বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্র মনি পান্ডে বলেছেন, আঞ্চলিক জোটটির মূল অগ্রাধিকার উন্নয়নকেন্দ্রিক। তবে নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জগুলো সদস্যদেশগুলোর উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষার পথে বাধা হওয়ায় নিরাপত্তায়ও সমান গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বিমসটেক সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে ইন্দ্র মনি পান্ডে এ কথা বলেন।

সাম্প্রতিক সময়ে বিমসটেক (বঙ্গোপসাগরীয় বহুখাতভিত্তিক প্রযুক্তি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা উদ্যোগ) নিরাপত্তার ইস্যুতে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে বলে কেউ কেউ সমালোচনা করে থাকেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইন্দ্র মনি পান্ডে বলেন, সংগঠনটি মূলত উন্নয়নকেন্দ্রিক থাকলেও সদস্যরাষ্ট্রগুলোর উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষায় বাধা হয়ে দাঁড়ানো নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জগুলোও সমান গুরুত্বে বিবেচনা করছে।

বিমসটেক মহাসচিব বলেন, ‘আমরা নিরাপত্তার ওপর বেশি জোর দিচ্ছি কি না, সেই প্রশ্নে বলতে চাই, আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সদস্যদেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জনে সহায়তা করা। সেই প্রেক্ষাপটে উন্নয়ন আকাঙ্ক্ষাকে প্রভাবিত করে এমন নিরাপত্তার পথে যেসব চ্যালেঞ্জ আছে সেগুলোকেও আমরা বিবেচনায় নিচ্ছি।’

ইন্দ্র মনি পান্ডে বলেন, তাঁরা নিরাপত্তার যে বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছেন তার মধ্যে রয়েছে মানব পাচার, মাদক পাচার, সাইবার নিরাপত্তা ও সামুদ্রিক নিরাপত্তা। এ প্রসঙ্গে বিমসটেক মহাসচিব বলেন, ‘আপনি যদি এই চ্যালেঞ্জগুলো দেখেন তাহলে বুঝবেন এগুলো মোকাবিলা না করলে, যেহেতু এগুলোর আন্তসীমান্ত বৈশিষ্ট্য আছে, সেগুলো সরাসরি উন্নয়নের ওপর প্রভাব ফেলবে। এ কারণেই সদস্যরাষ্ট্রগুলোর নিরাপত্তার কিছু নির্দিষ্ট দিক চিহ্নিত করা হয়েছে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য।’ তিনি বলেন, যদি সব সদস্যরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে চায়, তাহলে তারা তা করবেন।

ইন্দ্র মনি পান্ডে মতে, বিদ্যমান কাঠামোর মাধ্যমে সদস্যদেশগুলো ঠিক করবে কোন চ্যালেঞ্জগুলো আঞ্চলিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে এবং কোনগুলো জাতীয় পর্যায়ে পরিচালিত হবে।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বিমসটেকের এগোনোর পথে কোনো চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে কি না সে প্রশ্নে জোটের মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশ, ভারতসহ জোটের সব দেশ বিমসটেকের মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইন্দ্র মনি পান্ডে বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মধ্যে যখন চ্যালেঞ্জ আসে তখন সদস্যরাষ্ট্রগুলো নিজেদের মধ্যে তা মোকাবিলা করতে সক্ষম। দেশগুলো নিজেদের মধ্যে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার উপায় খুঁজে নেবে বলে তিনি মনে করেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব মসট ক

এছাড়াও পড়ুন:

৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী

গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নবম ব্যাচের (নবনীতক ৯) শিক্ষার্থীদের নিয়ে শিক্ষা সমাপনী-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের বিদায় বেলায় এক মঞ্চে আসীন হন দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতিমান সাত উপাচার্য।

বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুর ১২টায় একাডেমিক ভবন প্রাঙ্গণে আনন্দঘন পরিবেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর ছাড়াও অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী, খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী, পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এসএম আব্দুল আওয়াল, রাঙ্গামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আতিয়ার রহমান ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন তারেক।

আরো পড়ুন:

নতুনবাজারের সেই রনির বুলেটের যন্ত্রণা আজো থামেনি

শিশু ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন, মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা 

এক মঞ্চে একইসঙ্গে এতজন উপাচার্যকে পেয়ে সমাপনী ব্যাচসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “এভাবে একসঙ্গে পুরো সেশনের শিক্ষা সমাপনী আয়োজনের আইডিয়াটি অত্যন্ত চমৎকার। এতে করে একটি ব্যাচের একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রবেশ ঘটে। যেখানে সবার একসঙ্গে পরীক্ষা হয়, রেজাল্ট প্রকাশ হয় এবং কোনো সেশন জট থাকে না। আমি এই আইডিয়াটি আমার নিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও বাস্তবায়নের চেষ্টা করব।”

খুলনা কৃষি বিশ্বিবদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল আহসান বলেন, “আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগণ এখানে এসেছি সংহতি জানানোর জন্য। আমি নবম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের জীবনে সফলতা কামনা করছি।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, “শিক্ষার্থীদের বিসিএস দেওয়া, বিভিন্ন সেক্টরে কাজ করা বা ব্যবসা করার লক্ষ্য থাকে। তবে জীবনে কোনো না কোনো কিছু করতেই হবে। এক্ষেত্রে অবসর বলে কোনো শব্দ থাকা উচিত নয়।”

পিরোজপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, “আমি যখন দেশের বাইরে পড়াশোনা করতাম, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে আমি কখনোই দেখিনি। আর বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্চে কখনো একসঙ্গে সাতজন উপাচার্যকেও বসতে দেখিনি, এটা অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর করে দেখিয়েছেন।”

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম আব্দুল আওয়াল বলেন, “আমরা যদি আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিতে চিন্তা করি, আমাদের চাকরি খোঁজার পাশাপাশি এমন কিছু করার মানসিকতা রাখতে হবে, যা দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।”

রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আতিয়ার রহমান বলেন, “শিক্ষা সমাপনী মানেই সব সম্পর্ক ছিন্ন করা নয়। বিশ্বে এমন অনেক নজির আছে, যেখানে অ্যালামনাই থেকে উপাচার্য নিয়োগ হয়েছে। তাই নিজেকে বিস্তৃত পরিসরে মেলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখ উজ্জ্বল করার দায়িত্ব নিতে হবে।”

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, “নিজেকে চেনাই সবচেয়ে বড় শিক্ষা। আর শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনই বলে দেবে, তারা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে কতটা জ্ঞান অর্জন করেছে।”

প্রধান অতিথিরি বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. হোসেন উদ্দিন শেখর আগত উপাচার্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দেওয়ার জন্যই আমাদের এই প্রয়াস। একইসঙ্গে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি তুলে ধরাও আমাদের লক্ষ্য। আমরা জানিয়ে দিতে চাই, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে চায় এবং অচিরে দাঁড়াবেই।”

তিনি বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ইউজিসির দুইটি হিট প্রকল্প পেয়েছি এবং ভবিষ্যতে আরো পাব। আমরা আশা করছি, বি ক্যাটাগরি থেকে আগামী অর্থবছরের আগেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়টি এ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হবে।”

গোবিপ্রবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সোহেল হাসানের সভাপতিত্বে এতে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক, সব অনুষদের ডিন, বিভাগীয় সভাপতি ও প্রাধ্যক্ষগণ, দপ্তর প্রধানগণ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, জুলাই শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।

শিক্ষা সমাপনী উপলক্ষে বুধবার ছাত্রদের কালার ফেস্ট ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) সন্ধ্যায় একটি কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে।

ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের কাছে তেল বিক্রি করতে পারে পাকিস্তান, খোঁচা দিলেন ট্রাম্প
  • কেটি পেরি ও জাস্টিন ট্রুডোর ডিনার, গুঞ্জন
  • শিক্ষার্থী সাজিদ স্মরণে ইবিতে ব্যতিক্রমী আয়োজন
  • ৭ উপাচার্যের অংশগ্রহণে গোবিপ্রবিতে শিক্ষা সমাপনী
  • আমির খানের বাসায় একসঙ্গে ২৫ পুলিশ কর্মকর্তা, উঠছে নানা প্রশ্ন