গত মাসে নিজেদের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ভার্চ্যুয়াল সহকারী সেবা ‘মেটা এআই’–এর অ্যাপ উন্মুক্ত করেছে মেটা। মেটা এআই নামের অ্যাপটি চালুর ফলে হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও মেসেঞ্জার ছাড়াও যেকোনো কাজে মেটার ভার্চ্যুয়াল সহকারী সেবা সহজেই ব্যবহার করা যায়। তবে মেটা এআই অ্যাপ নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, অ্যাপটিতে ব্যক্তিগত আলাপচারিতা, ছবি বা ভার্চ্যুয়াল সহকারীকে করা নানা প্রশ্ন গোপনে ‘ডিসকভার ফিডে’ প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। যদিও মেটার দাবি, ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া কোনো তথ্য জনসমক্ষে আসে না।

মেটা এআই অ্যাপে ব্যবহারকারীরা প্রশ্ন করার পাশাপাশি ছবি আপলোড করে তা এআই দিয়ে পরিবর্তন করতে পারছেন। কেউ কার্টুন বানাচ্ছেন, কেউ ছবি। কিন্তু ব্যবহারকারীদের অনেকে না বুঝেই ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি এমনভাবে শেয়ার করছেন, যা অ্যাপে দৃশ্যমান হয়ে পড়ছে সবার জন্য। এ বিষয়ে মেটা জানিয়েছে, ব্যবহারকারীর চ্যাট বা ছবি শুধু তখনই ডিসকভার ফিডে দেখা যায়, যখন তিনি নিজে ‘শেয়ার’ বা ‘পাবলিশ’ বাটনে প্রেস করেন। অবশ্য অ্যাপের ইন্টারফেস ও শেয়ার পদ্ধতি এতটাই অস্পষ্ট যে অনেকেই বুঝতে পারছেন না, কীভাবে তাদের তথ্য জনসমক্ষে চলে যাচ্ছে।

মেটা এআই অ্যাপে চ্যাটের পাশে থাকা ‘শেয়ার’ বাটনে প্রেস করলে একটি প্রিভিউ স্ক্রিন আসে। সেখানে একটি ছোট নোটে লেখা থাকে, ‘আপনার প্রম্পট প্রকাশ্যে দৃশ্যমান হবে।’ তবে সেখানে কোথায় এবং কারা এটি দেখতে পাবে, তা স্পষ্ট করে বলা হয় না। ফলে কেউ কেউ না বুঝেই ব্যক্তিগত প্রশ্ন, বার্তা কিংবা ছবি ফিডে প্রকাশ করে ফেলছেন। ডিসকভার ফিড ঘেঁটে দেখা গেছে, সেখানে ব্যক্তিগত আলাপ, রূপচর্চার টিপস, দাম্পত্য সম্পর্ক–সংক্রান্ত প্রশ্ন, এমনকি হাস্যকর কথাবার্তাও স্থান পেয়েছে।

মেটার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ব্যবহারকারী শুধু শেয়ার বা পাবলিশ বোতামে চাপ দিলেই চ্যাট কনটেন্ট ডিসকভার ফিডে প্রকাশিত হয়। যদিও এই ব্যাখ্যা প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের কাছে যথেষ্ট নয়। তাঁদের মতে, অ্যাপটির শেয়ারিং প্রক্রিয়া যথেষ্ট স্বচ্ছ নয়। সতর্কবার্তাটি ছোট ও অস্পষ্ট হওয়ায় অনেকেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড সকভ র ফ ড এআই অ য প ব যবহ র প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত, তবে বাতিলের দাবিতে অনড় শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়। সেখানে বলা হয়, রোববার এ নিয়ে জরুরি সিন্ডিকেট সভার আহ্বান করা হয়েছে।

বিকেল থেকে শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের মুখে এ সিদ্ধান্ত নিল প্রশাসন। তবে এ সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি শিক্ষার্থীরা। তাঁরা উপাচার্যের নির্বাহী ক্ষমতাবলে এ সিদ্ধান্ত বাতিল ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন। রাত দেড়টার দিকেও শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করে বিক্ষোভ করছিলেন। এটি না হলে আন্দোলন চলবে বলেও তারা জানান।

রাত পৌনে ১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে প্রশাসনের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক পরিস্থিতিতে রবিবার ২১ সেপ্টেম্বর জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে।'

শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবনের সামনে তাঁদের অবস্থান ত্যাগ করেন। এতে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক প্রায় সাত ঘণ্টা পর অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি পান।

এর আগে শনিবার বেলা তিনটার দিকে সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রশাসনিক ভবন থেকে বের হলে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীরা তাঁর গাড়ি আটকে দেন। পরে তিনি হেঁটে তাঁর বাসভবনের দিকে যেতে থাকেন। শিক্ষার্থীরা তাঁর বাসভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দিলে তিনি জুবেরী ভবনের দিকে যান। তাঁর সঙ্গে প্রক্টর মাহবুবর রহমানও ছিলেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিক থেকে জুবেরী ভবনে সহ-উপাচার্য মাঈন উদ্দীনসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা।

এমন পরিস্থিতিতে শনিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সহ-উপাচার্যসহ অন্য শিক্ষকদের ‘লাঞ্ছিত’ করার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রোববার কর্মবিরতির ডাক দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি আবদুল আলিম। সিনেট ভবনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীও কর্মবিরতিতে থাকবেন বলে উল্লেখ করেন।

এরপর রাত সোয়া ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা জুবেরী ভবন ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডসংলগ্ন উপাচার্য সালেহ হাসান নকীবের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন। বিপুল সংখ্যক ছাত্রীও বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, পোষ্য কোটা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করবেন। পোষ্য কোটার বিলুপ্তি করেই তাঁরা ফিরবেন।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও উপাচার্য সালেহ হাসান নকীব ফোন ধরেননি। তবে রাত সাড়ে ১১টার দিকে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা খুবই ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। কিন্তু এভাবে জিম্মি করে আটকে রেখে সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আজকে তারা যা করল, এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রাকসু নির্বাচন হবে কি না, এটা শিক্ষার্থীদের আচরণের ওপর নির্ভর করবে। তবে আমি রাকসু নির্বাচন নিয়ে খুবই সিরিয়াস।’

আরও পড়ুনএবার উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ