ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ আচমকাই ভারতের জোড়া দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক চিন্তা অর্থনীতি ঘিরে, অন্য চিন্তা ভূরাজনৈতিক প্রবাহ। দ্বিতীয় এই চিন্তা আগামী দিনে কীভাবে কোন দিকে বাঁক নিতে পারে, এখনই সেই আন্দাজ ভারতের নেই।

প্রাথমিক চিন্তা অবশ্যই অর্থনৈতিক। যুদ্ধের প্রভাব ইতিমধ্যেই ভারতের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেছে। বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে গেছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এবং সেই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়লে তার অভিঘাত নিয়ে গোটা দুনিয়া চিন্তিত। চিন্তিত ভারতও। সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মোকাবিলায় তাই এখন থেকেই বহুস্তরীয় বিকল্পের সন্ধান শুরু করেছে ভারত।

ভারতেরও প্রাথমিক চিন্তা হরমুজ প্রণালি নিয়ে। যুদ্ধে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইরান এই প্রণালি বন্ধে উদ্যোগী হলে ভারতে জ্বালানিসংকট তীব্র হয়ে উঠবে। বিকল্প উপায়ের খোঁজে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সক্রিয়।

পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন জাহাজ সংস্থা ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। উদ্দেশ্য, বিকল্প উপায়গুলো আগে থেকে চিহ্নিত করে রাখা।

বিশ্ববাজার থেকে ভারত যত অপরিশোধিত তেল আমদানি করে, তার দুই–তৃতীয়াংশ আসে হরমুজ প্রণালি দিয়ে। এই সমুদ্রপথ বন্ধের হুমকি ইরান ইতিমধ্যেই দিয়ে রাখলেও এখনো তা বাস্তবায়ন করেনি। যদি তা করতে তারা বাধ্য হয়, তা হলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী।

সেই অনাগত ভবিষ্যতের মোকাবিলায় বাণিজ্যসচিব বিভিন্ন জাহাজ ও পণ্য পরিবহনকারী সংস্থা এবং আমদানিকারকদের বৈঠক ডাকেন। পরিস্থিতি ঘোরাল ও জটিল হয়ে গেলে বাণিজ্যের স্বার্থ স্বাভাবিক রাখার বিকল্প উপায় নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনা হয়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো থেকে তেল আমদানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়। জ্বালানির জোগান নিয়ে জাহাজ মন্ত্রণালয়ের চিন্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক চাপের মোকাবিলা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহল সক্রিয়।

ইসরায়েল ও ইরান যুযুধান দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উদ্বৃত্ত। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইসরায়েলে ভারত রপ্তানি করেছে ২১০ কোটি ডলারের পণ্য, আমদানি করেছে ১৬০ কোটি। ইরানে রপ্তানি করেছে ১৪০ কোটি ডলার, আমদানি ৪৪ কোটি।

ইরান থেকে ভারত সরাসরি তেল আমদানি করে না। কিন্তু দুই–তৃতীয়াংশ অপরিশোধিত তেল হরমুজ প্রণালি হয়ে আসে বলে ভারত চিন্তিত। এই প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হলে সব ধরনের খরচ বেড়ে যাবে। তেলের দাম ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বমুখী। যাত্রা পথে বাধা সৃষ্টি হলে বেড়ে যাবে পরিবহন ও বিমা খরচ।

ভারত থেকে ইরানে যায় বাসমতী চাল ও চা। চাল রপ্তানি হয় ৬ হাজার কোটি রুপির, চা ৭০০ কোটির। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের শঙ্কা, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এই রপ্তানির পরিমাণ অর্ধেক হয়ে যেতে পারে।

ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের নতুন শঙ্কা সৃষ্টি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আচমকা আমন্ত্রণ জানানো, হোয়াইট হাউসে তাঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ, সেই সাক্ষাতের জন্য নিজেকে ‘সম্মানিত’ বোধ করা–জাতীয় মন্তব্য ভারতকে ভাবিয়ে তুলেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের একাংশের ধারণা, ইসরায়েলের ইরান আক্রমণের ছক যুক্তরাষ্ট্রের আগেভাগে জানা থাকলেও ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের অনুমান তারা করতে পারেনি। হুট করে সেই সংঘাত বেধে যাওয়ায় তা থামাতে ট্রাম্প উঠেপড়ে লাগেন। তিনি বুঝেছিলেন, এই সংঘাত না থামালে ইরান নিয়ে তাঁদের ‘ব্লু প্রিন্ট’ কার্যকর হবে না।

ভারতের ধারণা, মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো ও সম্মানের সঙ্গে আপ্যায়ন করা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ‘ইরান নীতি’ বাস্তবায়নেরই অঙ্গ। ইসরায়েলের হয়ে এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানকে পাশে পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের চেয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ওপর ভরসা রাখা বেশি জরুরি বলে ট্রাম্প মনে করেছেন। তাই জেনারেল মুনিরকে এত খাতির।

এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো সেনাপ্রধানকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আমন্ত্রণ জানালেন ও বৈঠকে বসলেন, যিনি রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী নন। যুক্তরাষ্ট্রের চোখে পাকিস্তানি রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের অবস্থান এ মুহূর্তে কোথায়, জেনারেল মুনিরকে তোয়াজের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা ভালোই বুঝিয়ে দিলেন।
ভারতের প্রতিরক্ষাসচিব রাজেশকুমার সিং বিষয়টি পাকিস্তানের পক্ষে ‘অস্বস্তিকর’ মন্তব্য করে বলেছেন, এ এক অদ্ভুত ঘটনা। প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে সেনাপ্রধানকে আমন্ত্রিত করা বিস্ময়জনকভাবে অস্বস্তিকর।

শাহবাজ শরিফের পক্ষে যা অস্বস্তিকর, নরেন্দ্র মোদির ভারতের কাছে তা চিন্তার। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণ বুঝিয়ে দিচ্ছে, ইরান–নীতি ফলপ্রসূ করতে পাকিস্তানের সাহচর্য তাদের কতটা প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন ‘আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের’ বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে খাটো করে দেবে। সন্ত্রাসবাদ ও তাতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মদদ নিয়ে ভারতীয় বয়ানের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে। ভূরাজনীতির ক্যানভাস নতুনভাবে আঁকা হবে।

এই আবহে চীনে যাচ্ছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি চীনের কিংদাও শহরে যাচ্ছেন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে। ২৫ থেকে ২৭ জুন ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও। পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে ২০২০ সালের জুনে ভারত-চীন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এই প্রথম ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চীন যাচ্ছেন। সেই অবসরে রাশিয়া ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে রাজনাথ আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র আমন ত র ইসর য় ল র জন ত ব কল প ম ন রক আমদ ন রকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের মধ্যে ভারতের জোড়া দুশ্চিন্তা

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ আচমকাই ভারতের জোড়া দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রাথমিক চিন্তা অর্থনীতি ঘিরে, অন্য চিন্তা ভূরাজনৈতিক প্রবাহ। দ্বিতীয় এই চিন্তা আগামী দিনে কীভাবে কোন দিকে বাঁক নিতে পারে, এখনই সেই আন্দাজ ভারতের নেই।

প্রাথমিক চিন্তা অবশ্যই অর্থনৈতিক। যুদ্ধের প্রভাব ইতিমধ্যেই ভারতের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি করেছে। বৈশ্বিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে গেছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এবং সেই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি জড়িয়ে পড়লে তার অভিঘাত নিয়ে গোটা দুনিয়া চিন্তিত। চিন্তিত ভারতও। সম্ভাব্য অর্থনৈতিক মোকাবিলায় তাই এখন থেকেই বহুস্তরীয় বিকল্পের সন্ধান শুরু করেছে ভারত।

ভারতেরও প্রাথমিক চিন্তা হরমুজ প্রণালি নিয়ে। যুদ্ধে কোণঠাসা হয়ে পড়ে ইরান এই প্রণালি বন্ধে উদ্যোগী হলে ভারতে জ্বালানিসংকট তীব্র হয়ে উঠবে। বিকল্প উপায়ের খোঁজে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সক্রিয়।

পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনীল বার্থওয়াল গতকাল শুক্রবার বিভিন্ন জাহাজ সংস্থা ও রপ্তানিকারকদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। উদ্দেশ্য, বিকল্প উপায়গুলো আগে থেকে চিহ্নিত করে রাখা।

বিশ্ববাজার থেকে ভারত যত অপরিশোধিত তেল আমদানি করে, তার দুই–তৃতীয়াংশ আসে হরমুজ প্রণালি দিয়ে। এই সমুদ্রপথ বন্ধের হুমকি ইরান ইতিমধ্যেই দিয়ে রাখলেও এখনো তা বাস্তবায়ন করেনি। যদি তা করতে তারা বাধ্য হয়, তা হলে বিপর্যয় অবশ্যম্ভাবী।

সেই অনাগত ভবিষ্যতের মোকাবিলায় বাণিজ্যসচিব বিভিন্ন জাহাজ ও পণ্য পরিবহনকারী সংস্থা এবং আমদানিকারকদের বৈঠক ডাকেন। পরিস্থিতি ঘোরাল ও জটিল হয়ে গেলে বাণিজ্যের স্বার্থ স্বাভাবিক রাখার বিকল্প উপায় নিয়ে সেই বৈঠকে আলোচনা হয়। পশ্চিম আফ্রিকার দেশগুলো থেকে তেল আমদানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়েও কথা হয়। জ্বালানির জোগান নিয়ে জাহাজ মন্ত্রণালয়ের চিন্তার পাশাপাশি অর্থনৈতিক চাপের মোকাবিলা নিয়ে সরকারের বিভিন্ন মহল সক্রিয়।

ইসরায়েল ও ইরান যুযুধান দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উদ্বৃত্ত। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ইসরায়েলে ভারত রপ্তানি করেছে ২১০ কোটি ডলারের পণ্য, আমদানি করেছে ১৬০ কোটি। ইরানে রপ্তানি করেছে ১৪০ কোটি ডলার, আমদানি ৪৪ কোটি।

ইরান থেকে ভারত সরাসরি তেল আমদানি করে না। কিন্তু দুই–তৃতীয়াংশ অপরিশোধিত তেল হরমুজ প্রণালি হয়ে আসে বলে ভারত চিন্তিত। এই প্রণালি দিয়ে জাহাজ চলাচল বিঘ্নিত হলে সব ধরনের খরচ বেড়ে যাবে। তেলের দাম ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বমুখী। যাত্রা পথে বাধা সৃষ্টি হলে বেড়ে যাবে পরিবহন ও বিমা খরচ।

ভারত থেকে ইরানে যায় বাসমতী চাল ও চা। চাল রপ্তানি হয় ৬ হাজার কোটি রুপির, চা ৭০০ কোটির। ভারতীয় রপ্তানিকারকদের শঙ্কা, যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে এই রপ্তানির পরিমাণ অর্ধেক হয়ে যেতে পারে।

ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের নতুন শঙ্কা সৃষ্টি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বয়ং। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরকে আচমকা আমন্ত্রণ জানানো, হোয়াইট হাউসে তাঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ, সেই সাক্ষাতের জন্য নিজেকে ‘সম্মানিত’ বোধ করা–জাতীয় মন্তব্য ভারতকে ভাবিয়ে তুলেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নীতিনির্ধারকদের একাংশের ধারণা, ইসরায়েলের ইরান আক্রমণের ছক যুক্তরাষ্ট্রের আগেভাগে জানা থাকলেও ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের অনুমান তারা করতে পারেনি। হুট করে সেই সংঘাত বেধে যাওয়ায় তা থামাতে ট্রাম্প উঠেপড়ে লাগেন। তিনি বুঝেছিলেন, এই সংঘাত না থামালে ইরান নিয়ে তাঁদের ‘ব্লু প্রিন্ট’ কার্যকর হবে না।

ভারতের ধারণা, মুনিরকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানানো ও সম্মানের সঙ্গে আপ্যায়ন করা যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক ‘ইরান নীতি’ বাস্তবায়নেরই অঙ্গ। ইসরায়েলের হয়ে এই যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়লে পাকিস্তানকে পাশে পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন। সে ক্ষেত্রে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারের চেয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের ওপর ভরসা রাখা বেশি জরুরি বলে ট্রাম্প মনে করেছেন। তাই জেনারেল মুনিরকে এত খাতির।

এই প্রথম পাকিস্তানের কোনো সেনাপ্রধানকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট আমন্ত্রণ জানালেন ও বৈঠকে বসলেন, যিনি রাজনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী নন। যুক্তরাষ্ট্রের চোখে পাকিস্তানি রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের অবস্থান এ মুহূর্তে কোথায়, জেনারেল মুনিরকে তোয়াজের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তা ভালোই বুঝিয়ে দিলেন।
ভারতের প্রতিরক্ষাসচিব রাজেশকুমার সিং বিষয়টি পাকিস্তানের পক্ষে ‘অস্বস্তিকর’ মন্তব্য করে বলেছেন, এ এক অদ্ভুত ঘটনা। প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে সেনাপ্রধানকে আমন্ত্রিত করা বিস্ময়জনকভাবে অস্বস্তিকর।

শাহবাজ শরিফের পক্ষে যা অস্বস্তিকর, নরেন্দ্র মোদির ভারতের কাছে তা চিন্তার। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের এই আচরণ বুঝিয়ে দিচ্ছে, ইরান–নীতি ফলপ্রসূ করতে পাকিস্তানের সাহচর্য তাদের কতটা প্রয়োজন। সেই প্রয়োজন ‘আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের’ বিরুদ্ধে ভারতের লড়াইকে খাটো করে দেবে। সন্ত্রাসবাদ ও তাতে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় মদদ নিয়ে ভারতীয় বয়ানের গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে। ভূরাজনীতির ক্যানভাস নতুনভাবে আঁকা হবে।

এই আবহে চীনে যাচ্ছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি চীনের কিংদাও শহরে যাচ্ছেন সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সম্মেলনে যোগ দিতে। ২৫ থেকে ২৭ জুন ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও। পূর্ব লাদাখের গলওয়ানে ২০২০ সালের জুনে ভারত-চীন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর এই প্রথম ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী চীন যাচ্ছেন। সেই অবসরে রাশিয়া ও চীনের প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের সঙ্গে রাজনাথ আলাদাভাবে বৈঠক করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ