উত্তাল আরব সাগর। ঢেউ এসে আঁচড়ে পড়ছে তীরে। সাগরের হাঁটু জলে দাঁড়িয়ে প্রয়াত অভিনেত্রী শেফালির স্বামী পরাগ ত্যাগী। তার গায়ে ডোরাকাটা শার্ট। হাঁটু পর্যন্ত গোটানো জিন্স প্যান্ট। উসকোখুসকো চুলগুলো হেয়ারব্যান্ডে বাঁধা। তার সঙ্গে রয়েছেন পরিবারের কয়েকজন সদস্য। কিছুক্ষণ পরে শেফালির অস্থিভস্ম উত্তাল সাগর জলে ভাসিয়ে দেন পরাগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এমন দৃশ্য দেখা যায়; যা এখন ভাইরাল।

গত ২৭ জুন রাতে আকস্মিকভাবে মারা যান ‘কাঁটা লাগা গার্ল’খ্যাত অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা। তার মৃত্যুতে স্তব্ধ গোটা বলিউড। শেফালির স্বামী পরাগ ত্যাগী স্ত্রীর মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। রবিবার (২৯ জুন) মুম্বাইয়ে শেফালির শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শ্মশানে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরাগ ত্যাগী। স্ত্রীর অস্থিভস্ম সাগর জলে ভাসিয়ে দিয়ে ঠিকমতো হাঁটতে পারছিলেন তিনি।   

শেফালির মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪২ বছর। এত কম বয়সে তার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। যদিও প্রাথমিক তদন্তে অস্বাভাবিক কিছু পায়নি পুলিশ।

আরো পড়ুন:

‘সেজানের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়েছিল শ্বেতা’

‘কাঁটা লাগা গার্ল’ শেফালির মৃত্যু নিয়ে নতুন তথ্য

পুলিশের বরাত দিয়ে নিউজ১৮ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে অন্যান্য দিনের মতোই কিছু ওষুধ খেয়েছিলেন শেফালি। সন্ধ্যায় একটি ইঞ্জেকশন নেন তিনি। এই অ্যান্টি এজিং ড্রাগ বা বয়স কমানোর ওষুধটি গত কয়েক বছর ধরেই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শমতো নিতেন শেফালি। রাতে শেফালির ব্লাড প্রেসার হঠাৎ অনেকটা কমে যায়; কাঁপতে শুরু করেন তিনি। পর শেফালির পরিবারের সদস্যরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

একটি সূত্র এনডিটিভিকে বলেন, “আম্বলি থানা পুলিশের দুটো টিম এ মামলার তদন্ত করছে। কপার হাসপাতালে শেফালির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের ভিডিও ধারণ করা হয়েছে। পুলিশ ৭টি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। শেফালির পরিবারের সদস্য ও যে ফার্মেসি থেকে ওষুধ নিতেন এমন ১৪ জনের বক্তব্য রেকর্ড করেছে পুলিশ।”

১৯৭২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সমাধি’ সিনেমার জন‌্য ‘কাটা লাগা’ গানে কণ্ঠ দেন লতা মঙ্গেশকর। ২০০২ সালে এ গানের রিমেক হয়। মাত্র ১৯ বছর বয়সে সেই গানের মডেল হিসেবে প্রথম সবার নজর কাড়েন ভারতীয় মডেল-অভিনেত্রী শেফালি জারিওয়ালা।

২০০৪ সালে ডেভিড ধাওয়ান পরিচালিত ‘মুঝসে শাদি করোগি’ সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। সালমান খান, অক্ষয় কুমার এবং প্রিয়াঙ্কা চোপড়া অভিনীত এই সিনেমায় ক্যামিও চরিত্রেও অভিনয় করেন শেফালি। সালমান, অক্ষয় এবং প্রিয়াঙ্কার মতো তারকার সঙ্গে তার ক্যারিয়ারের প্রথম সিনেমা।

এরই মাঝে সংগীত পরিচালক হরমিত সিংহের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান শেফালি। ২০০৪ সালে হরমিতের সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন এই অভিনেত্রী। কিন্তু এ সম্পর্ক বেশি দিন টেকেনি। ২০০৯ সালে হরমিতের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয় শেফালির। অভিনেত্রীর দাবি— তাকে শারীরিক-মানসিক অত্যাচার করতেন হরমিত।

বিবাহবিচ্ছেদের পর হিন্দি ধারাবাহিকের অভিনেতা সিদ্ধার্থ শুক্লার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন শেফালি। কিন্তু এ সম্পর্কেরও ইতি টানেন তিনি। এরপর টেলিভিশনের খ্যাতনামা তারকা পরাগ ত্যাগীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান শেফালি। ২০১২ সালে নাচের একটি রিয়েলিটি শোয়ে প্রতিযোগী হিসেবে জুটি বেঁধে অংশগ্রহণ করেন এই দুই তারকা। দীর্ঘদিন সম্পর্কে থাকার পর ২০১৪ সালে পরাগের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন শেফালি।

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র পর গ ত য গ তদন ত হরম ত

এছাড়াও পড়ুন:

গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরার বিরু‌দ্ধে মামলা কর‌বে দুদ‌ক

নির্ধা‌রিত সময়সীমার মধ্যে সম্পদের হিসাব না দেওয়ায় আওয়ামী লী‌গের সা‌বেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরা মিয়ার বিরু‌দ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত নি‌য়ে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুদ‌কের মহাপ‌রিচালক আক্তার হো‌সেন এ তথ‌্য জানান।

আরো পড়ুন:

মাদারীপুরে কবরস্থানে বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে দুদকের অভিযান

পলাতক থাকলেও বিদেশে টাকা পাচার অব্যাহত জাবেদের: দুদক

তি‌নি ব‌লেন, “গুলশান আরা মিয়ার বিরু‌দ্ধে জ্ঞাত আয় ব‌হির্ভূত সম্পদ অর্জ‌নের অভিযোগ খ‌তি‌য়ে দেখ‌তে নির্ধা‌রিত সম‌য়ে সম্প‌দের হিসাব দি‌তে বলা হলেও তি‌নি জমা দেন‌নি। ফ‌লে, তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় (১) একটি মামলা রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

দুদক জানায়, আওয়ামী লী‌গের সা‌বেক দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান মিয়া ওরফে গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরা মিয়ার বিরু‌দ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জ‌নের অভিযোগ উঠে। অভিযোগ আম‌লে নি‌য়ে অনুসন্ধান শুরু ক‌রে ক‌মিশন। এক পরিচালক এর সমন্বয়ে দুই সদস্য বিশিষ্ট টিমও গঠন করা হয়। অনুসন্ধা‌নের এক পর্যা‌য়ে গোলা‌পের স্ত্রীর অর্জিত সম্পদের পরিমাণ, সম্পদ অর্জনের উৎস ও উৎসসমূহের সঠিকতা বা যথার্থতা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে নিরুপণে কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(১) ধারা অনুযায়ী গত  ১৫ এপ্রিল তা‌কে সম্প‌দের হিসাব দা‌খি‌লের নো‌টিশ দেওয়া হয়। নো‌টিশ পে‌য়ে তি‌নি সম্পদ বিবরণীর দাখিলের সময় বৃদ্ধির জন্য গত ২৩ জুলাই আবেদন করেন।

আবেদনের প্রেক্ষিতে পূর্বোক্ত সময়সীমার ধারাবাহিকতায় আরো ১৫ কার্যদিবস সময় বর্ধিত করা হয়। বর্ধিত ২১ আগস্টের মধ্যে তার সম্পদ বিবরাণী দাখিলের সময় শেষ হয়ে গেলেও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট গুলশান আরা মিয়া সম্পদ বিবরণী দাখিল করেননি। কিন্তু তিনি নির্ধারিত ও বর্ধিত সময়সীমার মধ্যে সম্পদ বিবরণী দাখিলের আদেশ প্রাপ্তির পর তদনুযায়ী লিখিত বিবৃতি বা তথ্য প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ধারায় (০১) একটি মামলার অনুমোদন দেয় দুদক।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গোলাপের স্ত্রী গুলশান আরার বিরু‌দ্ধে মামলা কর‌বে দুদ‌ক