জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ ও বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ শোভাযাত্রা করেছে। দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর শাহবাগ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত একটি বিজয় শোভাযাত্রা বের করে সংগঠন দুটি। পরে শহীদ মিনারে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় বক্তারা ফ্যাসিবাদ বিলোপ, নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং ‘জুলাই বিপ্লবের' দাবিকৃত লক্ষ্য বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।

জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন সভায় সভাপতিত্ব করেন। বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক সাইয়েদ কুতুব, সহকারী সদস্য সচিব গালিব ইহসান, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ, সহকারী সদস্য সচিব জিহাদী ইহসান এবং অন্যান্য নেতারা। সভা সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ফজলুর রহমান।

সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামসুদ্দীন বলেন, “৫ আগস্ট কোনো সমন্বয়কের ডাকে নয় বরং জনগণের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা থেকেই বিপ্লব সংঘটিত হয়েছিল। কিন্তু এখনো যারা আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে, তারা দণ্ডিত হয়নি। তাদের বিচার না হলে এটি শহীদদের সঙ্গে প্রতারণা।”

তিনি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তার ও বিচার এবং সাবেক সরকারদলীয় মন্ত্রী-মেয়রদের গণহত্যার দায়ে শাস্তির দাবি জানান।

সাইয়েদ কুতুব বলেন, “জুলাই বিপ্লবের শহীদদের মরদেহ আজও রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়নি। কিছু কুচক্রি মহল বিপ্লবকে বেহাত করে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে।”

বক্তারা বলেন, “বিপ্লব সফল করতে হলে ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের সহযোগীদের নিষিদ্ধ করতে হবে। তাদের দাবি, সংবিধান বাতিল করে গণপরিষদ নির্বাচন দিয়ে একটি নতুন জনগণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে।”

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, “৫ আগস্টের বিপ্লব ৮ আগস্ট থেকেই আপসের শিকার হয়েছে। আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কোনো আপস সমর্থন করি না। এই সরকার শহীদদের সম্মান দেয়নি।”

জিহাদী ইহসান অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার একটি গৃহপালিত অন্তর্বর্তীকালীন কাঠামো তৈরি করে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে প্রতারণা করছে।

শোভাযাত্রা ও সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় বিপ্লবী পরিষদের নেতা তপু তৌহিদ, হাবিবুল্লাহ মারজান, নাইম আব্দুল্লাহ, সাইদুর রহমান, বায়েজিদ বোস্তামী, ওয়াসিম আহমেদ, আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ, হারুনর রশীদ এবং বিপ্লবী ছাত্র পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক সানোয়ারা খাতুন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক মো.

আরিফুল ইসলাম ও মাদ্রাসা-ই-আলিয়া শাখার আহ্বায়ক রাকিব মণ্ডল প্রমুখ।

ঢাকা/এএএম/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র সদস য আগস ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে 

বাংলাদেশে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে দিয়ে দেশে বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থার প্রতিফলন দেখা গেছে।

বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, সম্প্রতি যেসব দেশে গণঅভ্যুত্থান ঘটেছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কায় ২০২২ সালের পর এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে ২০১৯ সালের পর কমেছে ১৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে ২০২১ সালের পর ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে ২০১৪ সালের পর ৮১.২১ শতাংশ, মিশরে ২০১১ সালের পর ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় ১৯৯৮ সালের পর ১৫১.৪৯ শতাংশ কমেছে। এই ধারাবাহিক হ্রাসের মধ্যে বাংলাদেশে এফডিআইর ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধির চিত্র বিশেষভাবে নজরকাড়া।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেছেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো—শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও অর্থনীতিকে পুনরায় চালু করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এই পরিসংখ্যান তার দারুন একটা প্রতিফলন। সাধারণত, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বিদেশি বিনিয়োগ কমে যায়, কিন্তু আমরা উল্টা দেখছি। সঠিক নীতি নির্ধারণ, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার আন্তরিকতা এবং প্রাইভেট সেক্টরের অদম্য স্পৃহা কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান হয়নি, তবে সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। শিগগিই সারা বছরের একটি আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করা হবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে বিদেশি বিনিয়োগ ছিল ৪৮৮ দশমিক ৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৭০ দশমিক ৭ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৩ সালে বিনিয়োগের পরিমাণ হয় ৯২৪ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার, তবে ২০২৪ সালে কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬৭৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলারে। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে বিদেশি বিনিয়োগ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯২ দশমিক ৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এই ধারা বজায় থাকা অত্যন্ত ইতিবাচক। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, দীর্ঘমেয়াদি নীতি সহায়তা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ভবিষ্যতে আরো বড় পরিসরে বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে বলে মনে করছেন তারা।

ঢাকা/নাজমুল/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে