমিটার। নতুন রেলপথ চালু হলে বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ হয়ে মাত্র ৫ ঘণ্টায় ঢাকায় পৌঁছানো সম্ভব।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় ঋণের অর্থে ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রকল্পটির সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয় ৫ হাজার ৫৭৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৩ হাজার ১৪৬ কোটি ৫৯ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দেবে ভারত। শুরুতে প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু পরামর্শক নিয়োগ এবং নকশা চূড়ান্ত করা নিয়ে বিলম্বের কারণে তা সম্ভব হয়নি। ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর ভারতীয় কর্তৃপক্ষ পরামর্শক নিয়োগ দেওয়ার পর ২০২৩ সালের ৩০ জুন চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন করে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একটি হলো- বগুড়ার ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭৩ কিলোমিটার এবং অপরটি বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার। মূলত সান্তাহারের দিক থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে ছেড়ে সান্তাহার হয়ে দিনাজপুরের পার্বতীপুরগামী ট্রেনগুলো যাতে বগুড়া স্টেশনকে এড়িয়ে সরাসরি চলাচল করতে পারে, সে জন্য কাহালু-রানীরহাট রেলপথটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় ডুয়েল গেজের দুটি রেলপথ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। একটি হলো- বগুড়ার ছোট বেলাইল এলাকা থেকে সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী স্টেশন পর্যন্ত ৭৩ কিলোমিটার এবং অপরটি বগুড়ার কাহালু স্টেশন থেকে রানীরহাট পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার।দুটি রেলপথ মিলিত হওয়ার কারণে বগুড়া শহর থেকে ৮ কিলোমিটার দূরে রানীরহাটে একটি জংশনও নির্মাণ করা হবে। আরেকটি জংশন হবে সিরাজগঞ্জে। এ ছাড়া নতুন রেলপথের জন্য দুই জেলায় আরও ছয়টি স্টেশন স্থাপন করা হবে। সেগুলো হলো শেরপুর, আড়িয়া বাজার, ছোনকা, চান্দাইকোনা, রায়গঞ্জ ও কৃষ্ণদিয়া।
বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ভারপাপ্ত সভাপতি সাইরুল ইসলাম বলেন, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত সরাসরি রেলপথ নির্মিত হলে রংপুর অঞ্চলের অন্তত আটটি জেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হবে। জয়পুরহাট এবং নওগাঁরও ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যাপক উন্নতি হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের যোগাযোগ ও ব্যবসা বাণিজ্যের চেহারা পাল্টে যাবে।