নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপের শুরুটা দারুণ হয়েছে বাংলাদেশের। কলম্বোয় গতকাল পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে নিগার সুলতানার দল।

ম্যাচে টিভি ধারাভাষ্যকারের দায়িত্বে ছিলেন পাকিস্তান নারী দলের সাবেক অধিনায়ক সানা মীর। ধারাভাষ্য দেওয়ার একপর্যায়ে তিনি নাতালিয়া পারভেজের পরিচয় তুলতে ধরতে গিয়ে তাঁকে আজাদ কাশ্মীর থেকে উঠে আসা খেলোয়াড় উল্লেখ করেন।

এ নিয়ে ভারতীয়দের তোপের মুখে পড়লেও ক্ষমা চাইতে বা ভুল স্বীকার করতে নারাজ সানা মীর। বিতর্কিত বিষয়টি নিয়ে আইসিসি এখনো বিবৃতি না দিলেও সানা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা একটি বার্তায় সবকিছু স্পষ্ট করেছেন।

পাকিস্তানের বিপক্ষে কাল হেসেখেলে জিতেছে বাংলাদেশ নারী দল.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার ছয়টি বড় সাফল্য তুলে ধরলেন প্রেস সচিব

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৮০তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এই সফরে বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির শীর্ষ পর্যায়ের ছয় নেতাসহ একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেন, বিশ্বনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্র, মানবিক নেতৃত্ব ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিশন তুলে ধরেন।

আরো পড়ুন:

প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য দেশের পরিস্থিতি অস্থির করে তুলছে: ফারুক

ড. ইউনূসকে অসুর রূপে উপস্থাপন নিন্দনীয়: উপদেষ্টা 

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম শুক্রবার (৩ অক্টোবর) ফেসবুকে এ সফরের উল্লেখযোগ্য ছয়টি সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টার ৬ সাফল্য:

১. গণতান্ত্রিক প্রতিশ্রুতি ও ঐক্যের বার্তা
জাতিসংঘে ভাষণে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও অংশগ্রহণমূলক শাসনের প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি দেশের মানুষ ও আন্তর্জাতিক অংশীদারদের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষার আশ্বাস দেন। এই সফরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতি বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ঐক্যের গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়।

২. বৈশ্বিক কূটনীতিতে কৌশলগত সম্পৃক্ততা
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণকালে ইতালি, ফিনল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, আলবেনিয়া, কসোভো ও ভুটানের নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
এছাড়া, তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, ইউএনএইচসিআর প্রধান ফিলিপো গ্র্যান্ডি, ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল, বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বাঙ্গা, আইএমএফের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা এবং ডাচ রানি ম্যাক্সিমার সঙ্গেও বৈঠক করেন।

৩. রোহিঙ্গা সংকটে মানবিক নেতৃত্ব
জাতিসংঘে বাংলাদেশের প্রধান এজেন্ডা ছিল রোহিঙ্গা সংকট। অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বনেতাদের জানান, বাংলাদেশ এখনো ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় ও সহায়তা দিচ্ছে।

তিনি তাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছামূলক ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসনের পক্ষে জোর দেন এবং এ সংকটকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের মনোযোগে রাখার আহ্বান জানান। এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের জন্য মোট ৯৬ মিলিয়ন ডলারের প্রতিশ্রুতি আদায় করেন।

৪. বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ প্রস্তুতির স্বাধীন মূল্যায়নের আমন্ত্রণ
বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতীক হিসেবে অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘকে আহ্বান জানান একটি স্বাধীন মূল্যায়নের মাধ্যমে যাচাই করতে—বাংলাদেশ এলডিসি (স্বল্পোন্নত দেশ) থেকে উত্তরণের জন্য কতটা প্রস্তুত। এই পদক্ষেপ সরকারের আত্মবিশ্বাস ও আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রতি ইতিবাচক মনোভাবের পরিচয় দেয়।

৫. প্রবাসী শ্রমিক ও অর্থনৈতিক সুযোগ সম্প্রসারণ
সফরে আলবেনিয়া, কসোভোসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশি শ্রমিকদের বৈদেশিক কর্মসংস্থানের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এই উদ্যোগ রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে নতুন অংশীদার দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলবে।

৬. সহযোগিতামূলক ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের মঞ্চ থেকে যে বার্তাটি দিয়েছেন, তা হলো: বাংলাদেশ কেবল নিজের স্বার্থে নয়, বরং বৈশ্বিক শান্তি, গণতন্ত্র, মানবিকতা ও সহযোগিতার লক্ষ্যে দায়িত্বশীল একটি দেশ হিসেবে কাজ করে যাবে।

ঢাকা/এএএম/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ