লিওনেল মেসি যেন আবারও প্রমাণ করলেন মঞ্চ যেটাই হোক, যত বড়ই হোক; আলো তার চারপাশেই ঘোরে। আর্জেন্টাইন মহাতারকার দুই গোল ও এক অ্যাসিস্টে ইন্টার মায়ামি বাংলাদেশ সময় রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ডি.সি. ইউনাইটেডকে ৩-২ ব্যবধানে হারিয়েছে। এই জয়ে মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) শিরোপার দৌড়ে নিজেদের অবস্থান আরও দৃঢ় করল।
ফোর্ট লডারডেলের চেজ স্টেডিয়ামে ম্যাচের ৩৫ মিনিটে মায়ামিকে এগিয়ে দেন তাদেও অ্যালেন্দে। মেসির নিখুঁত এক উঁচু পাস ডি.
আরো পড়ুন:
মায়ামিতেই থাকছেন মেসি, নতুন চুক্তি চূড়ান্ত
মেসির গোলে, অ্যাসিস্টে মায়ামির জয়
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বেলজিয়ামের সাবেক স্ট্রাইকার ক্রিশ্চিয়ান বেন্টেকে গোল করে সমতায় ফেরান ডি.সি. কে। কিন্তু এরপরই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি নিজের হাতে তুলে নেন মেসি।
৬৬ মিনিটে জর্ডি আলবার পাস দারুণ দক্ষতায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে জালের দূর কোণে বল পাঠান আর্জেন্টাইন জাদুকর। এরপর আসে আসল মাস্টারক্লাস। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের শটে গোলবারের শীর্ষ কোণ খুঁজে নেন তিনি। মায়ামি পায় ৩-১ গোলে নিরাপদ লিড।
৭২ মিনিটে সুযোগ ছিল হ্যাটট্রিকেরও। পেনাল্টি জিতেও স্পট কিকে দাঁড়াননি মেসি। দায়িত্ব দিলেন তরুণ স্বদেশি মাতেও সিলভেত্তিকে। কিন্তু তিনি শট পাঠালেন ক্রসবারে। ইনজুরি টাইমে ডি.সি. ইউনাইটেডের জ্যাকব মুরেল একটি সান্ত্বনার গোল করলেও ম্যাচের ভাগ্য তখন অনেক আগেই নির্ধারিত হয়ে গেছে।
এই জয়ে ইস্টার্ন কনফারেন্স প্লে-অফের লড়াইয়ে আরও শক্ত অবস্থান নিল মায়ামি। পাশাপাশি সাপোর্টার্স শিল্ড রেসেও তারা পিছিয়ে আছে শীর্ষে থাকা ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের চেয়ে মাত্র ৮ পয়েন্ট। হাতে আছে আরও তিনটি ম্যাচ। গত মৌসুমে প্রথমবারের মতো শিরোপা জেতা মায়ামির জন্য তাই আবারও ট্রফি ধরে রাখার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠছে।
মেসির এই জোড়া গোলের সুবাদে তিনি উঠে গেছেন এমএলএসের সর্বোচ্চ গোলদাতার তালিকার শীর্ষে, মোট ২২ গোল তার ঝুলিতে। শুধু তাই নয়, এবার ২২ ম্যাচে গোল করার পাশাপাশি অ্যাসিস্টও করেছেন ১২টি।
কোচ হাভিয়ের মাসচেরানো ম্যাচশেষে প্রশংসায় ভাসান মেসিকে। তিনি বলেন, “লিওর জন্য এ যেন আরেকটা সাধারণ রাত। অথচ অন্য যে কোনো ফুটবলারের জন্য এটি একেবারেই অস্বাভাবিক। যখনই আমাদের দরকার হয়, তখনই সে পুরো দলকে কাঁধে তুলে নেয়। সেটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি, আমাদের দলে মেসি আছে।”
ঢাকা/আমিনুল
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মায়ামিতেই থাকছেন মেসি, নতুন চুক্তি চূড়ান্ত
মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসি যেন থাকছেন আরও কিছুটা সময় আমেরিকায়। বুধবার ইএসপিএনের খবরে জানা গেছে, ইন্টার মায়ামির সঙ্গে কয়েক বছরের নতুন চুক্তির প্রায় শেষ ধাপে পৌঁছে গেছেন আর্জেন্টাইন জাদুকর। শুধু সামান্য কিছু বিষয় গুছিয়ে নিলেই ঘোষণা আসতে পারে। যদিও আর্থিক শর্তাবলীর বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
২০২৩ মৌসুমে ইন্টার মায়ামিতে যোগ দিয়েছিলেন মেসি। বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী ২০২৫ মৌসুমের শেষ পর্যন্ত তাকে পাবে ফ্লোরিডাভিত্তিক এই ক্লাব। তবে নতুন চুক্তি হলে হয়তো আরও দীর্ঘ সময় মায়ামির হয়ে মাঠ মাতাবেন ৩৮ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।
আরো পড়ুন:
মেসির গোলে, অ্যাসিস্টে মায়ামির জয়
মেসির পেনাল্টি মিস, মায়ামির হার
এ মৌসুমেই দুর্দান্ত ছন্দে আছেন তিনি। এমএলএসে ২১ ম্যাচে করেছেন ২০ গোল, যা লিগে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। পাশাপাশি ১১টি অ্যাসিস্টও করেছেন, যা তাকে অ্যাসিস্টের তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে রেখেছে। গত মৌসুমেও ছিলেন সমান উজ্জ্বল। ২০ গোলের সঙ্গে ১৬ অ্যাসিস্ট করে দুই বিভাগেই শীর্ষে জায়গা করে নিয়েছিলেন।
ইন্টার মায়ামির হয়ে এখন পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৪৬ লিগ ম্যাচে করেছেন ৪১ গোল এবং ২৭টি অ্যাসিস্ট। আর সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তার গোল সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৪, খেলেছেন মাত্র ৬২ ম্যাচ। মায়ামির ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতা এবং সর্বোচ্চ অ্যাসিস্টদাতা দুটোই তিনি।
ফুটবলের ইতিহাসে সর্বাধিক ৮ বার ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসি গড়েছেন এক অনন্য সাম্রাজ্য। ২০০৪ থেকে ২০২১ পর্যন্ত বার্সেলোনায় থেকে ১০টি লা লিগা ও ৪টি চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতান তিনি। এরপর পিএসজির হয়ে খেলেন দুই মৌসুম, জেতেন আরও দুটি লিগ ওয়ান শিরোপা। জাতীয় দলের জার্সিতে জিতেছেন ২০২১ ও ২০২৪ সালের কোপা আমেরিকা এবং ২০২২ সালের বিশ্বকাপের গৌরবময় ট্রফি।
এমএলএসে আসার পরপরই ইন্টার মায়ামিকে এনে দেন ২০২৩ সালের লিগস কাপ শিরোপা। তার পরের বছর ২০২৪–এ তারা জেতে সাপোর্টার্স শিল্ড, যদিও প্লে–অফের প্রথম রাউন্ডেই বিদায় নিতে হয়। বর্তমানে ইন্টার মায়ামি এমএলএস ইস্টার্ন কনফারেন্সে ১৪ জয়, ৬ ড্র ও ৭ হারে ৪৯ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে।
আগামী শনিবার ডি.সি. ইউনাইটেডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে নামবে তারা। আর দলটির আস্থার নাম একটাই- লিওনেল মেসি। এখনও যেমন আছেন, তেমনি থাকলে হয়তো মায়ামির আকাশে আরও অনেক দিন উজ্জ্বল হয়ে জ্বলবেন আর্জেন্টিনার ফুটবল রাজপুত্র।
ঢাকা/আমিনুল