সাতক্ষীরায় ভারতীয় ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা
Published: 1st, October 2025 GMT
সাতক্ষীরায় ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের (আইভিএসি) কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
বুধবার (১ অক্টোবর) শহরের ইটাগাছা এলাকার সংগ্রাম প্লাজায় অবস্থিত ভাড়া করা কার্যালয়টি খালি করেছে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার কর্তৃপক্ষ।
আরো পড়ুন:
ড. ইউনূসকে অসুর রূপে উপস্থাপন নিন্দনীয়: উপদেষ্টা
দুর্নীতিগ্রস্ত উপদেষ্টাদের শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে এনসিপি, জানালেন নাসীরুদ্দীন
এদিকে, প্রায় ৫ বছর চলার পর হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া এ সেন্টার ঘিরে ভোগান্তিতে পড়েছেন সীমান্তবর্তী জেলার হাজারো ভিসা প্রত্যাশীরা। তাদের এখন ঢাকা, খুলনা বা যশোরে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
জানা যায়, প্রান্তিক ও দূরবর্তী অঞ্চলের মানুষের ভিসা প্রাপ্তি সহজ করতে সাতক্ষীরাসহ মোট ছয়টি ভিসা আবেদন কেন্দ্র চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন। এরই অংশ হিসেবে হাইকমিশনের উদ্যোগে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে সাতক্ষীরার ইটাগাছা এলাকায় সংগ্রাম প্লাজার একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার চালু হয়। পরে ১৩ জানুয়ারি থেকে ভিসা সেন্টারের কার্যক্রম শুরু করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরও ২ মাস সেন্টারটির কার্যক্রম চালু ছিল। তবে এরপর থেকে অফিসটি তালাবদ্ধ অবস্থায় ছিল।
গত ২০২৪ সালের ২৬ আগস্ট ভিসা পেতে হয়রানির প্রতিবাদে সাতক্ষীরার ভিসা সেন্টারের সামনে বিক্ষোভ করেন ভিসা প্রার্থীরা। কয়েক মাস ধরে ভিসার আবেদন করেও ফল না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এ বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হবে এমন আশ্বাসে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
স্থানীয়রা বলছেন, সেন্টারটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সীমান্তবর্তী এই জেলার হাজারো মানুষ এখন ভিসার জন্য খুলনা কিংবা যশোরে যেতে বাধ্য হবেন। এতে তাদের ভোগান্তি আরো বাড়বে।
ভবনটির ম্যানেজার লক্ষ্মীনাথ গাইন জানান, প্রায় ১ মাস আগে ভিসা সেন্টার কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়ে দেয়, সাতক্ষীরায় আর ভিসা অফিস রাখা হবে না।
বাংলাদেশে ইন্ডিয়ান ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারের ডেপুটি চিফ অপারেটিং অফিসার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভবন মালিককে আগেই জানানো হয়েছিল, নির্ধারিত দিনে সেন্টারটি সরিয়ে নেওয়া হবে।
এছাড়া, চলতি বছরের ২৮ আগস্ট লিখিতভাবে সংশ্লিষ্টদের কক্ষ খালি করার নোটিশ দেওয়া হয়।
ঢাকা/শাহীন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইন ড য় ন ভ স
এছাড়াও পড়ুন:
থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরে সর্বনিম্ন, বিশ্ববাজারে এ বছর কমেছে ১৪%
এশিয়াসহ বিশ্বের চালের বাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এশিয়ায় চালের অন্যতম বৃহৎ সরবরাহকারী থাইল্যান্ডে চালের দাম ১৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। মূলত বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
থাইল্যান্ডসহ চালের অন্যান্য বড় উৎপাদনকারী দেশ ভারত ও মিয়ানমারে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারেও চালের দাম কমছে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার খাদ্যসূচক অনুযায়ী, চলতি বছর চালের দাম কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। এমনকি বিশ্ববাজার চালের দাম আগস্ট মাসে আট বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে আসে। খবর দ্য নেশনের
থাইল্যান্ডে চালের দামের এই নিম্নমুখী প্রবণতা একদম নতুন কিছু নয়, বেশ কয়েক মাস ধরেই এ প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষিবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘ সময় ধরে চালের দাম কম থাকায় দেশটির কৃষকেরা ধানের আবাদ কমিয়ে দিতে পারেন।
থাইল্যান্ডে গত বৃহস্পতিবার ৫ শতাংশ খুদযুক্ত চালের দাম দাঁড়ায় টনপ্রতি ৩৩৫ ডলার। আগের সপ্তাহে যা ছিল ৩৩৮ ডলার। থাইল্যান্ডের কৃষি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত ১৪ বছরে থাই সরকারের জনতুষ্টিমূলক নীতির কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। সরকার কৃষকদের সন্তুষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের নিশ্চয়তা দিয়েছে। এসব কর্মসূচিতে প্রায় ৪০ বিালিয়ন বা ৪ হাজার কোটি ডলার ব্যয় হলেও একধরনের নীতিগত ফাঁদ তৈরি হয়েছে। ফলে কৃষকেরা প্রযুক্তি উন্নয়ন, দক্ষতা বাড়ানো কিংবা বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাওয়ানো থেকে নিরুৎসাহিত হয়েছেন।
সেই সঙ্গে থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা জানান, বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে বাজারে নতুন চালের সরবরাহ এসেছে। এটাও দাম কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ। অন্যদিকে ভারত ও মিয়ানমারের মতো প্রতিযোগী দেশগুলো চালের গুণগত মানের উন্নতি করেছে। আধুনিকতা এনেছে উৎপাদনব্যবস্থায়। ফলে তারা কম খরচে ভালো মানের চাল রপ্তানি করতে পারছে। কিন্তু থাইল্যান্ড এখনো ভর্তুকিনির্ভর ব্যবস্থায় আটকে আছে। এ পরিস্থিতিতে দেশটির কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এফএওর সূচক কমেছেপ্রতি মাসেই খাদ্যমূল্যসূচক করে থাকে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)। তাতে দেখা যাচ্ছে, চলতি বছর বিশ্ববাজারে চালের দাম কেমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক নেমে এসেছে ৯৮ দশমিক ৪–এ। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা ছিল ১১৩ দশমিক ৬। সেই সঙ্গে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে চালের মূল্যসূচক ছিল ১২৫ দশমিক ৭। সেই হিসাবে এক বছরে চালের দাম কমেছে ২১ দশমিক ৭ শতাংশ।
চালের দামের এই পতন শুরু হয় ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারত ধাপে ধাপে রপ্তানি–নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে শুরু করে তখন। এ ঘটনা চালের বাজারে বড় প্রভাব ফেলে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর সব ধরনের চালের মূল্যসূচক ১৩ শতাংশ কমেছে। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের
অথচ ২০২৪ সালের শুরুতে এর উল্টো চিত্র দেখা গেছে। তখন ভারত একের পর এক রপ্তানি সীমাবদ্ধতা জারি করলে ২০০৮ সালের পর চালের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মানুষের মধ্যে মজুতের প্রবণতা তৈরি হয়। অন্যান্য উৎপাদক দেশেও সুরক্ষাবাদী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর পর থেকে চালের দাম কমতে শুরু করে।