স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘বিশেষ প্রসিকিউটোরিয়াল উপদেষ্টা’ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি ‘হ্যাকড’ (বেহাত) হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি প্রতিকার চেয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় এহসানুল হক সমাজী একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান।

এসআই মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘বিশেষ প্রসিকিউটোরিয়াল উপদেষ্টা’ এহসানুল হক সমাজীর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি হ্যাকড হয়েছে। হ্যাকিংয়ের ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করতে কাজ করছে পুলিশ।

এহসানুল হক সমাজী তাঁর জিডিতে উল্লেখ করেছেন, বুধবার দুপুরে উত্তরা মডেল থানার একজন এসআই পরিচয় দিয়ে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে ফোন দেন। ফোনটি তিনি রিসিভ করার পর এসআই পরিচয়ধারী ব্যক্তি তাঁকে জানান, তাঁর মুঠোফোন থেকে সরকারবিরোধী তথ্য প্রচার হচ্ছে। পরে তিনি একটি লিংক তাঁর মুঠোফোনে পাঠান। পরে একটি কোড পাঠান এসআই পরিচয়ধারী সেই ব্যক্তি। এর কিছুক্ষণ পর জানতে পারেন, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি হ্যাক করা হয়েছে। তাঁর মুঠোফোন থেকে তাঁর বিভিন্ন পরিচিতজনের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে।

জানতে চাইলে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর হ্যাকিং করে যাঁরা আমার সম্মানহানি করেছেন, তাঁদেরকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হোক।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জামিনে মুক্তির পর কাঁদলেন মা শাহাজাদী, বাদীর কাছে চাইলেন ক্ষমা

১৩ দিন বয়সী নবজাতকসহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে থাকা মা শাহাজাদীর জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালত এ আদেশ দেন। একই দিন শাহাজাদীর মা নার্গিস বেগমেরও জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

বেলা তিনটার দিকে হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে বের করে শাহাজাদীকে তাঁর ভাই ও আইনজীবীর জিম্মায় দেওয়া হয়। পাশাপাশি জামিনের আদেশ হাতে পাওয়ার পর নার্গিস বেগমকেও খুলনা জেলা কারাগার থেকে হাসপাতালের প্রিজন সেলে থাকা মেয়ে শাহাজাদীর কাছে নিয়ে যায় কারা কর্তৃপক্ষ।

শাহাজাদী হাসপাতাল থেকে বের হলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয়। শাহাজাদীর আইনজীবী, মা ও ভাইয়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদী মো. মির্জা সুজনও।

চুরি যাওয়া নবজাতকের বাবা মির্জা সুজনকে দেখে ক্ষমা চেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহাজাদী। তিনি বলতে থাকেন, ‘ভাই বিশ্বাস করো, আমি এ রকম না। আমি পরিস্থিতির কাছে অসহায় ছিলাম। আমাকে ক্ষমা করে দিও।’ মির্জা সুজন তাঁকে ভেঙে না পড়তে সান্ত্বনা দেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় সব স্বাভাবিক হবে বলে বোঝাতে থাকেন। পরে মা, ভাই ও নবজাতক কন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়ির পথে রওনা দেন শাহাজাদী।

শাহাজাদীর আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল সোমবার নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে আমরা মহানগর দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করার পরিকল্পনা করি। কিন্তু আসামি শাহাজাদী হাসপাতালে থাকায় ওকালতনামা প্রস্তুত ছিল না। এদিকে আদালতের সময় পেরিয়ে যাচ্ছিল। তখন আমি খুলনা মেডিকেলে গিয়ে পুলিশের মাধ্যমে তাঁর স্বাক্ষর এনে দুপুর ১২টার দিকে আদালতে হাজির হই। মহানগর দায়রা জজ মো. শরীফ হোসেন হায়দার বিশেষ সহানুভূতিতে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শুনানি করেন। শুনানিতে আদালত বলেন, নিম্ন আদালতের উচিত ছিল “ডকট্রিন অব নেসেসিটি” বা প্রয়োজনীয়তার নীতি বিবেচনা করে জামিন দেওয়া। এরপর আদালত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন এবং আগামী ২০ অক্টোবর পরবর্তী দিন ধার্য করেন।’

নবজাতক চুরির অভিযোগে হওয়া একটি মামলায় রোববার শাহাজাদীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাঁকে নবজাতক কন্যাসহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রিজন সেলে পাঠানো হয়। সোমবার খুলনার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৫ সেপ্টেম্বর শাহাজাদী যে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন, সেখান থেকে আরেক প্রসূতির চার দিন বয়সী ছেলে নবজাতক চুরি হয়। শাহাজাদীর মা নার্গিস বেগমের কাছ থেকে নবজাতক উদ্ধার করা হয় এবং তখনই তিনি আটক হন। নার্গিস বেগম পুলিশকে জানিয়েছিলেন, মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতে তিনি এ কাজ করেছিলেন।

আইনজীবী শেখ রফিকুজ্জামান বলেন, শাহাজাদী পঞ্চমবারের মতো কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন। পরিবার ও স্বামীর পক্ষ থেকে ছেলেসন্তানের জন্য চাপ ছিল। কন্যা হলে তাঁকে বিবাহবিচ্ছেদের হুমকি দেওয়া হয়েছিল। সন্তান জন্মের পর স্বামী শাহাজাদীকে আর ঘরে নিতে চাননি, এমনকি হাসপাতাল থেকেও ছাড়াবেন না বলে হুমকি দেন। শাহাজাদীর মা একজন বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী এবং কড়া মাত্রার ওষুধ সেবন করেন। তিনি হাসপাতাল থেকে ছেলে নবজাতককে চুরি করে গ্রামের বাড়িতে যান। পরে বাড়ির লোকজন বুঝতে পেরে শিশুটিকে আবার হাসপাতালে ফিরিয়ে আনেন।

চুরি হওয়া শিশুর বাবা মির্জা সুজন মানব পাচার আইনে মামলা করেন। তবে তিনি আজ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে। শাহাজাদী আজ আমার কাছে ক্ষমাও চেয়েছেন। আমার আর কোনো অভিযোগ নেই। আমি মামলা চালাতে চাই না। বিষয়টা মিটে যাক—এটাই এখন চাওয়া।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা জেলা পুলিশের সেরা তদন্তকারী এসআই কাওছার
  • জোবাইদ নয়, তিনি নুর মোহাম্মদ—কুমিল্লায় ধরা পড়ল ‘আয়নাবাজি’
  • অবশেষে মুক্ত জীবনে সেই নবজাতক, জামিনে মা-নানি
  • জামিনে মুক্তির পর কাঁদলেন মা শাহাজাদী, বাদীর কাছে চাইলেন ক্ষমা
  • আদালত থেকে খুনের আসামির পলায়ন, ৬ পুলিশ প্রত্যাহার 
  • পরকীয়া ও ছিনতাইয়ের জালে প্রাণ গেল সায়েদুরের
  • কুমিল্লায় ৪ মাজারে হামলার ঘটনায় আরও দুজন গ্রেপ্তার
  • ঢাকার বংশালে বৃষ্টির জমা পানিতে পড়ে অচেতন, হাসপাতালে মৃত ঘোষণা
  • কুমিল্লায় চার মাজারে হামলার তিন দিন পর গ্রেপ্তার ২