Samakal:
2025-09-17@21:28:55 GMT

দুর্গতদের পার্শ্বে দাঁড়ান

Published: 10th, July 2025 GMT

দুর্গতদের পার্শ্বে দাঁড়ান

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে মঙ্গলবার হইতে সূচিত বারিধারার কারণে ভোগান্তিতে নিপতিত দেশের লক্ষ মানুষ। বিশেষত উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীর দুর্ভোগ চরমে উপনীত। মাত্র এক বৎসরের ব্যবধানে ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লাসহ চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন জেলা পুনরায় প্লাবিত হইবার শঙ্কায় পড়িয়াছে।

ফসলি জমি ও আমনের বীজতলা নিমজ্জিত হওয়া; পুকুর ও খামারের মৎস্য ভাসিয়া যাওয়া; সড়কপথ জলমগ্ন হওয়ায় চলাচলে অসুবিধাসহ বহুমাত্রিক সংকট ইতোমধ্যে দৃশ্যমান। অতিবর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফেনীর দুইটি নদীর বেড়িবাঁধের কয়েক স্থান ভাঙিয়া যাইবার কারণে অনেক গ্রাম প্লাবিত এবং গত বৎসরের ন্যায় পুনরায় বৃহদাকার বন্যার আশঙ্কার উদ্ভব হইয়াছে। 

গত বৎসর ফেনীর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার পর সরকারের তরফ হইতে বাঁধ সুরক্ষার অঙ্গীকার করা হইয়াছিল। অথচ ঐ ভয়াবহ বন্যার পরও গতানুগতিক বাঁধ সংস্কার পদ্ধতিমুক্ত হইতে পারেনি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। এই বৎসরও দায়সারা প্রকারে বাঁধ সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ হইয়াছে বলিয়া সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে আসিয়াছে। খোদ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাগণ বলিয়াছেন, এই প্রকার সংস্কার ও মেরামত কার্যক্রমের মাধ্যমে ক্ষুদ্রাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ করা হইলেও গত বৎসরের আগস্টের ন্যায় বৃহদাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নহে। অথচ বন্যা নিয়ন্ত্রণে টেকসই বাঁধ নির্মাণের বিকল্প নাই।

কেবল ফেনীতেই নহে; সমগ্র দেশেই বাঁধ লইয়া অভিযোগের অন্ত নাই। অনিয়মের কারণে বৎসরে বাঁধ নির্মাণে কোটি কোটি টাকা ব্যয় হয় বটে; উহা টেকসই হয় না। নির্মাণজনিত ত্রুটি ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করিয়া বাঁধ নির্মাণের ফলে উহা মানুষকে বন্যা ও অন্যান্য দুর্যোগ হইতে সুরক্ষা দিতে অক্ষম।

সমকালের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেনীর বন্যা সমস্যার স্থায়ী সমাধানে ২০০৬ সালে সূচিত ১৫১ কোটি টাকা ব্যয়ে মুহুরী-কহুয়া-সিলোনিয়া বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প ২০১০ সালে সমাপ্ত হইবার পর কয়েক বৎসর বন্যামুক্ত ছিল এলাকাবাসী। ২০১৩ সালে আকস্মিক বন্যায় বাঁধের তিনটি স্থানে ভাঙন ধরিবার পর প্রতি বৎসরই বাঁধ ভাঙিতেছে। অভিযোগ রহিয়াছে, দুষ্টচক্র প্রতি বৎসর বাঁধ মেরামতের নামে অর্থ লোপাট করিতেছে। ভাঙনের পর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রভাবশালী মহল স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দিকে অগ্রসর না হইয়া অতি দ্রুততায় কোটি টাকা ব্যয়ে অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করে, যাহাতে পরের বৎসর পুনরায় বরাদ্দপ্রাপ্তি সহজ হয়। এই ক্ষেত্রে প্রতিবারই নির্দিষ্ট কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কার্যাদেশপ্রাপ্তির অভিযোগ রহিয়াছে।

আমরা বারংবার বলিয়া আসিয়াছি, বর্ষার পূর্বেই টেকসই বাঁধ নির্মাণ করিতে হইবে। তবে বর্তমান ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে যেই দুর্ভোগের উদ্ভব, উহা হইতে তাৎক্ষণিক মানুষের মুক্তিও জরুরি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাবাসীকে আশ্রয়কেন্দ্রে গমন বিষয়ে সচেতন করিতে হইবে। 

আমরা জানি, উপকূলীয় অঞ্চলের অধিবাসীরা বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ নানা প্রকার দুর্যোগ মোকাবিলা করিয়া জীবন ধারণ করিয়া থাকেন। সরকার তাহাদের স্বস্তির বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে অনেক সময় উহা প্রতিপালিত হয় না। আমরা মনে করি, সংগ্রামী এই সকল মানুষের পাশে সরকারকে দাঁড়াইতেই হইবে। তাহাদের জন্য টেকসই বাঁধ নির্মাণ, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আবাসন নিশ্চিতকরণ এবং প্রয়োজনে তথাকার মানুষদের অধিক হারে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় লইতে হইবে। 
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র বন য ট কসই

এছাড়াও পড়ুন:

জকসুসহ তিন দফা দাবি মেনে নিল প্রশাসন, ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও সম্পূরক বৃত্তিসহ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসনের আশ্বাসে ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভেঙে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

বুধবার রাত দশটার দিকে প্রশাসনের পক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় অনশনরত শিক্ষার্থীদের ফলের রস খাইয়ে অনশন ভাঙানো হয়। শিক্ষার্থীদের অনশন ভঙ্গ করান করান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক ও সিন্ডিকেট সদস্য বিলাল হোসাইন।

এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক শেখ গিয়াসউদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আগামী ২৭ নভেম্বর জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই মোতাবেক নির্বাচনের রূপরেখাও ঘোষণা করা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আগামী জানুয়ারি থেকে আবাসন ভাতা পাবেন শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে বৃত্তির জন্য উপযুক্ত শিক্ষার্থীদের নভেম্বরের মধ্যে যাচাই-বাছাই করার কাজ শেষ করা হবে।

অনশনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে প্রক্টর মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী ২৭ নভেম্বরের আগেই কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপন করা হবে। ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের মানোন্নয়নে প্রশাসন কাজ করবে।

আরও পড়ুনতিন দাবিতে ২৪ ঘণ্টা ধরে ৪ শিক্ষার্থীর অনশন, দুজন অসুস্থ১২ ঘণ্টা আগে

এ সময় অনশনে বসা উদ্ভিদ বিজ্ঞানের বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আবাসন ভাতার জন্য প্রতিশ্রুত সময়ও দিয়েছে প্রশাসন। কেন্দ্রীয় পাঠাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে আমরা অনশন ভেঙে আন্দোলন প্রত্যাহার করেছি।

সতর্ক করে দিয়ে এ কে এম রাকিব আরও বলেন, যদি প্রশাসন ঘোষিত সময়ের মধ্যে আমাদের দাবিগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সমস্ত দায় মাথায় নিয়ে সম্পূর্ণ প্রশাসনকে পদত্যাগ করতে হবে।

এর আগে তিন দফা দাবি আদায়ে গত মঙ্গলবার বেলা দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন চারজন শিক্ষার্থী। সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) পক্ষ থেকে অনশন কর্মসূচি শুরুর কথা জানানো হয়। অনশনে বসা চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন বাগছাসের নেতা।

আরও পড়ুনজকসু নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণা, ভোট ২৭ নভেম্বর২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ