সন্তান ধারণ ও নারীদেহের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সরাসরি হরমোনের সঙ্গে সম্পর্কিত।জন্মনিয়ন্ত্রণ পিলে থাকে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোন। তাই বুঝতেই পারছেন, জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সাদামাটা কোনো ওষুধ নয়। পিল গ্রহণের কারণে বেশ কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার কিছু রোগের চিকিৎসায়ও পিল ব্যবহার করা হয়। কেবল জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য নয়, কিছু রোগের উপসর্গ প্রশমন করতেও কাজে আসে এসব পিল। কিন্তু অনেকেরই প্রশ্ন, হঠাৎ পিল খাওয়া ছেড়ে দিলে তখন দেহে কি কোনো ধরনের পরিবর্তন হতে পারে?

অনিয়মিত মাসিক
পিল ছেড়ে দিলে মাসিকের স্বাভাবিক চক্রে কিছুটা পরিবর্তন আসে। তাই মাসিক হতে পারে অনিয়মিত। হতে পারে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ কিংবা তলপেটে ব্যথা। কয়েক মাসের মধ্যে এসব সমস্যা সেরেও যায়। তবে রক্তক্ষরণ বেশি হলে কিংবা পেটব্যথা খুব তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া ভালো। এসব উপসর্গের পেছনে অন্য কোনো কারণ দায়ী হলে, তা নির্ণয় করতে পারবেন তিনি।

মনমেজাজে বদল
মনের ওপর হরমোনের বিস্তর প্রভাব। তাই পিল ছেড়ে দিলে হুট করে মেজাজের ধরন কিছুটা বদলাতে পারে। বিশেষ করে মাসিক শুরু হওয়ার আগের কয়েকটা দিন বাড়তি দুশ্চিন্তা, অবসন্নতা বা বিরক্তি অনুভূত হতে পারে।

ওজন কমে যাওয়া
জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত কিছু পিল ওজন বাড়ার জন্য দায়ী। এসব পিল ছেড়ে দিলে তাই স্বাভাবিকভাবেই ওজন কিছুটা কমে। তবে না চাইতেই খুব বেশি ওজন কমলে বিষয়টিকে আবার স্বাভাবিক ধরে নেওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।

মাথাব্যথা
হরমোনের আধিক্যে কারও কারও মাথাব্যথা করে। কেউ কেউ আবার হরমোনের ঘাটতি হলে মাথাব্যথায় ভোগেন। তাই পিল খাওয়া শুরু করার পর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে যাঁদের মাথাব্যথা হতো, পিল ছেড়ে দেওয়ার পর তাঁরা মাথাব্যথায় কম ভোগেন। আর পিল শুরু করার পর যাঁদের মাথাব্যথা কমেছিল, পিল ছেড়ে দিলে তাঁরা মাথাব্যথায় বেশি ভুগতে পারেন।

আরও পড়ুনজন্মনিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে যা জানা উচিত৩১ মে ২০২২

আরও যা হতে পারে

পিল ছেড়ে দেওয়ার পর অন্য কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করা না হলে ৮৫ শতাংশ নারীর এক বছরের মধ্যে সন্তান ধারণের সম্ভাবনা থাকে।

পিল শুরুর পর অনেকের ব্রণের সমস্যা কমে যায়। পিল ছেড়ে দিলে ব্রণ ফিরে আসতে পারে।

পিল শুরুর পর কারও দেখা দেয় বমি বমি ভাব, কারও হয় স্তনে ব্যথা। পিল ছেড়ে দিলে এসব সমস্যা সেরে যায়।

পিল ছেড়ে দেওয়ার পর সবার দেহে যে একই ধরনের প্রভাব দেখা দেবে, তা নয়। কার দেহে ঠিক কী ধরনের প্রভাব পড়বে, তা নির্ভর করে তিনি কত দিন ধরে কোন মাত্রার পিল গ্রহণ করেছেন, তার ওপর।
সূত্র: ওয়েবএমডি

আরও পড়ুনযেভাবে ডিম খেলে মিলবে সবচেয়ে বেশি আমিষ১০ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: হরম ন র র র পর

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই

শুরুতে উদাহরণ হিসেবে যেসব লক্ষণের কথা জানলেন, ব্রেন ক্যানসারের মতো মারাত্মক রোগের শুরুতে একই রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে। তবে সমস্যা হলো, এসব লক্ষণ আর সাধারণ মাথাব্যথা বা ক্লান্তির মধ্যে পার্থক্য বোঝা সত্যিই কঠিন।

দীর্ঘদিন ব্রেন ক্যানসার নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের লরা স্ট্যান্ডেন। এই রোগে আক্রান্ত অনেক রোগীর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার হয়েছে—রোগীরা নিজেরা প্রথম দিকে এসব উপসর্গকে গুরুত্ব দেননি।
এমনকি চিকিৎসকেরাও অনেক সময় ব্যাপারটা হালকাভাবে নিয়েছেন। ফলে রোগ শনাক্ত হতে দেরি হয়ে গেছে।

আর এই দেরি কিন্তু মারাত্মক। কারণ, ক্যানসার যত দেরিতে ধরা পড়ে, চিকিৎসাও তত জটিল ও কষ্টসাধ্য হয়ে ওঠে।

আসল সমস্যা হলো মস্তিষ্কের ক্যানসারের উপসর্গ অনেকটা আমাদের দৈনন্দিন সমস্যার মতোই। ক্লান্তি, মানসিক চাপ, মাইগ্রেন, এমনকি মেনোপজের সময়ের সমস্যার সঙ্গেও এর মিল আছে।

আবার অনেক সাধারণ রোগের লক্ষণও প্রায় একই রকম। যেমন দুশ্চিন্তা, সাইনাসের সমস্যা বা দীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা।

যখন লক্ষণগুলো অস্পষ্ট আর হালকা থাকে, তখন সেসব উপেক্ষা করা সহজ হয়ে যায়। নিজের মনেই নানা যুক্তি খুঁজে নিই আমরা। তাই অনেকে অপেক্ষা করেন আর ভাবেন, দেখা যাক, সমস্যাটা কত দূর গড়ায়।

অনেকে ব্রেন ক্যানসার হওয়ার দুই-তিন মাস আগে থেকেই লক্ষণ টের পান। কিন্তু সাধারণ সমস্যা ভেবে তা উড়িয়ে দেন। এতে সমস্যা আরও জটিল হয়ে যায়।

এবার জেনে নিই সেই ৭টি সমস্যা সম্পর্কে, যেসব আমরা সাধারণ সমস্যা ভেবে উপেক্ষা করি। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, এসব লক্ষণের মধ্যে একটা বা দুটো থাকলেই যে কারও ব্রেন ক্যানসার হয়েছে, তা কিন্তু নয়। তবে কোনো সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে থাকলে কিংবা একদম অস্বাভাবিক মনে হলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত।

আরও পড়ুনরাতের এই অভ্যাসের কারণে মস্তিষ্ক যেভাবে দ্রুত বুড়িয়ে যায়১১ নভেম্বর ২০২৪১. কথা খুঁজে না পাওয়া

অনেকে হঠাৎ করে নির্দিষ্ট শব্দ মনে করতে পারেন না। পুরো বাক্য বলতে গেলে আটকে যান। কথোপকথনে অংশ নিতে গেলে একটু দেরি হয়।

শব্দ খুঁজে না পাওয়ার সমস্যা অবশ্য ক্লান্তি, মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার কারণেও হতে পারে। কিন্তু যদি এই সমস্যা দীর্ঘদিন থাকে, কিংবা হঠাৎ করে শুরু হয়, তাহলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার।

২. মানসিক ধোঁয়াশা

অনেকের মনে হয়, যেন মাথার ভেতর কুয়াশা জমে আছে। মনোযোগ দিতে পারছেন না, পরিষ্কার করে ভাবতে পারছেন না, কিছু মনে থাকছে না। ফলে রোগ ধরা পড়তে আরও দেরি হয়ে যায়।

এই মাথার ঘোলাটে ভাব অবশ্য অনেক কারণেই হতে পারে। মেনোপজ, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া কিংবা মানসিক চাপ। কিন্তু যদি এই ঘোলাটে ভাবের সঙ্গে আরও কিছু স্নায়বিক সমস্যা দেখা দেয়, যেমন কথা বলতে বা দেখতে সমস্যা হয়, তাহলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তনও ব্রেন ক্যানসারের একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রেন ক্যানসারের যে ৭টি লক্ষণ আমরা সাধারণ ভেবে এড়িয়ে যাই
  • সবজি দেখলেই ভয় পান? তাহলে আপনারও আছে ল্যাকানোফোবিয়া
  • চট্টগ্রামে বছর শেষে বাড়ছে ডেঙ্গু, কমেছে চিকুনগুনিয়া