চামড়ার দেশেই বছরে ১,৫০০ কোটি টাকার চামড়া আমদানি
Published: 21st, June 2025 GMT
দেশে নিজস্ব কাঁচামালনির্ভর রপ্তানিপণ্যের মধ্যে চামড়া অন্যতম। এটি দেশের দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানিপণ্য, যা এখন নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। পরিবেশ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মান নিয়ে প্রশ্ন থাকায় আন্তর্জাতিক সনদ মিলছে না। গত এক দশকে চামড়ার দাম না বেড়ে উল্টো কমেছে বলা যায়। বিদেশের বাজার সংকুচিত হয়ে আসছে। শুধু কি তাই? কাঁচা চামড়ার জন্য প্রসিদ্ধ এই দেশে এখন বিদেশ থেকে চামড়া আমদানি করতে হচ্ছে। এ জন্য বছরে ব্যয় হচ্ছে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, উন্নত দেশে জুতা রপ্তানি করতে গেলে আন্তর্জাতিক লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ থাকতে হয়; কিন্তু দেশে চামড়া প্রক্রিয়াকরণব্যবস্থা তথা সেন্ট্রাল এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি) সেই মানের না হওয়ায় এ সনদ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই নিজেদের চামড়া গুণগত মানসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও দেশের রপ্তানিমুখী জুতা কোম্পানিগুলোকে চীন, ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান প্রভৃতি দেশ থেকে চামড়াপণ্য আমদানি করতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরে দেশে ১ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকার চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য আমদানি করা হয়, যা এর আগের ২০২২–২৩ অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৫৬৩ কোটি টাকা। আর চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের অক্টোবর–মার্চ ছয় মাসে আমদানি হয়েছে প্রায় ৮ কোটি ডলার বা ৯৭৬ কোটি টাকার চামড়াপণ্য। এসব আমদানির মধ্যে রয়েছে চামড়া ও চামড়াজাত সামগ্রী, ভ্রমণব্যাগ, হাতব্যাগ, পশুর নাড়িভুঁড়ি দিয়ে তৈরি পণ্য ও ঘোড়ার সাজসজ্জার সামগ্রী ইত্যাদি।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক মো.
মো. আবু ইউসুফ বলেন, ‘দেশের ট্যানারিগুলো আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী কমপ্লায়েন্ট না হওয়ায় তাঁদের বাধ্য হয়ে বিদেশ থেকে চামড়া আমদানি করতে হয়। যদিও আমাদের দেশের চামড়া যথেষ্ট গুণগত মানসম্পন্ন। ২০১৬ সালে আমাদের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন বা ১২০ কোটি ডলারের চামড়া পণ্য রপ্তানি হতো। ১০ বছর পর রপ্তানি এখনো সেই এক বিলিয়ন ডলারের আশপাশেই রয়েছে। অথচ একই সময়ে ভিয়েতনাম এটা ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করে ফেলেছে।’
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী, দেশের অভ্যন্তরে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার বা সাড়ে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বাজার রয়েছে (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। ২০১৪ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত স্থানীয় বাজারে ৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বর্তমানে দেশের এ খাতে সাড়ে তিন হাজারের বেশি ছোট ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর চামড়া প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত আছে ২৫০টির বেশি ট্যানারি। চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনকারী বড় প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৯০টির মতো। এ খাতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৮–১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়ায় এখানে প্রতিবছর কোরবানির ঈদে কমবেশি এক কোটি পশু কোরবানি হয়। এ বছর দেশব্যাপী কোরবানি হয়েছে ৯১ লাখের বেশি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল ১ কোটি ৪ লাখ ৯ হাজার। তার আগের বছরও এক কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়েছিল। অর্থাৎ শুধু ঈদের তিন দিনেই এক কোটি চামড়া পাওয়া যায়। এর ওপর সারা বছর তো পশু জবাই হয়।
এত বেশি পরিমাণ চামড়ার জোগান থাকা সত্ত্বেও ইউরোপ–আমেরিকার বাজারে রপ্তানি করা যাচ্ছে না। ইউরোপভিত্তিক লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের (এলডব্লিউজি) সনদ না থাকায় উন্নত দেশের বাজার সংকুচিত হয়ে এসেছে। তাই বাধ্য হয়ে কম মূল্যে চীনের কাছে চামড়া রপ্তানি করতে হচ্ছে। আর সেই চামড়া চীনারা ইতালিসহ ইউরোপ, আমেরিকা ও এশিয়ার কোরিয়ার মতো বড় বড় বাজারে রপ্তানি করে সুবিধা নেয়।
দেশের মাত্র আটটি প্রতিষ্ঠানের আন্তর্জাতিক এলডব্লিউজি সনদ রয়েছে। টিকে গ্রুপের চট্টগ্রামভিত্তিক রীফ লেদার লিমিটেড ২০১৫ সালে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বর্জ৵ শোধনাগার স্থাপন করে ২০১৯ সালে এ সনদ পায়। সনদ থাকায় প্রতিষ্ঠানটি ইতালি, স্পেন, জাপান, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান ও ভারতে চামড়া রপ্তানি করতে পারছে।
রীফ লেদারের পরিচালক মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলডব্লিউজি সনদ ছাড়া ইউরোপের প্রতিষ্ঠানগুলো চামড়া নিতে চায় না। তাই যাঁরা জুতা বা ব্যাগ রপ্তানি করেন, তাঁদের বাধ্য হয়ে চামড়া আমদানি করতে হয়। সনদ থাকায় আমাদের অনেক বায়ার রয়েছে। তাই আমরা দর–কষাকষি করে প্রতি বর্গফুট চামড়া দেড় ডলারে বিক্রি করতে পারি; কিন্তু সাভারের ট্যানারিগুলো এটা পারে না। বাধ্য হয়ে তারা অর্ধেক দামে চীনের কাছে চামড়া বিক্রি করে। আরও ২০টি প্রতিষ্ঠানের যদি এলডব্লিউজি সনদ থাকত, তাহলে বিদেশ থেকে এত চামড়া আমদানি করতে হতো না। বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হতো না। আবার সিইটিপি ছাড়া এ সনদ পাওয়া যায় না।’
ট্যানারির মালিকদের সূত্রে জানা গেছে, এ বছর তাঁরা ৮৫ থেকে ৯০ লাখ চামড়া সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। গত বছর চামড়া সংগ্রহ করেছিলেন ৯৫ লাখ। তবে এবার ঈদে পশু কোরবানি কম হওয়ায় চামড়ার সংগ্রহ কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ থেকে চামড়া, চামড়াজাত পণ্য ও চামড়ার তৈরি জুতা রপ্তানি হয় এক বিলিয়ন ডলারের বেশি। তবে এতে সবেচেয়ে বেশি অবদান চামড়ার জুতার। তারপর চামড়াজাত পণ্য ও সবচেয়ে কম অবদান চামড়ার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) রপ্তানির তথ্যমতে, গত ২০২৩–২৪ অর্থবছরে চামড়া রপ্তানি হয়েছিল ১৪ কোটি ২০ লাখ ডলারের, যা এর আগের ২০২২–২৩ অর্থবছরে ছিল ১২ কোটি ৩০ লাখ ডলার। যদিও দুই অর্থবছরেই সার্বিক চামড়াপণ্যের রপ্তানি ছিল এক বিলিয়ন ডলারের বেশি।
চামড়ার রপ্তানি বৃদ্ধি ও স্থানীয় বাজারে কাঁচা চামড়ার মূল্য বাড়াতে করণীয় কী জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) নির্বাহী পরিচালক মো. আবু ইউসুফ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজার বাড়ানো না গেলে চামড়ার চাহিদা বাড়বে না। এ জন্য কমপ্লায়েন্সের বিকল্প নেই। তাই এখন একটি বিগ পুশ (বড় ধাক্কা) প্রয়োজন। বিসিক থেকে বের হয় চামড়া উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করতে হবে। চামড়া খাতে যোগ্য অভিভাবক দরকার।’
এলডব্লিউজির তথ্য বলছে, এখন পর্যন্ত ভারতের ৩৩৭টি, চীনের ২৬৯টি, পাকিস্তানের ৬২টি, তাইওয়ানের ২৪টি, ভিয়েতনামের ২৭টি আর বাংলাদেশের মাত্র ৮টি প্রতিষ্ঠান এলডব্লিউজি সনদ পেয়েছে।
সিইটিপিসহ সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বিসিকের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সিইটিপির সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছি। নতুন করে সাত–আটটি প্রতিষ্ঠানকে নিজস্ব ইটিপি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। এতে তারা ১০ হাজার কিউবিক মিটার বর্জ্য নিজেরাই পরিশোধন করতে পারবে। আর আমরা বিদ্যমান সিইটিপির সক্ষমতা ১৫ হাজার কিউবেক মিটার থেকে ২৫ হাজার মিটার করার জন্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে বাজেট চেয়েছি। এটা করা গেলে সক্ষমতা দাঁড়াবে ৩৫ হাজার কিউবিক মিটারে, যা দিয়ে পিক সময়ে চাহিদা মেটানো যাবে। তা ছাড়া ইউরোপীয় অর্থায়নে ইতালি একটি জরিপ করছে। এক বছরের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবে। বিদ্যমান সক্ষমতা বৃদ্ধি কিংবা নতুন সিইটিপি করার বিষয়ে তাদের প্রতিবেদনের আলোকে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সিইটিপির বর্তমান পরিস্থিতির জন্য কারও গাফিলতি কিংবা দায় আছে কি না, তা দেখার জন্য একটি কমিটি তদন্ত করছে বলেও জানান সিইটিপির তদারকি সংস্থার এ কর্মকর্তা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম আল ক স ইট প র ব ধ য হয় সনদ থ ক ক রব ন র জন য ইউর প হওয় য় সনদ প আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে আয় বাড়াতে চায় সরকার
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি আয় করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার। আয় বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। ৯১টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটের সংক্ষিপ্তসার থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগ প্রকাশিত এই বাজেট সংক্ষিপ্তসার অনুসারে, আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬০ কোটি টাকা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ লাখ ১৮ হাজার ৫২২ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৫ লাখ ১০ হাজার ৩৩১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। অর্থাৎ চলতি মূল বাজেটের চেয়ে আগামী অর্থবছর এ খাতে বাড়তি প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা আয় করতে চায় সরকার।
আয় বাড়ার পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয়ের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ৪ লাখ ৮৬ হাজার ২৩৫ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এ খাতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪ লাখ ৭১ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে কমিয়ে আনা হয় ৪ লাখ ৪৪ হাজার ২৩৫ কোটি টাকায়।
আয় থেকে ব্যয় বাদ দিয়ে আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৬৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত থাকবে বলে প্রত্যাশা করছে সরকার। বিপরীতে আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগ ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে বিনিয়োগ ধরা হয় ৩৩ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে প্রায় দ্বিগুণ ধরা হয়েছে।
আগামী অর্থবছরের বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ৪৪ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধারা হয় ৪১ হাজার ৩৬২ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরকারি কোষাগারে মোট কী পরিমাণ অবদান রাখবে তারও একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সরকারি কোষাগারে মোট ৪৯ হাজার ৯১৯ কোটি টাকা জমা হবে বলে আশা করছে সরকার। এর মধ্যে উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে ৩ হাজার ৮৮৭ কোটি টাকা মিলবে। এছাড়া লভ্যাংশ বাবদ এক হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে ৪৬ হাজার ৩২১ কোটি টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
এ সম্পর্কিত বাজেট ডকুমেন্টে বলা হয়, বাংলাদেশের অ-আর্থিক রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনীতিতে বহুমাত্রিকভাবে অবদান রেখে চলেছে। এ সব প্রতিষ্ঠান শিল্প, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, কৃষি, পরিবহন খাতসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ খাতে সরকারকে সহায়তা করে থাকে। এদের মাধ্যমে সরকার মৌলিক সেবা ও পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে, যা সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়ক। রাষ্ট্রায়ত্ত অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কৌশলগত খাতের নিয়ন্ত্রণ এবং দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এতে বলা হয়, সংস্থাগুলো হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং আঞ্চলিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে অবদান রাখে। যদিও কিছু প্রতিষ্ঠান লোকসানে পরিচালিত হচ্ছে। এ লক্ষ্যে সরকার দক্ষ ব্যবস্থাপনা, আর্থিক সংস্কার ও স্বচ্ছতা বাড়ানোর মাধ্যমে এসব প্রতিষ্ঠানকে লাভজনক ও টেকসই করতে উদ্যোগ নিচ্ছে। সার্বিকভাবে, রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণে একটি অপরিহার্য অংশীদার। অর্থবিভাগ থেকে প্রতিবছর রাষ্ট্রায়ত্ত অ-আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজেট প্রকাশ করা হয়। এ ধারাবাহিকতায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন অ-আর্থিক ৯১টি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের (৭২টি এসএবিআরই প্লাস শীর্ষক অনলাইন ডেটাবেজের আওতায়, ১৯টি অফলাইন) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক্কলিত বাজেট এবং ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট প্রস্তুত করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের আয় বাড়ানোর জন্য অপচয় কমানোর পাশাপাশি ব্যয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিতের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার। এ জন্য এতদিন প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মতো ব্যয় করে এলেও এবারই প্রথম ৭২টি প্রতিষ্ঠানকে এসএবিআরইপ্লাস শীর্ষক অনলাইন ডেটাবেজের আওতায় এনে ব্যয়ের বিষয়টি সরকারের নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে।