সুন্দরবনে কোস্টগার্ডের অভিযানে দস্যুদের কবল থেকে ৪ জেলে উদ্ধার
Published: 3rd, October 2025 GMT
সুন্দরবনে মুক্তিপণের দাবিতে বনদস্যু জাহাঙ্গীর বাহিনীর হাতে জিম্মি চার জেলেকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। আজ শুক্রবার ভোরে সুন্দরবনের শিবসা নদীসংলগ্ন আড়বাউনি খালে অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় দস্যুদের আস্তানা থেকে অস্ত্র ও গুলি জব্দ করা হয়।
উদ্ধার হওয়া জেলেরা হলেন খুলনার কয়রা উপজেলার মফিজুল ইসলাম (৪২), হাবিবুর রহমান (৩৭), দাকোপ উপজেলার মো.
আজ শুক্রবার সকালে কোস্টগার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ওই স্থানে কয়েকজন জেলেকে জিম্মি করে রেখেছিল জাহাঙ্গীর বাহিনী। অভিযানের সময় ডাকাত দলটিকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়ে দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে কোস্টগার্ড। পরে দস্যুরা নৌকা ও জিম্মিদের ফেলে বনের ভেতরে পালিয়ে যায়। নৌকাটিতে তল্লাশি চালিয়ে একটি একনলা বন্দুক, দুটি এয়ারগান ও তিনটি তাজা কার্তুজ উদ্ধার করা হয়। নৌকাটি থেকে চার জেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুনদস্যুতায় ফিরছে আত্মসমর্পণকারীরা, ‘দুলাভাই বাহিনী’সহ ১৪ দল সক্রিয় ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫কোস্টগার্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত ১৮ জন দস্যুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ১৯টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৩১টি গুলি।
সার্বিক বিষয়ে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের স্টাফ অফিসার (অপারেশন) লে. কমান্ডার আবরার হাসান বলেন, সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত করতে নিয়মিত অপারেশন, হটস্পট এলাকায় বিশেষ টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনপাচারকারীসহ আরও কিছু কারণে হুমকির মুখে সুন্দরবনের বাঘ২৯ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দরবন
এছাড়াও পড়ুন:
৩ দিনে ৭৯ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করেছে ভারত
ভারতীয় সুন্দরবনের ভারতীয় জলসীমায় ব্যাপক নজরদারি বাড়িয়েছে ভারত। গত শনিবার থেকে পরপর তিনদিন অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ভারতীয় জলসীমায় অনুপ্রবেশের অভিযোগে তিনটি বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার আটক করেছে ভারত। মাছ সহ এসব ফিশিং ট্রলার বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ৭৯ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকেও গ্রেপ্তার করেছে ভারতীয় কোস্টাল পুলিশ।
ভারতের সুন্দরবন কোস্টাল বেল্টের অন্তর্গত ফ্রেজারগঞ্জ কোস্টাল থানা সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার জলসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগে আটক করা হয় ২৯ জন বাংলাদেশি মৎজীবীকে। এরপর রবিবার আবারো একটি বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার আটকের পাশাপাশি গ্রেপ্তার করা হয় ২৬ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে। এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই ফের সোমবার নামখানার কাছে আরো একটি বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলার সহ ২৪ জন মৎস্যজীবীকে আটক করে ভারত।
আরো পড়ুন:
সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া ভারতীয় ৭ পরিচালক
‘গতকালের রায়ের’ পর এটা আরেকটা জয়: উপদেষ্টা আসিফ
জানা গেছে, কাকদ্বীপ আদালতে তোলার পর বাংলাদেশি এই মৎস্যজীবীদের আপাতত কারাগারে ঠাঁই হয়েছে। ভারতীয় কোস্টাল থাকা সূত্রে খবর, আচমকা বাংলাদেশি ট্রলারের আনাগোনা ভারতীয় সীমান্তের আশেপাশে বেড়ে যাওয়ায় সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তবে ভারতীয় মৎস্যজীবীদের একাংশ পুলিশ প্রশাসনের অতি তৎপরতায় বেশ অবাক।
প্রসঙ্গত চলতি বছরে চারটি ভারতীয় ট্রলার বাংলাদেশের উপকূলরক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। ৬২ জন ভারতীয় মৎস্যজীবী বাংলাদেশের জেলে বন্দী রয়েছেন। এদের মধ্যে বাবলু দাস নামে এক মৎস্যজীবীর বাংলাদেশের জেলবন্দী অবস্থায় সম্প্রতি মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় ভারতীয় মৎসজীবী সংগঠনগুলোর মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়। বাকি ৬১ জন মৎস্যজীবী ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করে মৎস্যজীবী সংগঠনগুলো।
অনেকেই বলছেন, ভারতীয় মৎস্যজীবীদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের ওপর চাপ তৈরি করতেই সীমান্ত এলাকা জুড়ে বাংলাদেশি মৎস্যজীবীদের ব্যাপক ধরপাকড় শুরু করেছে ভারত। সর্বশেষ গত দুই মাসে এই নিয়ে প্রায় ছয়টি বাংলাদেশি ট্রলার সহ মোট ১৩৪ জন বাংলাদেশি মৎস্যজীবীকে হেফাজতে নিয়েছে ভারত। যদিও দুই দেশের কোনো তরফেই সরকারি পর্যায়ে আলাপ আলোচনা শুরু হয়নি।
ঢাকা/ফিরোজ