পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনের আগে ‘অনুপ্রবেশ’কে হাতিয়ার করতে চাইছেন মোদি
Published: 15th, August 2025 GMT
ভারতে অনুপ্রবেশের বিপদ থেকে দেশকে বাঁচাতে উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্রীয় বিজেপি সরকার। গঠন করা হবে ‘জনসংখ্যা মিশন’। আজ শুক্রবার সকালে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া তাঁর ভাষণে লাল কেল্লা থেকে এই ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে দেশের জনবিন্যাস বা “ডেমোগ্রাফি” বদলানোর ষড়যন্ত্র চলেছে। সীমান্তপারের অনুপ্রবেশকারীরা আমাদের দেশের মানুষদের রুজি রোজগার কেড়ে নিচ্ছে। মা–বোনদের নিশানা করছে। আদিবাসীদের ভুলপথে চালিত করে তাদের জমি জায়গা দখল করছে। এ জিনিস আর বরদাশত করা হবে না।’
এ কথা বলে মোদি জানান, এই ভয়ংকর বিপদের মোকাবিলা করতে এক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন জনবিন্যাস মিশন বা ডেমোগ্রাফিক মিশন গঠন করা হবে। শুরু করা হবে জনবিন্যাস অভিযান। অনুপ্রবেশকারীদের কবল থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।
প্রতিবছর স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী লাল কেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তারপর সেখান থেকে ভাষণ দেন। আজ শুক্রবার সেই ভাষণেই তিনি অনুপ্রবেশ সমস্যার ওপর জোর দেন। পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রতি তাঁর দল বিজেপি ‘বাংলাদেশে থেকে অবৈধভাবে প্রবেশ করা’ মানুষদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা ‘বাংলাভাষী অনুপ্রবেশকারীদের’ বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান চালানো হচ্ছে।
কথিত বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা সন্দেহে সাধারণ বাংলাভাষী মানুষদেরও জবরদস্তি সীমান্তে নিয়ে গিয়ে বাংলাদেশ ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। বহু ভারতীয় বাংলাভাষী মুসলিমকেও এই অভিযানের ফলে হয়রান ও হেনস্তা হতে হচ্ছে। জনবিন্যাস কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে এই ‘ষড়যন্ত্র’ রোখার ঘোষণা করে মোদি বোঝালেন, আগামী দিনে এটা হতে চলেছে তাঁর সরকারের রাজনৈতিক হাতিয়ার। বিশেষ করে তাঁর নজরে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, যেখানে আগামী বছর বিধানসভার ভোট।
অনুপ্রবেশ ‘নতুন সমস্যার বীজ’ জানিয়ে মোদি বলেন, ‘এটা জাতীয় নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক। এর মধ্য দিয়ে সংঘর্ষের বীজ বোনা হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীদের সামনে কোনো দেশ মাথা নত করতে পারে না। পূর্বপুরুষেরা আমাদের স্বাধীনতা উপহার দিয়েছেন। অনুপ্রবেশকারীদের রুখে সেই স্বাধীনতা আমরা রক্ষা করব। এই কর্তব্য আমাদেরই পালন করতে হবে। জনবিন্যাস মিশন কীভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী অবশ্য বিস্তারিতভাবে কিছু জানাননি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক
রাজধানীর মিরপুর থানায় দায়ের করা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে হত্যা মামলায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে উপজেলা বিএনপি এবং সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় উপজেলার কোদালপুর বাজার থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে বাজার প্রদক্ষিণ করে কোদালপুর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে এক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
আরো পড়ুন:
জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে বিক্ষোভ
খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা বহাল, ২ মহাসড়কে অবরোধ শিথিল
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার মিরপুর থানায় ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে প্রধান আসামি করে গণঅভ্যুত্থানে নিহতের ঘটনায় হত্যা মামলা করা হয়। মামলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীর নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অবিলম্বে মামলা থেকে নিরপরাধ বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
গোসাইরহাট উপজেলা বিএনপির সদস্য তারেক আজিজ মোবারক ঢালী বলেন, ‘‘যেসব বিএনপি নেতাকর্মীর নাম মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তারা সকলে বিগত দিনে স্বৈরাচারি হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে আমার সঙ্গে কাজ করেছেন। তাদের ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা চাই অবিলম্বে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হোক।’’
কোদালপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম সালু মৃধা বলেন, ‘‘বিগত দিনে বিএনপি করার কারণে আমরা মামলা খেয়েছি, জেল খেটেছি, হামলার শিকার হয়েছি। এখন আবার আমাদের নাম একই মামলায় জড়ানো হয়েছে। এটি ঘৃণিত ষড়যন্ত্র, এর সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।’’
ভুক্তভোগী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সুমন মৃধা বলেন, ‘‘আমি বিগত দিনে ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলাম। এমনকি, জুলাই আন্দোলনেও অংশ নিয়েছি। কিন্তু দুঃখের বিষয়, গত ২০ সেপ্টেম্বর আমার নাম মিরপুর থানার মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’’
তিনি এর তীব্র নিন্দা এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে মামলা থেকে তার নাম প্রত্যাহারের দাবি জানান।
ঢাকা/আকাশ/বকুল