সৌদি প্রো লিগের মঞ্চে আবারও রোমাঞ্চের ঝড় তুললেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো ও জোয়াও ফেলিক্স। দু’জনের জোড়া গোলের রাতে আল-নাসর ৫-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিল আল-রিয়াদকে। শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে আল-আওয়াল পার্ক যেন একেবারেই রঙিন হয়ে উঠেছিল হলুদ জার্সিধারীদের দুরন্ত ফুটবলে।

খেলার মাত্র ছয় মিনিটেই আসে প্রথম গোল। বাঁ দিক দিয়ে দৌড়ে উঠে কিংসলে কোমান দারুণ এক নিচু ক্রস বাড়ান। আর ফেলিক্স ঠান্ডা মাথায় বল জালে পাঠান। মুহূর্তেই এগিয়ে যায় আল-নাসর।

আরো পড়ুন:

মেসির জোড়া গোলে মায়ামির জয়

এমবাপ্পের দুর্দান্ত গোলে এস্পানিওলকে হারিয়ে শীর্ষে রিয়াল

অচেনা ছন্দে পড়ে যায় আল-রিয়াদ। বল নিয়ে বের হতে গিয়েই নিজেদের ভুলে আরও বড় বিপদ ডেকে আনে তারা। মাঝমাঠে পাস কেড়ে নেন কোমান। তারপর দুরন্ত গতিতে এগিয়ে গিয়ে গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়ে বল পাঠান জালে। ২-০, আর স্টেডিয়াম তখন উৎসবে মেতে উঠেছে।

আক্রমণের পর আক্রমণ চালাতে থাকল স্বাগতিকরা। এবার ফেলিক্সের চোখধাঁধানো থ্রু পাস ছিঁড়ে ফেলল আল-রিয়াদের রক্ষণভাগ। ঠিক জায়গায় ছিলেন রোনালদো। এক স্পর্শে নিয়ন্ত্রণ, পরের স্পর্শেই বল জালে। ব্যবধান বেড়ে ৩-০। বিরতির আগে অতিথিদের অবস্থা তখন করুণ, বাঁশির অপেক্ষায় প্রার্থনা ছাড়া উপায় নেই।

দ্বিতীয়ার্ধ শুরু হতেই আবারও আঘাত। ৪৮ মিনিটে রোনালদো আলতো একটি চিপড পাস বাড়ান বক্সের ভেতর। ফেলিক্স নিখুঁত নিয়ন্ত্রণে নিয়ে বল জালে পাঠান। নিজের দ্বিতীয় গোল, আর দলের চতুর্থ। যেন রোনালদো–ফেলিক্স জুটি একাই আল-রিয়াদকে গুঁড়িয়ে দিচ্ছিল।

৬২ মিনিটে হেডে গোল করে ব্যবধান কমান আল-রিয়াদের মামাদু সিলা। টেডি ওকোর নিখুঁত ক্রস থেকে পাওয়া সেই গোল আল-রিয়াদকে খানিক আশার আলো দিয়েছিল। কিন্তু সেই আনন্দ স্থায়ী হলো না।

৭৬ মিনিটে কোমানের পাস থেকে আবারও গোল করেন রোনালদো। ড্রপ-বল পরিস্থিতি থেকে বল পান ফেলিক্স, তিনিই সরাসরি বাড়ান কোমানের দিকে। কোমান দারুণ নিয়ন্ত্রণে বল বাড়ান সামনে, আর ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা রোনালদো ট্রেডমার্ক শটে পাঠান জালে। চলতি বছরে এটি ছিল তার ২৯তম গোল। অবিশ্বাস্য এক পরিসংখ্যান, বিশেষত যাকে অনেকে ধরে নিয়েছিলেন ফুরিয়ে গেছেন।

রোনালদোর জোড়া গোল শিরোনাম কাড়লেও এ রাতে সত্যিকারের নায়ক ছিলেন জোয়াও ফেলিক্স। দুই গোল ও এক অ্যাসিস্টের সঙ্গে সৃজনশীলতায় ভরপুর এক পারফরম্যান্সে তিনি হলেন ম্যাচসেরা। চেলসিতে উপেক্ষিত সেই ফরোয়ার্ড যেন রিয়াদে নতুন করে জন্ম নিয়েছেন। রোনালদোর সঙ্গে তার রসায়ন প্রতিপক্ষের জন্য আতঙ্কের হয়ে উঠছে।

সবার রাত সমান উজ্জ্বল হয়নি। সেনেগালের তারকা সাদিও মানে একাধিক সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেননি। গোল করার মতো অবস্থানেও তিনি ছিলেন ছন্দহীন। ফলে হতাশই হতে হলো তাকে। তবে দলের দুর্দান্ত জয় তার ব্যর্থতা আড়াল করে দিয়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল আল র য় দ

এছাড়াও পড়ুন:

মহালয়া উপলক্ষে গঙ্গার ঘাটে তর্পণ, মন্দিরে ভক্তদের ভিড়

পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের শুরু। আজ রবিবার মহালয়া। আর মহালয়া মানেই দুর্গাপুজোর ঢাকে কাঠি পড়া।মহালয়া দুর্গতিনাশিনী দেবী দূর্গার আগমনী বার্তা। মহালয়া মানেই সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে চন্ডীপাঠের মাধ্যমে দেবী দুর্গার মর্ত্যলোকে আগমনের আমন্ত্রণ জানানো। মন্দিরে-মন্দিরে পূজা দেওয়ার ভিড় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের।

এদিন স্থাপন করা হয় ঘট, করা হয় বিশেষ পূজা। অন্যদিকে, পিতৃপুরুষের উদ্দেশ্যে মহালয়ার সকালে গঙ্গার ঘাটে-ঘাটে চলে তর্পণ। তর্পণের জন্য রবিবার সকাল থেকেই সাধারণ মানুষ ভিড় জমেছে গঙ্গাসহ এপার বাংলার বিভিন্ন নদীর ঘাটগুলোতে।  

আরো পড়ুন:

তামান্না কী আধ্যাত্মিক মানুষ?

স্যামসনের ফিফটিতে ওমানকে ১৮৯ রানের টার্গেট দিল ভারত

‘মহালয়া’ শব্দটির অর্থ- মহান যে আলয় বা আশ্রয়। দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয় বা আশ্রয়। এদিনই আক্ষরিক অর্থে দুর্গাপূজা শুরু হয়। কথিত আছে, মহালয়ার দিন অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। একই সঙ্গে শাস্ত্রমতে, এদিনই দেবীপক্ষের আগের কৃষ্ণা প্রতিপদে মর্ত্যধামে নেমে আসেন পিতৃপুরুষরা। অপেক্ষা করেন উত্তরসূরিদের কাছ থেকে জল পাওয়ার জন্য। মহালয়ার দিন পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে জলদানই তর্পণ।

কলকাতার দক্ষিণেশ্বর থেকে বাগবাজার, কুমারটুলি, আহিরিটোলা কিংবা বাবুঘাট- সকাল থেকেই ভিড় জমেছে কলকাতার বিভিন্ন ঘাটে। বিভিন্ন জেলার ঘাটগুলোর চিত্রও একই রকম। কোনো কোনো ঘাটে সকাল থেকেই তর্পণের জন্য পড়েছে লম্বা লাইন। 

তর্পনের সময় দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্ক পুলিশ প্রশাসন। ড্রোনের মাধ্যমে চলছে নজরদারি। কোনোরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নদীপথে চলছে টলহদারি, প্রস্তুত রাখা হয়েছে রিভার ট্রাফিক পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যদেরও।

এদিকে, মহালয়ার আগের দিনই পূজা উদ্বোধনে নেমে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার তিনি শ্রীভূমি, টালা প্রত্যয়, হাতিবাগান সর্বজনীন সহ একাধিক বড় মণ্ডপের উদ্বোধন করেন। সূচনা হয়েছিল ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষের হাতিবাগান সর্বজনীন থেকে। তবে মহালয়ার আগেই মণ্ডপ উদ্বোধন করা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানান, মাতৃমূর্তির উদ্বোধন তিনি তর্পণের আগে করেন না।

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ