তরুণ লেখকদের নিয়ে চন্দ্রিমায় সাহিত্য আড্ডা
Published: 21st, June 2025 GMT
নির্জন দুপুর পেরিয়ে বৃষ্টিস্নাত বিকেলে চন্দ্রিমা উদ্যানে জমে উঠেছিল তারুণ্যের এক অনন্য মিলনমেলা। নগরের ব্যস্ততার বাইরে সবুজ ছায়াঘেরা পরিবেশে, বকুল গাছের তলায় বসেছিল তরুণ লেখকদের বৈঠক।
শুক্রবার (২০ জুন) বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম (বিটিসিএলএফ) এর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ঢাকাস্থ সদস্যদের ‘ইছামতী টিম’ আয়োজন করে এই দ্বি-মাসিক সাহিত্য আড্ডার।
সাহিত্য আড্ডায় অংশ নেন সংগঠনের নিয়মিত সদস্য ও আমন্ত্রিত তরুণ লেখকরা। আড্ডার শুরুতে পরিচয়পর্ব এবং লেখালেখি সংক্রান্ত আপডেট বিনিময়ের মধ্য দিয়ে জমে ওঠে আলোচনা।
আরো পড়ুন:
‘পার’ এর সাহিত্য আলোচনা-‘বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি; শিল্পী, লেখকদের
‘একবার নারী হন, হে প্রভু’
এরপর শাখার উপদেষ্টা লাইজু আক্তার ‘কেন লেখালেখি করব’ শীর্ষক একটি প্রাঞ্জল, অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা উপস্থাপন করেন, যা তরুণদের ভাবনায় জাগায় নতুন ঢেউ।
আড্ডায় জাপানি কথাসাহিত্যিক হারুকি মুরাকামির জনপ্রিয় উপন্যাস ‘South of the Border, West of the Sun’ বইটি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। উপন্যাসের চরিত্র, প্রেক্ষাপট ও লেখকের স্টাইল নিয়ে চলে গভীর বিশ্লেষণ।
এই আড্ডা শুধুই সাহিত্যচর্চার পরিসর নয় বরং আত্মপ্রকাশ ও বিকাশের একটি প্রাণবন্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও কাজ করছে। একে অন্যের পাশে দাঁড়িয়ে মত প্রকাশ, সহমর্মিতা ও বন্ধুত্বের বন্ধন গড়ে তোলার এমন প্রয়াস তরুণদের আত্মবিশ্বাস জোগাচ্ছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক তানজিদ শুভ্র বলেন, “আমাদের সাহিত্য আড্ডাগুলো তরুণদের জন্য এমন একটি জায়গা তৈরি করছে, যেখানে তারা নতুন ভাবনা ও মতামত তুলে ধরতে পারে নির্ভয়ে। এখানে সবাই সহযাত্রী। আমরা চাই, লেখালেখি তাদের জীবনের অভ্যাস হয়ে উঠুক।”
আড্ডার একপর্যায়ে সদস্যদের মাঝে বই বিনিময় হয়, যা পাঠাভ্যাস তৈরিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। এ সময় বিগত সময়ের ‘মাসিক সেরা লেখক’ হিসেবে মোসা.
উপদেষ্টা লাইজু আক্তার বলেন, “লেখার পাশাপাশি গঠনমূলক মতামত ও বই বিনিময়ের যে সংস্কৃতি এখানে গড়ে উঠছে, তা তরুণদের সাহিত্যপথে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।”
ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ঢাকায় প্রতি দুই মাস অন্তর এবং চট্টগ্রামে প্রতি মাসে এ ধরনের সাহিত্য আড্ডা আয়োজন করা হয়। এছাড়া ফেনী, বরিশাল ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে সদস্যরাও নিয়মিত সাহিত্যচর্চা অব্যাহত রেখেছে। ভবিষ্যতে আরো বিস্তৃত পরিসরে, আন্তঃশাখা সাহিত্য আয়োজনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
ঢাকা/শুভ্র/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে আগুনে পুড়ল ১১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান
নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার সেবারহাটে একটি আসবাবপত্র তৈরির কারখানা, গোডাউনসহ ১১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আগুনে পুড়ে গেছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সেনবাগ, চৌমুহনী ও মাইজদীর পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হয়।
ফায়ার সার্ভিস ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেবারহাট বাজারে ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কের পাশের একটি কাঠের আসবাবপত্র তৈরির কারখানা থেকে এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। এরপর আশপাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
শুরুতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও আশপাশের এলাকার হাজারো মানুষ আগুন নেভাতে এগিয়ে যান। পরে খবর পেয়ে রাত পৌনে একটার দিকে সেনবাগ ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভাতে শুরু করে। কিন্তু তখন আগুনের ভয়াবহতা বাড়ায় বেগমগঞ্জের চৌমুহনী ও জেলা শহর মাইজদী ফায়ার স্টেশন থেকে আরও তিনটি ইউনিট এসে কাজে যুক্ত হয়। সকাল সাতটায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সেবারহাট বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি বাহার উল্যাহ আজ রোববার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আগুনে আসবাবপত্র তৈরির কারখানা, মেশিনারিজ সামগ্রী, থাই অ্যালুমিনিয়াম পণ্য বিক্রির দোকানসহ কমপক্ষে ১১টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আগুনে ব্যবসায়ীদের ৩০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
ফায়ার সার্ভিসের সেনবাগ স্টেশনের পরিদর্শক বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী আসবাবপত্র তৈরির কারখানার বয়লার থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে তদন্ত ছাড়া প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।