Prothomalo:
2025-11-17@11:03:16 GMT

অডিও বুকের বিক্রি বেড়েছে

Published: 24th, June 2025 GMT

আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থাগুলো এখন কেবল মুদ্রিত বই প্রকাশ করে না, সঙ্গে রাখে অডিও বুক, ই-বুকের মতো ডিজিটাল বই। এর মধ্যে মুদ্রিত বই ও ই-বুক পড়তে হয়, কিন্তু অডিও বুক পড়তে হয় না। শুধু কানের মধ্যে হেডফোনের জ্যাক গুঁজে দিলেই হলো। এ কারণে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রে অডিও বুকের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। পাবলিশার্স উইকলির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে গত বছর অডিও বুকের বিক্রি বেড়েছে।

সদ্য প্রকাশিত অডিও পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের (এপিএ) বিক্রয় জরিপ সার্ভে বলছে, ২০২৪ সালে অডিও বুক বিক্রি দ্বিগুণ অঙ্কের প্রবৃদ্ধির ঘরে ফিরেছে। জরিপ অনুযায়ী, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর অডিও বুকের বিক্রি ১৩ শতাংশ বেড়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরে এই মাধ্যমের বই বছরে ১০ শতাংশ করে বাড়ছিল, তবে ২০২৩ সালে তা সামান্য কমে ৯ শতাংশ হয়েছিল।

তবে সর্বশেষ জরিপে বলা হচ্ছে, গত বছর তথ্য সরবরাহকারী এপিএ সদস্যদের মোট বিক্রি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২০ কোটি ডলারে। এই বৃদ্ধির মূল চালিকা শক্তি ছিল ডিজিটাল অডিও, যার বিক্রি ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মোট আয়ের ৯৯ শতাংশ। এই বিক্রি জরিপটি পরিচালনা করেছে টোলুনা হ্যারিস ইন্টারঅ্যাকটিভ এবং এতে অংশগ্রহণ করেছে অডিবল, হ্যাচেট অডিও, হারপারকলিন্স, ম্যাকমিলান, পেঙ্গুইন র্যানডম হাউস, সাইমন অ্যান্ড শুস্টারসহ অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা।

পাবলিশার্স উইকলি বলছে, বিক্রয় পরিসংখ্যান প্রকাশের পাশাপাশি, এপিএ ২০২৫ সালের ভোক্তা জরিপের গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিকও প্রকাশ করেছে। ভোক্তা জরিপ পরিচালনা করেছে এডিসন রিসার্চ। প্রায় ১ হাজার ৭০০ জন ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী আমেরিকানদের নিয়ে এই জরিপ চালানো হয়। জরিপে দেখা গেছে, ৫১ শতাংশ মানুষ কোনো না কোনো সময় অডিও বুক শুনেছেন। তবে অডিও বুকের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির উদ্বেগজনক কারণ হলো পাইরেসি বৃদ্ধি।

জরিপে দেখা গেছে, অডিও বুক শ্রোতাদের মধ্যে ৩৫ শতাংশ ইউটিউবে অডিও বুক শুনেছেন, যা ২০২৩ সালের ২৭ শতাংশ থেকে বেড়েছে। ইউটিউবে অধিকাংশ অডিও বুকই পাইরেটেড কপি এবং বিনা মূল্যে পাওয়া যায়। আর ইউটিউব ব্যবহারের পেছনে এটাই ছিল অন্যতম প্রধান কারণ। এপিএ জানিয়েছে, তারা পাইরেসি রোধে নানা সমাধান নিয়ে কাজ করছে।

জরিপে ইউটিউব ব্যবহারের আরেকটি দিক উঠে এসেছে—অ্যাক্সেসিবিলিটি বা সহজপ্রাপ্যতার গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। ৭২ শতাংশ অংশগ্রহণকারী বলেছেন, তাঁদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হলো, অডিও বুক তাঁদের পছন্দের প্ল্যাটফর্মে পাওয়া। ৬৩ শতাংশ মানুষ লাইব্রেরির অ্যাপের মাধ্যমে অডিও বুক শোনাকে প্রাধান্য দেন।

অন্যান্য বছরের মতোই সাধারণ কথাসাহিত্য (জেনারেল ফিকশন) আয়ের দিক থেকে শীর্ষে আছে। যার বিক্রয় ২০২৩ সালের তুলনায় ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। রোমান্স ঘরানার বইয়ের বিক্রি একলাফে ৩০ শতাংশ বেড়েছে, সায়েন্স ফিকশন বা ফ্যান্টাসি বিক্রি বেড়েছে ২১ শতাংশ। উভয় ঘরানাতে গত বছর মুদ্রিত বইয়ের বিক্রিতেও বড় ধরনের প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে।

অডিও বুক বিক্রিতে প্রাপ্তবয়স্কদের সাহিত্যে বেশি ছিল। বিপরীতে শিশু-কিশোর বিভাগে তুলনামূলক কম ছিল। তবে প্রতিবেদন বলছে, গত বছরে শিশু-কিশোর ও তরুণ বিভাগে ২৬ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। ভবিষ্যতে অডিও বুকের জনপ্রিয়তা কেমন বাড়তে পারে, এমন ভোক্তা জরিপে বলা হয়েছে, অডিও বুক শুনতে আগ্রহী নন ব্যক্তির সংখ্যা ২০২৩ সালের ৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৮ শতাংশ হয়েছে।

সূত্র: পাবলিশার্সউইকলি ডটকম

গ্রন্থনা: রবিউল কমল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ২০২৩ স ল র প বল শ র স গত বছর প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর থেকে মাছ আহরণ বাংলাদেশের কমছে, ভারত-মিয়ানমারে বাড়ছে

বঙ্গোপসাগর থেকে গত তিন বছর বাংলাদেশের মাছ আহরণ ধারাবাহিকভাবে কমছে। ব্যাপকভাবে কমেছে সামুদ্রিক ইলিশ, কাঁকড়া ও চিংড়ি আহরণ। সাগর থেকে মাছ ধরার পরিমাণ কমতে থাকায় সার্বিকভাবে দেশের মাছের জোগানের গতিও কমে গেছে। যদিও ভিন্ন চিত্র প্রতিবেশী দেশগুলোর। বছর বছর সাগর থেকে মাছ ধরা বাড়িয়ে মাছ আহরণে বিশ্বের শীর্ষ দশ দেশের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে ভারত। এমনকি গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত মিয়ানমারেও প্রতিবছর বাড়ছে সামুদ্রিক মাছ আহরণ।

সাগর থেকে বাংলাদেশের মাছ আহরণ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাগরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও ঘূর্ণিঝড়কে দায়ী করছেন এ দেশের মৎস্য কর্মকর্তারা। তা ছাড়া অতিরিক্ত মাছ আহরণের কারণেও মাছের মজুত কমে আসছে বলে জানান তাঁরা।

মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে মোট সামুদ্রিক মাছ আহরণের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ৬ হাজার টন। পরের অর্থবছরে তা কমে দাঁড়ায় ৬ লাখ ৭৯ হাজার টনে। সর্বশেষ গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা আরও কমে দাঁড়ায় ৬ লাখ ২৮ হাজার টনে। অর্থাৎ ২০২২–২৩ অর্থবছরের চেয়ে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে সাগর থেকে মাছ আহরণ প্রায় সাড়ে ৭ শতাংশ কমেছে। গত জুনে শেষ হওয়া ২০২৪–২৫ অর্থবছরে এই পরিমাণ আরও কমেছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে এখনো অনুষ্ঠানিকভাবে গত অর্থবছরের তথ্য প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।

সমুদ্র খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশ কয়েক বছর ধরে সাগরে অতিরিক্ত মাছ আহরণের কারণে মাছের মজুত কমে গেছে। এ বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তরের সামুদ্রিক শাখার সহকারী পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, ২০ বছর আগেও সাগরে বাণিজ্যিক ট্রলারের সংখ্যা ছিল এক শর কম। এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬৫টিতে। তিনি জানান, সাগরের ৪০ মিটারের ভেতরে মাছ না ধরার কথা থাকলেও এসব নৌযান তা মানছে না। আবার ছোট নৌযানের সংখ্যা এখন ২৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এসব নৌযানেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, যা তাদের ব্যবহার করার কথা নয়। পাশাপাশি অবৈধ জালও ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি উপকূলের ৫ থেকে ১০ মিটারের মধ্যে মাছ ধরা হচ্ছে। এতে ডিম থেকে নতুন পোনা তৈরির সুযোগ নষ্ট হচ্ছে।

বিশ্বে সমুদ্র থেকে মাছ আহরণে নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। এ ছাড়া শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে ভারত ৬ষ্ঠ অবস্থানে রয়েছে। ভারতের মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১–২২ সালে সাগর থেকে দেশটির মাছ আহরণের পরিমাণ ছিল ৪১ লাখ ২৭ হাজার টন, যা আগের বছরের তুলনায় ১৮ শতাংশ বেশি। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৪৪ লাখ ৯৫ হাজার টন মাছ আহরণ করেছে ভারত।

মিয়ানমারের মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে ২০২০-২১ সালে সাগর থেকে মাছ আহরণের পরিমাণ ছিল ৩২ লাখ ৯৫ হাজার। সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই পরিমাণ আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ লাখ ১৪ হাজার টনে। অর্থাৎ গৃহযুদ্ধের মধ্যেও দেশটির সাগর থেকে মাছ আহরণ বাড়ছে।

এদিকে বাংলাদেশে সাগরে সবচেয়ে বেশি আহরণ কমছে ইলিশ ও চিংড়ির। মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩–২৪ অর্থবছরে সাগর থেকে ইলিশ আহরণ তার আগের অর্থবছরের চেয়ে প্রায় সাড়ে ৬ শতাংশ কমেছে। আর চিংড়ির আহরণ কমেছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। কাঁকড়া আহরণও কমেছে ১৬ শতাংশের বেশি।

সাগর থেকে মাছ আহরণ কমে যাওয়া এবং এ বিষয়ে করণীয় প্রসঙ্গে সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের উপপরিচালক মোহাম্মদ শরিফুল আজম প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকেই চিংড়ি আহরণ কমে যাওয়ার তথ্য পাচ্ছিলাম। তাই সামুদ্রিক মৎস্য বিধিমালায় চিংড়ি ধরার ট্রলারের লাইসেন্স আর না বাড়ানোর নীতি গ্রহণ করি। ২০২৮ সাল পর্যন্ত এসব ট্রলাররের লাইসেন্স নবায়ন করা হবে না।’

সাগর থেকে মাছ আহরণ বাড়াতে হলে বঙ্গোপসাগরের নিয়ন্ত্রণহীন মৎস্য আহরণকে নজরদারির মধ্যে আনার কথা বলছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. জিয়া হায়দার চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে পাঁচটি ট্রলারে স্যাটেলাইট ট্রেকার বসিয়ে নজরদারি করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব ট্রলার ডিজিটাল নজরদারির আওতায় আনার পরামর্শ তাঁর।

এদিকে মাছ আহরণ কমতে থাকায় সাগরের ওপর নির্ভরশীল জেলেরাও বিপাকে পড়ছেন। ঋণের দাদনের টাকা শোধ করে লাভের অঙ্ক মিলছে না তাঁদের। কক্সবাজারে পাঁচ হাজারের বেশি মাছ ধরার কাঠের নৌযান আছে। এসব নৌকায় এখন মাছ ধরা পড়ছে কম। কক্সবাজার ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, টানা ছয় থেকে সাত মাস তেমন মাছ ধরা পড়ছে না। কয়েক বছর ধরেই মাছ কম পাওয়া যাচ্ছে। এক সপ্তাহের জন্য সাগরে গেলে দুই থেকে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। কিন্তু মাছ কম পাওয়ায় দাদন পরিশোধ করাই এখন কষ্টকর হয়ে গেছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে মৎস্য অধিদপ্তরের ব্লু ইকোনমি সেলের পরিচালক মো. সাজদার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সাগরে এখন ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে। সাগরের তাপমাত্রাও বেড়ে গেছে। তা ছাড়া জেলিফিশের প্রকোপ বেড়েছে। আর অতিরিক্ত মৎস্য আহরণের কারণে মাছের মজুত কমছে। তাই মাছ আহরণ আরও কমিয়ে আনতে হবে।

এ বিষয়ে গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র মৎস্যজীবী জেলে সমিতির এক সভায় গণমাধ্যমে সঙ্গে কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘ভারতের জেলেরা যাতে বাংলাদেশে এসে মাছ ধরতে না পারেন, সেটা আমাদের বন্ধ করতে হবে।’

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে সারা বিশ্বে সাগর থেকে ৭ কোটি ৯৭ লাখ টন মাছ ধরা হয়। যার মধ্যে অর্ধেক মাছ আহরণ করেছে এশিয়ার দেশগুলো। ওই বছর বিশ্বের মোট সামুদ্রিক মাছের ১৪ দশমিক ৮ শতাংশই আহরণ করেছিল চীন, যার পরিমাণ ১ কোটি ১৮ লাখ ১৯ হাজার টন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইন্দোনেশিয়া ওই বছর আহরণ করেছে ৬৮ লাখ ৪৩ হাজার টন মাছ। আর ভারত আহরণ করেছে ৩৫ লাখ ৯৭ হাজার টন। যেখানে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল বৈশ্বিক মাছ আহরণের মাত্র শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কারানির্যাতিত জবি শিক্ষার্থী খাদিজাতুল কুবরাকে পদ দিল ছাত্রদল
  • সাগর থেকে মাছ আহরণ বাংলাদেশের কমছে, ভারত-মিয়ানমারে বাড়ছে