ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বলেছেন, কারও চাপে পড়ে যুদ্ধবিরতির ঘোষণায় রাজি না হয়ে থাকলে লোকসভায় দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিথ্যাবাদী। বলুন, তিনি বারবার অসত্য বলছেন। একই দাবি রাজ্যসভাতেও জানান বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে।

কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলা ও ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে দুই দিনব্যাপী বিশেষ আলোচনায় অংশ নিয়ে লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সভায় জানিয়েছেন, ২২ মিনিটের অভিযান শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পাকিস্তানকে জানিয়ে দেওয়া হয়, সে দেশের সেনাঘাঁটি আক্রমণের লক্ষ্য নয়। ভারত উত্তেজনা ছড়াতে চায় না। কেন ওই বার্তা দেওয়া হয় প্রশ্ন তুলে রাহুল বলেন, ওইভাবে সেনাবাহিনীর হাত পিছমোড়া করে বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। ভারতের যা যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তা ওই কারণে।

রাহুল বলেন, ভারতীয় নেতৃত্বের না ছিল রাজনৈতিক ইচ্ছার জোর, না দেওয়া হয়েছিল সেনাবাহিনীকে ফ্রিহ্যান্ড। ভারতের সমরবিশেষজ্ঞরা সে কথাই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।

কংগ্রেস নেতা রাহুল বলেন, সে কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারবার দাবি করছেন, তিনিই যুদ্ধবিরতিতে দুই দেশকে রাজি করিয়েছেন। তা যদি না হয়ে থাকে, তাহলে এই সভায় দাঁড়িয়ে তিনি (মোদি) বলুন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মিথ্যা কথা বলছেন। তিনি অসত্যবাদী। মিথ্যুক।

লোকসভায় আজ মঙ্গলবার এই আলোচনায় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও অংশ নেন। তিনি বলেন, ভারতের কূটনৈতিক ব্যর্থতা এটাই যে অপারেশন সিঁদুরের পরপরই পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনিরের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে মিলিত হন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

প্রিয়াঙ্কা বলেন, আজ অপারেশন সিঁদুরের সাফল্য নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু কেন পেহেলগাম ঘটল, কাদের ব্যর্থতায়, কারা দায়ী—সে কথা একেবারেই উঠছে না। এটাই দুর্ভাগ্য। পেহেলগামকাণ্ডের পূর্ণ দায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর। অথচ তিনি ইস্তফা দেননি।

আজ এই আলোচনা শুরু হয় রাজ্যসভাতেও। সেখানেও সারা দিন প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত হননি। ডিএমকে নেতা থিরুচি শিবা তাঁর অনুপস্থিতির উল্লেখ করে বলেন, ‘১১ বছরে একবারও তিনি (মোদি) লোকসভা অথবা রাজ্যসভায় কোনো বিতর্কে অংশ নেননি। আমরা আমাদের নেতাকে দেখতে চাই। আমরা চাই, তিনি গণতন্ত্রকে ন্যূনতম মর্যাদা দিয়ে অন্তত সংসদে হাজিরা দিন।’

ডিএমকে নেতা থিরুচি শিবা এই বিতর্কে অংশ নিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতেই এ লড়াই। এ লড়াইয়ের লক্ষ্য সন্ত্রাসবাদের বিনাশ। সরকারকে সতর্ক করে তিনি বলেন, প্রতিশোধ নিতে পাকিস্তানে পানি বন্ধের যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখার যে নির্ণয় করা হয়েছে, তা ভুল।

থিরুচি শিবা বলেন, পাকিস্তান সরকারকে সবক শেখাতে গিয়ে পাকিস্তানের জনগণকে বিরূপ করে তোলা হিতে বিপরীত হবে। পানি বন্ধের সিদ্ধান্ত আরও জঙ্গির জন্ম দেবে। সন্ত্রাসবাদ তাতে আরও বেড়ে যাবে। তাঁর অনুরোধ, সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়া দরকার।

দুই দিনের আলোচনা সভায় একবারের জন্যও প্রধানমন্ত্রী লোকসভায় উপস্থিত ছিলেন না। রাহুলের ভাষণের সময়ও তিনি অনুপস্থিত ছিলেন। সভায় আসেন সন্ধ্যা ছয়টার পর বিতর্কে অংশ নিতে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল কসভ

এছাড়াও পড়ুন:

গাড়িটার জন্য খারাপ লাগছে

আগের পর্বআরও পড়ুনএভাবে অপমান!২১ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ