বন্দুক, মাইন, গ্রেনেডসহ শীর্ষ রোহিঙ্গা ‘ডাকাত’ শফি গ্রেপ্তার
Published: 29th, July 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের তালিকাভুক্ত শীর্ষ রোহিঙ্গা ‘ডাকাত’ মো. শফিকে (২৮) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। এ সময় তাঁর আস্তানা থেকে বন্দুক, মাইন, গুলি ও গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়। শফি টেকনাফের হ্নীলার নয়াপাড়ার ২৬ নম্বর রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে সি ব্লকের দীল মোহাম্মদের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণসহ ২১টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া ২৬ নম্বর রেজিস্টার্ড রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পশ্চিম পাশে হাজির প্রজেক্ট পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, অভিযানস্থল থেকে ১টি ওয়ান শুটারগান, ২টি একনলা বন্দুক, ১টি এলজি, ১০টি অ্যান্টি–পারসোনাল মাইন, ১০টি ডেটোনেটর, ৫০টি তাজা রাইফেলের গুলি, ৫৩টি রাইফেলের খালি কার্তুজ, ৬টি শটগানের খালি কার্তুজ, ৭৬৯ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ (আইস) ও ৩টি গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-১৫ কক্সবাজারের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. কামরুল হাসান বলেন, শীর্ষ ‘ডাকাত’ শফিকে ধরতে এক মাস ধরে গোপনে নজরদারি করছিল র্যাব। অবশেষে গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে পাহাড়ের পাদদেশে ডাকাত শফি ও তাঁর সহযোগীদের অবস্থানের তথ্য পাওয়া যায়। সোমবার রাতে এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের শফি ‘ডাকাতকে’ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন র্যাব সদস্যরা। এ সময় তাঁর সহযোগীরা শফিকে ছিনিয়ে নিতে র্যাবকে লক্ষ্য করে ৪ থেকে ৫টি গুলি চালায়। তৎক্ষণাৎ র্যাব সদস্যরাও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা ৩টি গুলি ছোড়েন।
র্যাব অধিনায়ক বলেন, শফির নামে ২টি হত্যা, ২টি ডাকাতির প্রস্তুতি, ৬টি অস্ত্র মামলাসহ মোট ২১টি মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির এলাকায় ডাকাত দলের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
র্যাব-১৫ কক্সবাজারের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. কামরুল হাসান বলেন, গ্রেপ্তার মো. শফি ওরফে ডাকাত শফিকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য টেকনাফ থানা-পুলিশে হস্তান্তর করা হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫