দেশের যে ১০ রপ্তানি পণ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক দিতে হবে
Published: 4th, August 2025 GMT
৭ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক কার্যকর হচ্ছে। বাংলাদেশের পণ্যে এই শুল্কহার কমে এখন গড়ে ২০ শতাংশ হয়েছে। দেশটিতে এত দিন বাংলাদেশি পণ্যে কার্যকর গড় শুল্কহার ছিল ১৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের পণ্যে কার্যকর গড় শুল্ক দাঁড়াতে পারে ৩৫ শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন ও ট্যারিফ শিডিউল অনুযায়ী, গত বছর দেশটিতে ৮ ডিজিটের ১ হাজার ২০৪টি এইচএস কোডের (পণ্য চিহ্নিতকরণের কোড) পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। পণ্যভেদে শুল্কহার ছিল সর্বনিম্ন শূন্য থেকে সর্বোচ্চ ৩৫০ শতাংশ।
পাল্টা শুল্ক যুক্ত হলে বাংলাদেশের পণ্যে শুল্কহার বাড়বে। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রথম আলো বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া ১০টি পণ্য শনাক্ত করেছে, যেগুলোতে সবচেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হবে।
১.
তামাক পণ্য: মার্কিন বাণিজ্য কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে সবচেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হয় প্রক্রিয়াজাত তামাক পণ্যে। যুক্তরাষ্ট্র এই পণ্য থেকে ৩৫০ শতাংশ শুল্ক আদায় করে। এখন নতুন করে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক যুক্ত হলে তা বেড়ে দাঁড়াবে ৩৭০ শতাংশে; অর্থাৎ প্রতি ১০০ মার্কিন ডলার মূল্যের তামাক পণ্যে শুল্ক দিতে হবে ৩৭০ ডলার। তবে বাংলাদেশ থেকে পণ্যটি খুবই কম পরিমাণে রপ্তানি হয়। যেমন বাংলাদেশ গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৭৪ হাজার ডলারের তামাকজাত পণ্য রপ্তানি করেছে।
২. চামড়াবিহীন বিশেষ জুতা: দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শুল্কের মধ্যে রয়েছে দুই ধরনের পণ্য। পণ্য দুটি হলো রাবার ও কাপড়ের উপাদান দিয়ে তৈরি জুতা। প্রতি জোড়ার দাম তিন থেকে সাড়ে ছয় ডলারের মধ্যে। গত বছর এই পণ্য দুটি থেকে গড়ে ৫৫ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করেছে দেশটি। নতুন করে পাল্টা শুল্ক যুক্ত হলে মোট শুল্কহার দাঁড়াবে ৭৫ শতাংশ। গত বছর বাংলাদেশ এই দুই শ্রেণির ৭৪ হাজার ডলারের জুতা রপ্তানি করেছে।
৩. কম দামি চামড়াবিহীন জুতা: প্রায় একই ধরনের চামড়াবিহীন জুতা, যেগুলোর মূল্য প্রতি জোড়া তিন ডলারের কম। যুক্তরাষ্ট্রের এই ক্যাটাগরির জুতা আমদানিতে ৪৮ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করে। এই পণ্যে নতুন শুল্কহার দাঁড়াবে ৬৮ শতাংশ।
৪. পানিরোধী প্লাস্টিক বা রাবারের জুতা: এ ধরনের ছয় ক্যাটাগরির জুতায় যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্ক সাড়ে ৩৭ শতাংশ। পাল্টা শুল্ক যুক্ত হওয়ার পর তা দাঁড়াবে সাড়ে ৫৭ শতাংশ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে এই ছয় শ্রেণির ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ডলারের জুতা রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ।
পরিমাণে কম হলেও বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চ শুল্কের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। তবে পাল্টা শুল্ক যুক্ত হয়ে খরচ বাড়লেও খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ, বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোতে বাংলাদেশের কাছাকাছি শুল্কহার রয়েছে।—এস এম আবু তৈয়ব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাপারেলস।৫. কৃত্রিম তন্তুর টি–শার্ট, শার্ট, সোয়েটার: কৃত্রিম তন্তু দিয়ে বানানো সাত ধরনের পোশাক পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি শুল্কহার ৩২ শতাংশ। পাল্টা শুল্কে বাংলাদেশের এসব পণ্য মোট শুল্ক প্রযোজ্য হবে ৫২ শতাংশ। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে এই সাত ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে ২৩ কোটি ৮৪ লাখ ডলারের।
৬. কৃত্রিম চামড়ার জুতা: প্রতি জোড়ার দাম সাড়ে ৬ থেকে ১২ ডলার। এমন জুতা এই শ্রেণিতে পড়ে। প্রতি জোড়া জুতায় ৯০ সেন্ট এবং মূল্যের ওপর ২০ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করে যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর এ ধরনের জুতা থেকে গড়ে সর্বোচ্চ ৫১ শতাংশ শুল্ক আদায় করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বাংলাদেশের রপ্তানি করেছে ৪ লাখ ৯০ হাজার ডলারের জুতা।
৭. শিশুদের কৃত্রিম তন্তুর সোয়েটার: যুক্তরাষ্ট্রে এই পণ্য আমদানিতে শুল্কহার ৩০ শতাংশ। ৭ আগস্ট থেকে বাংলাদেশের এই পণ্যে শুল্ক আদায় হবে ৫০ শতাংশ। গত বছর এই পণ্য রপ্তানি হয় সাড়ে পাঁচ লাখ ডলারের।
৮. নারী ও শিশুদের কৃত্রিম তন্তুর সোয়েটার–আউটওয়্যার: মোট ছয় ধরনের পণ্যে শুল্কহার ২৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। সামনে দিতে হবে ৪৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। গত বছর এ ধরনের পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের।
৯. স্কি স্যুট, ব্লেজার, জ্যাকেট, ট্রাকস্যুট: কৃত্রিম তন্তুর ১৩ ধরনের পোশাক পণ্যের প্রতিটিতে ২৮ দশমিক ২০ শতাংশ হারে শুল্ক আদায় করে যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশের এসব পণ্যে শুল্ক দিতে হবে ৪৮ দশমিক ২০ শতাংশ। গত বছর এসব পণ্যের রপ্তানি ছিল ১৭ কোটি ডলার।
১০. ছেলেদের কৃত্রিম তন্তুর প্যান্ট, মেয়েদের স্যুট: প্রায় ২৮ শতাংশ শুল্কহারে এই শ্রেণিতে ১৪ ধরনের পোশাক পণ্য রয়েছে। এগুলোতে সব মিলিয়ে শুল্ক–কর দিতে হবে প্রায় ৪৮ শতাংশ। গত বছর এসব পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ৩৫ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের।
যুক্তরাষ্ট্রের হিসাবে, গত বছর দেশটিতে মোট ৮৪৪ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। তবে উচ্চ শুল্ক রয়েছে, এমন পণ্যের রপ্তানির পরিমাণ কম। নতুন পাল্টা শুল্ক যুক্ত হলেও খুব বেশি প্রভাব পড়বে না বলে মনে করেন দেশের রপ্তানিকারকেরা।
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের ইন্ডিপেন্ডেন্ট অ্যাপারেলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, পরিমাণে কম হলেও বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শুল্কের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে। পাল্টা শুল্ক যুক্ত হয়ে খরচ বাড়লেও খুব বেশি প্রভাব পড়বে না। কারণ, বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশগুলোতে বাংলাদেশের কাছাকাছি শুল্কহার রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল ক য ক ত হল র য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র ধরন র প ক র যকর গত বছর পর ম ণ আমদ ন দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট