বাংলা লোকগানের রিয়েলিটি শো ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’ শুরু হচ্ছে আবার
Published: 7th, August 2025 GMT
লোকসংগীত আবহমান বাংলাদেশের সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। লোকসংগীতের সুরের মূর্ছনায় জীবন্ত হয়ে ওঠে বাংলার প্রকৃতি ও মানুষের আবেগ। বর্তমান প্রজন্মের কাছে এবং সারা বিশ্বে বাংলার বাউলসংগীতকে পৌঁছে দিতে মাছরাঙা টেলিভিশনে পঞ্চমবারের মতো শুরু হচ্ছে লোকসংগীতের রিয়েলিটি শো ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা ২০২৫’। ‘বাউল সুরে দেখাও তোমার ম্যাজিক’ স্লোগান নিয়ে সান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ও স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ওরাল কেয়ার ব্র্যান্ড ম্যাজিকের পৃষ্ঠপোষকতায় আয়োজনটির উদ্দেশ্য ঐতিহ্যবাহী লোকগানের এই আবেদনকে বিশ্বদরবারে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব তথ্য জানিয়েছেন ‘ম্যাজিক বাউলিয়ানা’র আয়োজকেরা।
লোকগানের সম্ভাবনাময় শিল্পীদের খুঁজে বের করতে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করা এই প্রতিযোগিতা আজ আর কেবল একটি রিয়েলিটি শো নয়, হয়ে উঠেছে বাংলা লোকসংগীতের জাগরণের এক নির্ভরযোগ্য মঞ্চ, যা ছড়িয়ে পড়েছে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও।
বিচারক প্যানেলে তিন ঘরানার তিনজন
এবারের আয়োজনে বিচারক হিসেবে থাকছেন লোকসংগীতের শক্তিশালী কণ্ঠ শফি মণ্ডল, আধুনিক ও ব্যান্ড সংগীতের জনপ্রিয় গায়ক পার্থ বড়ুয়া এবং ফিউশন ও সমকালীন ধারার শক্তিমান শিল্পী নিগার সুলতানা সুমি। ভিন্ন ভিন্ন ঘরানার এই তিন বিচারক প্রতিযোগীদের মূল্যায়নে আনবেন নতুন গভীরতা ও ভারসাম্য। শফি মণ্ডল থাকবেন বাউল ও মারফতি ঘরানার প্রতিনিধি হিসেবে, পার্থ বড়ুয়া আধুনিক ও মঞ্চমুখী সংগীতের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উপস্থিত হবেন, আর সুমি তুলে ধরবেন ফিউশন ও নতুন ধারার উপস্থাপনশৈলী।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতে থাকা লালনের গানের পাণ্ডুলিপি ফেরত চাইলেন কুষ্টিয়ার ডিসি
কুষ্টিয়ার আশ্রম থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ভারতের কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ঐতিহাসিক সেই গানের পাণ্ডুলিপি বর্তমানে দেশটির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ভোলপুর শহরে অবস্থিত শান্তি নিকেতন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার দাবি জানাচ্ছিলেন লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও গবেষকরা। তবে তা ফেরত পাওয়া যায়নি।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন একাডেমিতে পাণ্ডুলিপিগুলো ফেরত চেয়েছেন। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন দিয়েছেন তিনি। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) এ আবেদন পাঠানো হয়েছে।
লিখিত আবেদনে ডিসি উল্লেখ করেছেন, কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন আশ্রম থেকে লালন শাহের গানের একটি খাতা কলকাতায় নিয়ে গিয়েছিলেন কুষ্টিয়ার শিলাইদহের তৎকালীন জমিদার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যা বর্তমানে শান্তি নিকেতনে সংরক্ষিত আছে। প্রায় ১৩৫ বছরের পুরোনো উক্ত খাতায় লালন শাহের ৩১৪টি গান রয়েছে। ইতোপূর্বে শান্তি নিকেতন থেকে লালন শাহের গানের পাণ্ডুলিপির একটি অনুলিপি প্রেরণ করা হলেও, মূল পাণ্ডুলিপি সেখানেই রয়ে গেছে।
প্রতি বছর লালন তিরোধান দিবস ও লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে লক্ষ লক্ষ দেশ-বিদেশি লালন ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের আগমন ঘটে। তাদের সবার পক্ষ থেকে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত আনার দাবি উঠেছে। তদুপরি সরকার ১৭ অক্টোবর লালন তিরোধান দিবসকে ‘ক’ শ্রেণির দিবস হিসেবে ঘোষণা এবং জাতীয়ভাবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় লালন তিরোধান দিবসের গুরুত্ব আরো বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও লালন গবেষকদের দাবির প্রেক্ষিতে লালন গবেষণার কাজে ব্যবহারের জন্য ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে সংগ্রহ করে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
এমতাবস্থায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের গানের মূল পাণ্ডুলিপি শান্তি নিকেতন থেকে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়াস্থ লালন একাডেমিতে ফেরত এনে সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, “লালনের ৩১৪টি গানের মূল পাণ্ডুলিপি ফেরত আনার জন্য আমরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছি। আমরা কলকাতা থেকে সেগুলো দ্রুত কুষ্টিয়ায় ফেরত আনতে চাই। এ জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।”
ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ