ফেনীতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে পদযাত্রা
Published: 23rd, July 2025 GMT
ফেনীতে টেকসই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণসহ আট দফা দাবিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেছে সর্বস্তরের মানুষ। আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণে আশ্বাস না মিললে ফেনীর মহিপাল পয়েন্টে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করা হবে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টায় ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে শহরের ট্রাংক রোড ও শহীদ শহীদুল্লা কায়সার সড়ক প্রদক্ষিণ করে মহিপাল পাউবো কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
আয়োজকদের পক্ষে বক্তারা বলেন, ‘‘বর্ষা এলেই প্রতি বছর এই অঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। হাজার কোটি টাকার ফসল ও সম্পদের ক্ষতি হয়। দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ টেকসই ব্যবস্থা নেয়নি।’’ এতে ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা জানান, জনগণের দাবিতে এবার ছাত্র-জনতা ও প্রবাসী ফেনীবাসীর সমন্বয়ে এই পদযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
দেশের অবস্থা দেখে হৃদয় ভেঙেছে বাঁধনের
জাজিরায় পদ্মা সেতু প্রকল্প রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রজন্মভিত্তিক টেকসই বাঁধ নির্মাণ; সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব প্রদান; মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনীয়া নদীর শাসন; অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ; মুছাপুর ক্লোজার ও আশপাশের বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ; দখলমুক্ত খাল খনন ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ; জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ ও ২০২৪ সালের বন্যার ক্ষয়ক্ষতির সঠিক হিসাব প্রকাশ ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা।
এ সময় আন্দোলনকারীরা ‘টেকসই বাঁধ চাই’, ‘পাউবোর দুর্নীতির বিচার চাই’, ‘সব শালারা বাটপার, আর্মি হবে ঠিকাদার’ সহ নানা স্লোগান দেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক নুর নবী হাসান বলেন, “প্রজন্মভিত্তিক টেকসই বাঁধের জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যদি আশ্বাস না পাই, আমরা মহাসড়ক অবরোধে যাব।”
আরেক সংগঠক ওসমান গনি রাসেল বলেন, “আমাদের খালগুলো দখল হয়ে গেছে। প্রতি বছর বর্ষায় নদীর বাঁধগুলো ভেঙে পড়ে। অবিলম্বে দখল হওয়া খালগুলো পুনরুদ্ধার করতে হবে এবং বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব সেনাবাহিনীকে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
পদযাত্রায় একাত্মতা প্রকাশ করে ফেনী জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা মুফতি আব্দুল হান্নান বলেন, “এসব দাবি বাস্তবসম্মত। সরকারের উচিত অবিলম্বে এসব দাবি বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেয়া।”
কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে ফেনী শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। পদযাত্রায় ফেনীর ছয় উপজেলার ভুক্তভোগী বাসিন্দা, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি ও সাধারণ ছাত্র-জনতা অংশ নেয়।
ঢাকা/সাহাব/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদয ত র পদয ত র ট কসই ব
এছাড়াও পড়ুন:
হামাসকে অস্ত্রত্যাগে ও গাজার শাসন ছাড়তে সৌদি, কাতার, মিসরের আহ্বান
ফিলিস্তিনের গাজায় চলমান ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ বন্ধে এ ভূখণ্ডে হামাসের শাসনের অবসান ঘটানো এবং সংগঠনটিকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে কাতার, সৌদি আরব ও মিসরসহ একাধিক আরব দেশ।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংকটের দ্বি–রাষ্ট্রীয় সমাধানের প্রস্তাব পুনরুজ্জীবিত করতে গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘের উদ্যোগে নিউইয়র্কে সংস্থাটির সদর দপ্তরে একটি সম্মেলন আয়োজন করা হয়। সেখানেই গৃহীত সাত পৃষ্ঠার একটি ঘোষণাপত্রে এ আহ্বান জানানো হয়। ঘোষণাপত্রটিকে সমর্থন করেছে ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ।
ঘোষণায় বলা হয়, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে অবশ্যই তার শাসন (এ উপত্যকায়) শেষ করতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। এটি একটি সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ।’
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ এ ঘোষণায় স্বাক্ষর করে। এতে যুদ্ধ শেষে গাজায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশি সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়। সম্মেলনে ইসরায়েল ও তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি।আগের দিন, জাতিসংঘে ফিলিস্তিনি প্রতিনিধিদল ইসরায়েল ও হামাস উভয়কে গাজা ত্যাগ করার আহ্বান জানায়; যাতে সাগর উপকূলবর্তী এ অঞ্চলটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত হতে পারে।
আরও পড়ুনগাজায় ত্রাণপ্রত্যাশী ৯৩ জনকে হত্যা ইসরায়েলি বাহিনীর, যুদ্ধের বর্বরতার নিন্দায় পোপ২১ জুলাই ২০২৫ঘোষণায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলারও নিন্দা জানানো হয়। তবে এ বিষয়ে এখনো জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ আনুষ্ঠানিকভাবে নিন্দা জানায়নি। সম্মেলনের সহআয়োজক ফ্রান্স ঘোষণাপত্রটিকে ‘ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন’ বলে উল্লেখ করেছে।
আরও পড়ুনগাজায় হামলার নিন্দা জানালেও ইসরায়েলের সঙ্গে কেন বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এসব দেশ১৮ ঘণ্টা আগেফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যাঁ-নোয়েল বারো বলেন, ‘প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো হামাসের নিন্দা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি শাসন থেকে তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ও ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইচ্ছা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে।’
প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলো হামাসের নিন্দা জানিয়েছে, ৭ অক্টোবরের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে, হামাসকে নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান জানিয়েছে, ফিলিস্তিনি শাসন থেকে তাদের বাদ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে ও ভবিষ্যতে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইচ্ছা স্পষ্টভাবে জানিয়েছে।জ্যাঁ-নোয়েল বারো, ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, কানাডাসহ অন্যান্য পশ্চিমা দেশ এ ঘোষণায় স্বাক্ষর করে। এতে যুদ্ধ শেষে গাজায় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে বিদেশি সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়। সম্মেলনে ইসরায়েল ও তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি।
আরও পড়ুনগাজায় ‘এখনই যুদ্ধ থামাতে’ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সসহ ২৮ দেশের আহ্বান২২ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনইসরায়েলের স্নাইপাররা এমনভাবে গুলি ছুড়ছিলেন, যেন পশু শিকার করছেন: গাজার বাসিন্দা২১ জুলাই ২০২৫