দুর্লভ ও বিরল পাখির খোঁজে ১১ জানুয়ারি ২০২৫ রাতে হাজারিখিল বন্য প্রাণী অভয়ারণ্যের উদ্দেশে ফটিকছড়ির বাসে চড়লাম। সকালে হাজারিখিল পৌঁছে দ্রুত গাইড নাহিদুল ইসলামের গেস্টহাউসে নাশতা সারলাম। এরপর পাখির খোঁজে বেরিয়ে পড়লাম। পাক্কা দুই ঘণ্টা ঘোরাঘুরি করে একটি নতুন ও একটি দুর্লভ পাখিসহ ১৮ প্রজাতির পাখির ছবি তুললাম। এরপর পাহাড়ের দিকে এগিয়ে গেলাম।
পাহাড়টি মোটামুটি উঁচু। কয়েক বছর আগে পরিচিত একজন পক্ষী আলোকচিত্রী এখান থেকে পা পিছলে পড়ে ব্যথা পেয়েছিলেন। পা ঠিক হতে বেশ সময় লেগেছিল। আমার হাঁটুতে সমস্যা, তাই পাহাড়ে উঠতে ভয় লাগছিল। কিন্তু নতুন পাখি পাওয়ার আশা এবং সঙ্গী ইমরুল হাসান ও ডা.
প্রায় ৫০ মিনিট হাঁটার পর চমৎকার এক জায়গায় এসে পৌঁছালাম। পাহাড়টি এখানে বেশ খাড়া। নাহিদ আমাকে ফোল্ডিং টুল পেতে বসতে বলে তামাটে লাল দুর্লভ পাখিটি খোঁজা শুরু করল। কয়েক দিন ধরে এখানেই ওটিকে দেখা যাচ্ছে। পাখিটি আমাদের তিনজনের জন্যই নতুন। মাত্র সাত মিনিট খোঁজার পর একটি স্ত্রী পাখিকে সেগুনপাতার আড়ালে পোকামাকড় খুঁজে বেড়াতে দেখা গেল। ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডে ১৯টি ক্লিক করলাম। এরপর হঠাৎ সেটি উড়ে গেল।
খানিকক্ষণ পর অতি সুন্দর এক নতুন পাখির দেখা মিলল। ওটির ছবি তুলে পাহাড়ের আরও ওপরে উঠতেই দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটে আবারও তামাটে লাল পাখিটিকে দেখা গেল। এবার ৯ মিনিট সময় দিল। পাহাড়ের একবারে চূড়ায় ১ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পাখি খুঁজে ফিরতি পথে কিছুটা নামতেই আমাদের মাথার ঠিক ওপরে আবার ওটির দেখা পেলাম। কিন্তু লতাগুল্মের আড়ালে থাকায় কাছে পেয়েও ভালো ছবি তোলা গেল না। সর্বশেষ বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে শেষবারের মতো দেখলাম আকাশমণিগাছের বাকলের ভেতর থেকে রস খেতে। এবার খোলা জায়গায় পেয়ে কিছু ভালো ছবি তোলা গেল, তবে পাখিটি বেশ উঁচুতে ছিল। আড়াই মিনিটে ৪৯টি ছবি তুলে পাহাড় থেকে নামা শুরু করলাম।
অভয়ারণ্যের পাহাড়ে লাগানো আকাশমণিগাছের রস খেতে ব্যস্ত রাঙা বউউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লোকসানে বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ বন্ধ
বগুড়ার ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ লোকসানের কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গত শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) থেকে সিনেপ্লেক্সটি বন্ধ রাখা হয়েছে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিনেপ্লেক্সটির স্বত্বাধিকারী রোকনুজ্জামান ইউনূস রুবেল সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে এটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ এবং বন্ধের কারণ জানান।
আরো পড়ুন:
কাজাখস্তানে আফরান নিশোর ‘দম’
আশির দশকের বাংলা সিনেমা ও সিনেমাকেন্দ্রিক সমাজ
রোকনুজ্জামান ইউনূস বলেন, ‘‘সিনেপ্লেক্স চালাতে গিয়ে সব মিলিয়ে মাসে প্রায় তিন লাখ টাকার মতো খরচ হচ্ছে। কিন্তু সেটা তুলতে পারছি না দর্শকদের টানতে পারবে এমন সিনেমার অভাবে। 'তাণ্ডব’ সিনেমার পর আর কোনো ব্যবসা সফল সিনেমা আসেনি। অনেক ছবি মুক্তি পেলেও দর্শকের সাড়া মেলেনি। আমাদের দেশের সিনেমা ঈদ ছাড়া দর্শক টানতে পারছে না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘বিদেশি সিনেমা চালাতে পারলে দর্শক আসত। প্রতিযোগিতায় আমাদের সিনেমাও ভালো চলত। কিন্তু বাইরের সিনেমা আমদানি একেবারে বন্ধ। তাই টানা লোকসান আর সম্ভব নয়। মূল কথা হচ্ছে, আমাদের ব্যবসা আমাদের মতো করে চালাতে দিতে হবে।’’
রোকনুজ্জামান ইউনূস বলেন, ‘‘সরকারের প্রতি আমাদের অনুরোধ, আমরা আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে চাই। আমাদের কথা আপনারা শোনেন। আমাদের কথা যদি পছন্দ হয়, ভালো লাগে; তাহলে সেটা গ্রহণ করেন। আমাদের কথা যদি অগ্রহণযোগ্য হয়, আমাদের বলে দেন; এটা হবে না। তাহলে আমরা আমাদের হল একেবারে বন্ধ করে দেব। আর যদি আমাদের সহযোগিতা করেন, তাহলে এটি আমরা আরো সুন্দরভাবে করব এবং আমরা কথা দেব, মধুবনের মতো আরো ২০০ সিনেপ্লেক্স আমরা বাংলাদেশে তৈরি করব।’’
‘মধুবন সিনেপ্লেক্সের’ স্বত্বাধিকারী বলেন, ‘‘২০১৫ সালে শাকিব খানের ‘লাভ ম্যারেজ’ মুক্তির সময় ভাঙা চেয়ার, ছারপোকার কামড়, গরমের মধ্যেও হলভর্তি দর্শক হয়। এরপর ২০১৬ সালে ‘আয়নাবাজি’ প্রদর্শনের সময় শিক্ষিত শ্রেণির দর্শকের ঢল নামে। এমন পরিবেশেও দর্শকদের আগ্রহ দেখে সিনেপ্লেক্স তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই সময় দর্শকদের সঙ্গে কথা বলে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করা হয়। এরপর ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ২০২১ সালে বগুড়ার প্রথম সিনেপ্লেক্স হিসেবে যাত্রা শুরু করে মধুবন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘মধুবন সিনেপ্লেক্সের জন্য বেলজিয়াম থেকে ‘প্রজেকশন মেশিন’ আনা হয়। আমেরিকা থেকে ‘সাউন্ড সিস্টেম’ এবং মুম্বাই থেকে ‘গ্যালালাইট মেটাল কোডেড পর্দা’ আনা হয়। সেই সিনেপ্লেক্স আজ বন্ধ করে দিতে হচ্ছে।’’
ঢাকা/এনাম/বকুল