আইএমএফের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার মিলবে দু-এক দিনের মধ্যে
Published: 24th, June 2025 GMT
বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদনে করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এ অনুমোদন করা হয়। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশ পাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করা হয়। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ হলো আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। ১৩০ কোটি পাওয়া গেলে ১০৯ কোটি ডলার বাকি থাকবে। তবে এ কর্মসূচির সঙ্গে নতুন করে প্রায় ৭৬ কোটি যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে, বিশেষত টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এর পর ওয়াশিংটনে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষ গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আইএমএফ আইএমএফ ঋণ আইএমএফ র র অর থ
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে জানাজায় হামলা, নিহত ৪০
সুদানের কেন্দ্রীয় কর্দোফান অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ শহর এল-ওবাইদে একটি জানাজায় হামলায় ৪০ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার জাতিসংঘ এ তথ্য জানিয়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক কার্যালয় কখন এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বা এর পিছনে কারা ছিল তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি। তবে জানিয়েছে, কর্দোফান অঞ্চলের পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে।
সুদানের গৃহযুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার শিকার হয়েছে এবং আরো লাখ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এই যুদ্ধ নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে, যা আরও বড় মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা তৈরি করেছে।
২০২৩ সাল থেকে সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধরত আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) বিশাল পশ্চিম দারফুর অঞ্চলের শেষ সেনা ঘাঁটি এল-ফাশার দখল করার পর কর্দোফানে আক্রমণ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
জাতিসংঘের ওসিএইচএ সংস্থা বলেছে, “স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে যে উত্তর কর্দোফান রাজ্যের রাজধানী এল ওবাইদে একটি জানাজায় গতকাল হামলায় কমপক্ষে ৪০ জন বেসামরিক লোক নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে।”
এল-ফাশার থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া মানুষরা আরএসএফের হাতে ধর্ষণ সহ ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছে।
চার সন্তানের মা আমিরা এল-ফাশার থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার (৪৩ মাইল) পশ্চিমে তাওইলার একটি অস্থায়ী আশ্রয়স্থল থেকে বলেন, “ধর্ষণ ছিল গণধর্ষণ। জনসমক্ষে গণধর্ষণ, সবার সামনে ধর্ষণ এবং কেউ তা থামাতে পারেনি।”
ডক্টরস উইদাউট বর্ডার্স (এমএসএফ) জানিয়েছে , যৌন সহিংসতার শিকার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিকটবর্তী জমজম শিবিরে আরএসএফের পূর্ববর্তী হামলার পর তাওইলায় তাদের দলের কাছ থেকে চিকিৎসা চেয়েছিলেন।
ঢাকা/শাহেদ