আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আবু সাঈদ হত্যার বিচার শুরু
Published: 6th, August 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ আজ বুধবার এই আদেশের মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারকাজ শুরু করেন।
গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এই মামলায় অভিযোগ গঠনের আরজি পেশ করে শুনানি করেন।
অন্যদিকে এই মামলায় যাঁদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ আনা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে গ্রেপ্তার ছয়জন আজ ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো.
গত ৩০ জুন আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়লে গত বছরের ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে শহীদ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কও ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি চলাকালে আবু সাঈদকে পুলিশ গুলি করছে—সেই দৃশ্য দেশের টিভি চ্যানেলগুলো সরাসরি সম্প্রচার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে। এতে সারা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় এবং ছাত্র-জনতা প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয় এবং জনসম্পৃক্ততা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘হাসিনার পদত্যাগ’ এক দফা দাবিতে ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমন করতে আওয়ামী লীগ সরকার, দলীয় ক্যাডার, অনুগত প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি অংশ গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছে—এমন অভিযোগ একের পর এক জমা পড়ে। এই অপরাধগুলোর বিচার এখন চলছে দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।
আরও পড়ুনআবু সাঈদ হত্যা: ‘ঘটনাস্থলে ছিলেন না’ দাবি করে দুই আসামির অব্যাহতির আবেদন২৯ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘আমরা ক্রিকেটের অনুসারী নই’—পাকিস্তানের সঙ্গে হাত মেলাতে বাধা দেবে না হকি ইন্ডিয়া
ভারতের হকির সর্বোচ্চ সংস্থা হকি ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচে পাকিস্তানের খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলানোয় নিজেদের খেলোয়াড়দের বাধা দেওয়া হবে না। ক্রিকেট কী করছে বা কী সিদ্ধান্ত নেবে, সেটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। হকি ইন্ডিয়া খেলাধুলার মূল্যবোধ মেনেই চলবে।
গত মাসে মালয়েশিয়ায় সুলতান অব জোহর কাপে ভারত–পাকিস্তান ম্যাচে খেলোয়াড়দের করমর্দন নিয়ে ভারতে তুমুল বিতর্ক হয়েছিল। সেই প্রসঙ্গেই কথা বলেছেন হকি ইন্ডিয়ার সচিব ভোলা নাথ সিং।
তার আগেই সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপ ক্রিকেটে ভারতের খেলোয়াড়েরা পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাননি। গত মাসে আইসিসি নারী বিশ্বকাপেও একই ঘটনা ঘটেছে—ম্যাচ শেষে পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাত মেলানো থেকে বিরত ছিলেন ভারতীয়রা।
এ প্রেক্ষাপটে ভোলা নাথ সিং টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘আমরা ক্রিকেটের অনুসারী নই। ক্রিকেটাররা যা করেছে, সেটা তাদের পছন্দ। আমরা অলিম্পিক চার্টার ও এফআইএইচের (আন্তর্জাতিক হকি ফেডারেশন) নির্দেশনা মেনে চলি। হকি ইন্ডিয়ার পক্ষ থেকে কখনো করমর্দন বা হাই-ফাইভ এড়িয়ে চলার নির্দেশ দেওয়া হয়নি।’
অক্টোবরে সুলতান অব জোহর কাপে মুখোমুখি হয় ভারত–পাকিস্তান