কালো টাকা সাদা হচ্ছে না সম্পত্তি হস্তান্তর কর কমলাে
Published: 22nd, June 2025 GMT
প্রস্তাবিত বাজেটে অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার যে সুযোগ রাখা হয়েছিল, সমালোচনার মুখে তা বাদ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে সামাজির সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ শুল্ক-করে কিছু পরিবর্তন এনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের চূড়ান্ত বাজেট অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বাজেট চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের মাধ্যমে বাজেট আগামী ১ জুলাই থেকে কার্যকর করা হবে। গত ২ জুন প্রস্তাবিত বাজেটে অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট এবং ভবন কেনায় কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখা হয়েছিল। তবে আগের চেয়ে করের পরিমাণ বাড়ানো হয়। এ নিয়ে সমালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে তা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত এলো।
অনুমোদিত বাজেট নিয়ে গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে অর্থ মন্ত্রণালয়। এতে অর্থ উপদেষ্টা ড.
এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, ‘এখন প্রশ্ন আসতে পারে, যারা আগে টাকা দেখায়নি (অপ্রদর্শিত অর্থ রয়েছে) তাদের এখন কী হবে? তাদের জন্য যেটা আছে, সেটা হচ্ছে তারা রেগুলার ট্যাক্স দেবে। মার্জিনাল ট্যাক্স ৩০ শতাংশ প্লাস ১০ শতাংশ অতিরিক্ত দেবে। এটা কালো টাকা বলে আমরা মনে করি না। ফলে কেউ কিন্তু এটা নিয়ে আপত্তিও করে নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভবন বা ফ্ল্যাটে স্কয়ার ফুট অনুযায়ী কর দিয়ে যারা কালো টাকা সাদা করত, রেগুলার ট্যাক্সের থেকে অনেক কম ট্যাক্স দিয়ে তারা পার পেত। সেটা আমরা পাঁচ গুণের মতো বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। তারপরও যেহেতু একটা বড় দাবি এসেছিল, এবার আমরা এটা বিলোপ করে দিয়েছি।’
সামাজিক সুরক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ল
সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ উল্লেখযোগ্যভাবে পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে প্রস্তাবিত ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকার পরিবর্তে এবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটের তুলনায় বরাদ্দ বেড়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা। অবসরভাতা ও সঞ্চয়পত্রের সুদ এতে অন্তর্ভুক্ত নেই।
শুল্ক-করে যেসব পরিবর্তন
অর্থ মন্ত্রণালয় শুল্ক-করের পরিবর্তন নিয়ে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এতে বলা হয়, পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানি যাদের পরিশোধিত মূলধনের অন্যূন ১০ শতাংশ শেয়ার আইপিও বা সরাসরি তালিকাভুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে আয়ের সাড়ে ২২ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে। তবে বিবেচ্য আয়বর্ষে সব ধরনের আয় ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে সম্পন্ন করলে করহার ২০ শতাংশ হবে। অন্য সব পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানির ক্ষেত্রে সাড়ে ২৭ শতাংশ করারোপ করা হয়েছে। তবে বিবেচ্য আয়বর্ষে সব আয় ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে সম্পন্ন করলে করহার ২৫ শতাংশ।
এ ছাড়া বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ, বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বা কেবল তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে শিক্ষাদানে নিয়োজিত বেসরকারি কলেজের করহার ১৫ শতাংশের স্থলে ১০ শতাংশ হবে। সম্পত্তি হস্তান্তর হতে কর কর্তনের হার ৮ শতাংশ, ৬ শতাংশ ও ৪ শতাংশের স্থলে কমিয়ে যথাক্রমে ৫ শতাংশ, ৩ শতাংশ ও ২ শতাংশ করা হয়েছে।
রিফাইন্ড পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আগাম কর সাড়ে ৭ শতাংশের পরিবর্তে ২ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ঝুট থেকে রিসাইক্লিং প্রক্রিয়ায় উৎপাদিত তুলার উৎপাদন পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। নারী উদ্যোক্তা পরিচালিত বিউটি পার্লারের স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার ওপর এবং বলপয়েন্ট কলমের আমদানি পর্যায়ে মূসক অব্যাহতি প্রদান করা। হার্টের রিং ও চোখের লেন্স আমদানির ক্ষেত্রে আগাম কর অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রস ত ব ত ব সরক র উপদ ষ ট কর র প বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
পাল্টা শুল্ক কার্যকর, ভালো অবস্থানে বাংলাদেশ
বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আজ বৃহস্পতিবার কার্যকর হচ্ছে। পাল্টা শুল্কারোপের আগে বেশির ভাগ দেশের পণ্যে মোটামুটি একই হারে শুল্ক আদায় করত দেশটি। এখন দেশভেদে আলাদা হারে শুল্ক দিতে হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে প্রতিযোগিতার হিসাবও বদলে যাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপের পর কোন দেশের পণ্যে শুল্ক কত দাঁড়াতে পারে, তা জানতে একটি সাধারণ সুতির টি-শার্টের শুল্কের তুলনা করা যায়। যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস এত দিন একটি সুতির টি-শার্ট থেকে সাড়ে ১৬ শতাংশ হারে স্বাভাবিক শুল্ক আদায় করেছে। এই শুল্কের সঙ্গে এখন থেকে বাংলাদেশের জন্য যুক্ত হবে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক।
যুক্তরাষ্ট্রের সময় আজ বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে (বাংলাদেশ সময় আজ সকাল ১০টা ১ মিনিট) পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার কথা। এ সময়ের পর চট্টগ্রাম বন্দরের জেটিতে থাকা জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রগামী যেসব পণ্য তোলা হবে, সেগুলোতে বসবে পাল্টা শুল্ক। চট্টগ্রাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে কনটেইনারবাহী পণ্য পৌঁছাতে ৩০ থেকে ৪৫ দিন সময় লাগে।
যুক্তরাষ্ট্রের কাস্টমস এত দিন একটি সুতির টি-শার্ট থেকে সাড়ে ১৬ শতাংশ হারে স্বাভাবিক শুল্ক আদায় করেছে। এই শুল্কের সঙ্গে এখন থেকে বাংলাদেশের জন্য যুক্ত হবে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক।একটি টি–শার্টে কত শুল্কপাল্টা শুল্কের হিসাব তুলনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন এবং ট্যারিফ শিডিউলের তথ্য–উপাত্ত পর্যালোচনা করা হয়েছে। বাংলাদেশের সুতির একটি টি-শার্টের উদাহরণ দিয়ে শুরু করা যাক।
গত বছর বাংলাদেশ প্রতিটি টি-শার্ট যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ১ ডলার ৬২ সেন্টে (১৯৯ টাকা প্রায়)। এই টি-শার্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আদায় করেছে ২৭ সেন্ট (৩৩ টাকা)। এখন ২০ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক হিসাবে দিতে হবে আরও বাড়তি ৩২ সেন্ট (৩৯ টাকা)। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি টি-শার্ট নিতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকদের গড়ে ৫৯ সেন্ট (৭২ টাকা) শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে সুতির টি-শার্ট রপ্তানিতে বাংলাদেশের বড় প্রতিযোগী ভারত। যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের টি-শার্টের গড় রপ্তানি মূল্য বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। দেশটির পণ্যের ওপর প্রথম দফায় ২৫ শতাংশের পর গতকাল বুধবার আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে সব মিলিয়ে ভারত থেকে একটি টি-শার্ট নিতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের মোট শুল্ক দিতে হবে ১ ডলার ২৫ সেন্ট।
বাংলাদেশের আরেক প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামকে যুক্তরাষ্ট্রে সুতির টি-শার্ট রপ্তানিতে বাংলাদেশের চেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হবে। ভিয়েতনামের প্রতিটি টি-শার্টে গড়ে শুল্ক (পাল্টা শুল্কসহ) দিতে হবে ৯৮ সেন্ট।
চীন অবশ্য বাংলাদেশের চেয়ে কম দামে যুক্তরাষ্ট্রে টি-শার্ট রপ্তানি করে। এমনিতেই বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে ২০২০ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানিতে সাড়ে ৭ শতাংশ বাড়তি শুল্ক দিয়ে আসছিল চীন। শিগগিরই দেশটির ওপর চূড়ান্ত পাল্টা শুল্কহার ঘোষণা করার কথা যুক্তরাষ্ট্রের। তবে বর্তমানে পাল্টা শুল্ক ৩০ শতাংশ ধরে নিলে চীনের প্রতিটি টি-শার্ট যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানিতে শুল্ক দিতে হবে ৮২ সেন্ট।
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ভারত, ভিয়েতনাম ও চীন ছাড়া বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ আছে আরও তিনটি—ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া। ইন্দোনেশিয়ার প্রতিটি টি-শার্টে গড়ে শুল্ক ৯০ সেন্ট, কম্বোডিয়ার ৮৯ সেন্ট এবং পাকিস্তানের টি-শার্টে ৫২ সেন্ট শুল্ক দিতে হবে।
গত বছর বাংলাদেশ প্রতিটি টি-শার্ট যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ১ ডলার ৬২ সেন্টে (১৯৯ টাকা প্রায়)। এই টি-শার্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আদায় করেছে ২৭ সেন্ট (৩৩ টাকা)। এখন ২০ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক হিসাবে দিতে হবে আরও বাড়তি ৩২ সেন্ট (৩৯ টাকা)। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ থেকে একটি টি-শার্ট নিতে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিকারকদের গড়ে ৫৯ সেন্ট (৭২ টাকা) শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।ছিটকে গেছে দুই ভবিষ্যৎ ‘হুমকি’একসময় মিয়ানমারকে বাংলাদেশের পোশাক খাতের জন্য ভবিষ্যৎ হুমকি হিসেবে দেখা হতো। তবে দেশটির পণ্যে ৪০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিটি টি-শার্ট রপ্তানিতে তাদের দিতে হবে ১ ডলার ৮৮ সেন্ট, যা বাংলাদেশের রপ্তানিমূল্যের চেয়েও বেশি। এর ফলে রপ্তানিযুদ্ধে তারা কার্যত বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে।
আবার আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়াকেও একসময় হুমকি মনে করত রপ্তানিকারকেরা। কারণ, আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্টের আওতায় শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুবিধা ছিল তাদের। তবে বাণিজ্যসুবিধার শর্ত ভাঙায় ২০২২ সালের ২ জানুয়ারি এই চুক্তি থেকে ইথিওপিয়াকে বের করে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এখন প্রতিযোগিতার মহাসাগরে পড়েছে।
প্রতিযোগী দেশ আছে আরও তিনটি—ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়া। ইন্দোনেশিয়ার প্রতিটি টি-শার্টে গড়ে শুল্ক ৯০ সেন্ট, কম্বোডিয়ার ৮৯ সেন্ট এবং পাকিস্তানের টি-শার্টে ৫২ সেন্ট শুল্ক দিতে হবে।ভালো নেই দুই শীর্ষ প্রতিযোগীযুক্তরাষ্ট্রে সুতির টি-শার্টে গত বছর শীর্ষ দুই রপ্তানিকারক হলো যথাক্রমে নিকারাগুয়া ও হন্ডুরাস। দেশ দুটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তি কাফটার আওতায় শর্ত সাপেক্ষে শূন্য শুল্কের সুবিধা পেয়ে আসছে। পাল্টা শুল্কে দিন বদলে গেছে তাদেরও। এখন নিকারাগুয়া ১৮ শতাংশ পাল্টা শুল্কের আওতায় পড়েছে। গেল মে মাসে হন্ডুরাসের টি-শার্টে গড়ে ১০ শতাংশ শুল্ক আদায় করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
সব মিলিয়ে তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কে প্রতিটি টি-শার্টে গড়ে বাংলাদেশকে শুধু পাকিস্তানের চেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে। তা–ও টি-শার্টপ্রতি ৭ সেন্ট। অন্য সব প্রতিযোগী দেশগুলোকে বাংলাদেশের চেয়ে টি-শার্টপ্রতি বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে। শুল্কহার সমান হলেও গড়মূল্য বেশি হওয়ায় টি-শার্টপ্রতি শুল্কের পরিমাণও বেশি হয়।
নিকারাগুয়া ও হন্ডুরাস আমাদের প্রতিযোগী নয়। আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের তুলনায় আমরা আগের মতোই আছি। ভারত ও চীনের চেয়ে এগিয়ে আছি। পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়ার চেয়ে ১ শতাংশ শুল্ক বেশি হলেও পিছিয়ে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ইথিওপিয়াও এখন আর হুমকি নয়। এক কথায় বলা যায়, ৩৫ শতাংশ নিয়ে আমরা যে শঙ্কায় ছিলাম, তা কেটে গেছে।এশিয়ান-ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়বাংলাদেশের রপ্তানির একক বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, দেশটিতে গত অর্থবছরে ৮৭৬ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৭৬০ কোটি ডলার। এত দিন বাংলাদেশের পণ্যে কার্যকর গড় শুল্কহার ছিল ১৫ শতাংশ। তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে গড় কার্যকর শুল্কহার ছিল ১৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। নতুন করে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক যুক্ত হয়ে গড় কার্যকর শুল্কহার আরও বাড়বে। তবে শুল্কহার বাড়লেও বাংলাদেশের বড় প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের সমানই রয়েছে। আবার চীন ও ভারতের চেয়ে বাংলাদেশের শুল্কহার কম। সব মিলিয়ে নতুন পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশকে প্রতিযোগিতায় থাকা কিংবা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকার কথা বলছেন রপ্তানিকারকেরা।
এমন বিশ্লেষণের কথা তুলে ধরে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের শীর্ষ পর্যায়ের রপ্তানিকারক এশিয়ান-ডাফ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিকারাগুয়া ও হন্ডুরাস আমাদের প্রতিযোগী নয়। আমাদের প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের তুলনায় আমরা আগের মতোই আছি। ভারত ও চীনের চেয়ে এগিয়ে আছি। পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়ার চেয়ে ১ শতাংশ শুল্ক বেশি হলেও পিছিয়ে নেই। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যচুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ইথিওপিয়াও এখন আর হুমকি নয়। এক কথায় বলা যায়, ৩৫ শতাংশ নিয়ে আমরা যে শঙ্কায় ছিলাম, তা কেটে গেছে।’