দুই দশকের বেশি সময় আগে, ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের আগে, আমিসহ যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত একদল আন্তর্জাতিক আইনবিদ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে একটি চিঠি লিখেছিলাম। সেখানে ব্যাখ্যা করেছিলাম যে যুদ্ধটি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে বৈধ হবে না।

গাজার ওপর একটি আন্তর্জাতিক ট্রাস্টি শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে আবারও আরেকটি বৈশ্বিক অভিযানের জন্য বেআইনি বিষয়ে সতর্কবার্তা প্রয়োজন। এতে একই ব্যক্তিকে আবারও দেখা যাচ্ছে; এবার প্রস্তাবিত পরিকল্পনার সম্ভাব্য নেতা হিসেবে—যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পাশে।

গাজার ওপর এই ট্রাস্টি শাসনব্যবস্থা প্রতিস্থাপন করবে ইসরায়েলের অর্ধশতাব্দীর বেশি সময়ের দখলদারত্বকে, যা তার আচরণে আন্তর্জাতিক আইনের মৌলিক নিয়মের গুরুতর লঙ্ঘন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্ণবাদী বৈষম্য, নির্যাতন, যুদ্ধাপরাধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা।

আন্তর্জাতিক আইনের এই নিয়মগুলোর কেন্দ্রে রয়েছে ‘ট্রাস্টি–শিপ’। ‘ট্রাস্টি’ কর্তৃক আধিপত্য হবে নিঃস্বার্থভাবে, এর ‘বেনিফিশিয়ারি’ হবে গাজার ফিলিস্তিনি জনগণ। এখানে নির্যাতন নয়, সুরক্ষা থাকতে হবে।

গাজার ওপর ট্রাস্টি শাসনব্যবস্থার সঙ্গে ব্লেয়ারের সম্পৃক্ততা সেই পশ্চিমা মানবতাবাদী ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা, যারা উপনিবেশবাদকে মানবিক করার চেষ্টা করেছিল, সেখানে দায়বদ্ধতার এক কর্তব্য জুড়ে দিয়ে।

‘মানুষের ওপর ট্রাস্টি–শিপ’ ধারণাটি প্রথম গ্রহণ করেছিলেন ইউরোপীয়রা; ১৯০০ শতাব্দীর শেষদিকে বার্লিন সম্মেলনে আফ্রিকার ওপর ঔপনিবেশিক শাসনের জন্য; প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর লিগ অব নেশনস দ্বারা ম্যান্ডেটকৃত ভূখণ্ডগুলোর জন্য এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাতিসংঘের মাধ্যমে ট্রাস্ট টেরিটরি ও অন্যান্য অ-উপনিবেশ ভূখণ্ডের জন্য।

ঐতিহাসিক রায়ে আদালত একমত হয়েছিলেন। এটি আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্ত ছিল। অতএব, এটি সমানভাবে প্রযোজ্য হবে যেকোনো ধরনের বিদেশি প্রশাসনের ক্ষেত্রে, তা যতই তা মানবিক ও সময়সীমাবদ্ধ হোক না কেন। একটি নির্যাতনমূলক ট্রাস্টিকে প্রতিস্থাপন করে আরেকটি ট্রাস্টি আনা আত্মনিয়ন্ত্রণ নয়, তাই এটি অবৈধ।

ট্রাস্টি–শিপ ধারণা ধরে নেয় যে পৃথিবী বিভক্ত ‘শিশুসদৃশ’ জনগণ এবং ‘প্রাপ্তবয়স্কদের’ মধ্যে। শিশুসদৃশ জনগণ নিজেদের যত্ন নিতে অক্ষম; এখন এই ধারণা প্রয়োগ করা হচ্ছে গাজার ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর। এ ক্ষেত্রে গাজার জনগণ হলো ‘শিশুসদৃশ আর ট্রাম্প–ব্লেয়াররা হলেন প্রাপ্তবয়স্ক; যাঁরা শুধু নিজেদের জনগণকেই নয়, অন্যদেরও শাসন করতে সক্ষম।’

শিশু–প্রাপ্তবয়স্ক সম্পর্কই দায়বদ্ধতার যৌক্তিকতা হলো—প্রাপ্তবয়স্ক দায়িত্বে থাকবে, কিন্তু তাঁকে অবশ্যই ‘অভিভাবকত্বে থাকা’ শিশুর স্বার্থে কাজ করতে হবে। প্রাপ্তবয়স্কের দায়িত্ব হলো শিশুকে ‘বড় করা’, যাতে সে শেষ পর্যন্ত প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে ওঠে। এই শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য ‘উন্নয়ন’ নিশ্চিত করা।

ফলে গাজার ওপর ট্রাস্টি শাসনব্যবস্থা হবে সাময়িক। কারণ, এটি একটি পরিবর্তনকালীন ব্যবস্থা: প্রাপ্তবয়স্করা স্থানীয়ভাবে স্বশাসনের ক্ষমতা গড়ে তুলবে; শিশুরা পরিণত হয়ে প্রাপ্তবয়স্ক হবে এবং তখন ট্রাস্টি–শিপের প্রয়োজন শেষ হবে।

ট্রাস্টি–শিপের এই মডেলের কেন্দ্রে রয়েছে বর্ণবাদ। ঔপনিবেশিক যুগে একটি বর্ণবাদী বৈশ্বিক ‘সভ্যতার মানদণ্ড’—যা ইউরোপীয়দের প্রাধান্যে গঠিত—নির্ধারণ করত কারা প্রাপ্তবয়স্ক আর কারা শিশু (কে নিজেদের প্রাপ্তবয়স্ক মনে করেছিল, অনুমান করা কঠিন নয়)। ট্রাস্টি–শিপ ছিল আত্মস্বার্থপর ভাঁওতাবাজি, খারাপ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত, যা ঔপনিবেশিক শাসনকে যুক্তিসংগত করার অজুহাত হিসেবে কাজ করত এবং যেটাকে ‘সভ্য করার মিশন’ হিসেবে প্রচার করা হতো।

কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর উপনিবেশমুক্তি আন্দোলনের ফলাফল ছিল আন্তর্জাতিক আইনে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি। এটি ছিল ট্রাস্টি–শিপের প্রত্যাখ্যান। পৃথিবীতে আর শিশুসদৃশ ও প্রাপ্তবয়স্ক জনগণ নেই: জনগণের মধ্যে এই বর্ণবাদী বিভাজন আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল হলো। সব জনগণ সমান, সবাই স্বাধীনতার যোগ্য, সবাই ‘প্রাপ্তবয়স্ক’। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ বলেছিল: রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক বা শিক্ষাগত অপ্রস্তুতি কখনো স্বাধীনতা বিলম্বিত করার অজুহাত হতে পারে না।

এরপরও ট্রাস্টি–শিপ চালু ছিল; মূলত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মাধ্যমে, যেমন বসনিয়া ও পূর্ব তিমুরে। বৈশ্বিক মানবাধিকার নিয়মগুলোকে একটি আপাতদৃষ্টিতে অ-বর্ণবাদী ‘সভ্যতার মানদণ্ড’ হিসেবে ব্যবহার করা হলো, যা নির্ধারণ করতে পারে কোথায় ট্রাস্টি–শিপ প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে নিঃস্বার্থভাবে কাজ করতে সক্ষম হিসেবে দেখা হতো। তাই রাষ্ট্রগুলো নয়, সংস্থাগুলো ট্রাস্টি–শিপের কর্তব্য সৎভাবে পালন করতে পারে—এমনটা মেনে নেওয়া হয়েছে।

এই ব্যবস্থা আমাকে আতঙ্কিত করে। গত বছর আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শমূলক মতামত মামলায় আমি আরব লিগের পক্ষে যুক্তি দিয়েছিলাম; আমার একাডেমিক গবেষণার ভিত্তিতে আমি বলেছিলাম যে ফিলিস্তিনি জনগণ শর্তহীনভাবে ইসরায়েলি দখল থেকে মুক্ত হওয়ার আইনি অধিকার রাখে।

ঐতিহাসিক রায়ে আদালত একমত হয়েছিলেন। এটি আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার সম্পর্কে একটি সিদ্ধান্ত ছিল। অতএব, এটি সমানভাবে প্রযোজ্য হবে যেকোনো ধরনের বিদেশি প্রশাসনের ক্ষেত্রে, তা যতই তা মানবিক ও সময়সীমাবদ্ধ হোক না কেন। একটি নির্যাতনমূলক ট্রাস্টিকে প্রতিস্থাপন করে আরেকটি ট্রাস্টি আনা আত্মনিয়ন্ত্রণ নয়, তাই এটি অবৈধ।

রালফ ওয়াইল্ড ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের আন্তর্জাতিক আইনের অধ্যাপক

মিডলইস্ট আই থেকে নেওয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প র প তবয়স ক শ সনব যবস থ গ জ র ওপর ব যবস থ র জন য কর ছ ল শ সন র আইন র

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিপ্লব যেভাবে নষ্ট করল চীন

মিয়ানমারের সাধারণ জনগণ থেকে শুরু করে বিপ্লবী আন্দোলনের অনেকেই বিশ্বাস করেন, চীন হস্তক্ষেপ না করলে হয়তো ভিন্ন হতো দেশটির বর্তমান বাস্তবতা। অনেকের বিশ্বাস, ২০২৪ সালে সামরিক সরকারবিরোধী অভিযান ‘অপারেশন ১০২৭’ শুরু হওয়ার পর চীন হস্তক্ষেপ না করলে এখন পর্যন্ত প্রতিরোধযোদ্ধারা নেপিডো ঘিরে ফেলতেন; অর্থাৎ বসন্ত বিপ্লব ইতিমধ্যেই পৌঁছে যেত জয়ের খুব কাছে।

চীন প্রায়ই মিয়ানমারের সঙ্গে তাদের ‘পওক-ফও’ বা ‘ভ্রাতৃসুলভ’ সম্পর্কের কথা বলে। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ভ্রাতৃসুলভ সম্পর্ক কি মিয়ানমারের জনগণের সঙ্গে, নাকি কেবল নেপিডোর শাসকদের সঙ্গে?

২০২৪ সালের জুনে এমএনডিএএ, টিএনএলএ, এএ এবং পিপলস ডিফেন্স ফোর্স নিয়ে গঠিত ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের অপারেশন ১০২৭-এর দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়। এই অভিযান আকারে ও সফলতার ক্ষেত্রে ছিল নজিরবিহীন। উত্তর শান অঙ্গরাজ্যের রাজধানী লাশিও দখলের পর প্রতিরোধযোদ্ধাদের জোট আরও এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল।

আরও পড়ুনভারত, পাকিস্তান, মিয়ানমার ঘিরে ট্রাম্পের নতুন কূটনীতি০৭ আগস্ট ২০২৫

শাসক সেনাবাহিনী তখন ভেঙে পড়ছিল। ছয়জন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আটক হন, অসংখ্য সৈন্য আত্মসমর্পণ করেন আর নর্থ ইস্টার্ন কমান্ড পুরোপুরি ধসে পড়ে। একসময়ের শক্তিশালী মিয়ানমার সেনাবাহিনী তখন হয়ে পড়ে মনোবলহীন ও নেতৃত্বহীন। আর ঠিক সেই মুহূর্তেই সামরিক সরকারের জন্য এক ‘রক্ষাকর্তা’ হাজির হলো। সেই রক্ষাকর্তাই চীন।

অপারেশন ১০২৭-এর সর্বোচ্চ সাফল্যের সময় সামরিক জান্তার অনুরোধে বেইজিং প্রতিরোধযোদ্ধাদের ওপর যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরু করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। লাশিও পতনের পর সেই চাপ আরও বাড়ে। ২০২৪ সালের আগস্টে চীন ঘোষণা করে যে ‘মিয়ানমারের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান’। চীন হুমকি দেয় যে যদি লড়াই না থামে, তবে তারা সব ধরনের সহায়তা বন্ধ করে দেবে। এই হুমকি ছিল মূলত তাদের নিজস্ব সংস্করণের ‘ফোর-কাটস’ কৌশল; যা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীও দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করে আসছে।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, মিয়ানমারের জেনারেলরা সব সময় চীনকে ভয় ও অপছন্দ করেছে। অথচ অপারেশন ১০২৭-এর সময় যখন মিন অং হ্লাইংয়ের সেনাবাহিনী টিকে থাকতে লড়াই করছিল, তখন তিনিই বেইজিংয়ের সাহায্য চান। আর চীন সাহায্য করার পর তিনি চীনকে ‘ভালো প্রতিবেশী’ এবং ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ বলে প্রশংসা করেন।

এই চাপের মুখে এমএনডিএএ তাদের অগ্রযাত্রা থামিয়ে দেয় এবং ২০২৫ সালের এপ্রিলে কোনো যুদ্ধ ছাড়াই লাশিও আবার জান্তার কাছে ফিরিয়ে দেয়। জুলাই নাগাদ টিএনএলএ-ও চীনের চাপ সহ্য করতে না পেরে দখল করা এলাকা থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়। বেইজিংয়ের সহায়তার কারণেই জান্তা আবার সেই সব এলাকা ফিরে পায়, যেগুলো প্রতিরোধযোদ্ধারা জীবন দিয়ে মুক্ত করেছিলেন।

২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে ২০২৩ পর্যন্ত চীন প্রকাশ্যে মিন অং হ্লাইংকে সমর্থন বা স্বীকৃতি দেয়নি। এমনকি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স অপারেশন ১০২৭ শুরু করার সময়ও বেইজিং অতটা হস্তক্ষেপ করেনি। কারণ, এই জোট সীমান্ত এলাকার টেলিকম প্রতারণা দমনের অঙ্গীকার করেছিল।

অপারেশন ১০২৭ শুরু হওয়ার সময় চীনের নির্লিপ্ততা আসলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে আক্রমণ করার একটি নীরব অনুমতি ছিল। অন্য দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, এই নীরবতা মিন অং হ্লাইংয়ের শাসনের প্রতি চীনের পরোক্ষ বিরোধিতাও বটে।

মিয়ানমারে স্থিতিশীলতাকে চীন অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। কারণ, এতে চীন ধারাবাহিকভাবে তাদের অর্থনৈতিক লক্ষ্য এগিয়ে নিতে পারে। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থান দেশটিকে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল করে তোলে। এ কারণে মিন অং হ্লাইংকে পছন্দ করেন না চীন প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। সির আং সান সু চির প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ছিল। যেহেতু সু চির সরকার ছিল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত, জনপ্রিয় এবং স্থিতিশীল। ফলে চীনের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য তা ছিল নিরাপদ।

আরও পড়ুনমিয়ানমার কি পারমাণবিক বোমা বানাতে পারে১৮ জুন ২০২৪

যদিও চীনের কাছে শেষ পর্যন্ত বাস্তবতা এবং অর্থনৈতিক স্বার্থই প্রাধান্য পায়। চীন মেনে নেয় যে মিন অং হ্লাইং এখনো ক্ষমতায় রয়েছে এবং মিয়ানমারের সম্পদে প্রবেশাধিকার পেতে হলে চীনকে সামরিক জান্তার সঙ্গেই কাজ করতে হবে। তাই বেইজিং জান্তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর ওপর চাপ বাড়াতে শুরু করে।

আশ্চর্যের বিষয় হলো, মিয়ানমারের জেনারেলরা সব সময় চীনকে ভয় ও অপছন্দ করেছে। অথচ অপারেশন ১০২৭-এর সময় যখন মিন অং হ্লাইংয়ের সেনাবাহিনী টিকে থাকতে লড়াই করছিল, তখন তিনিই বেইজিংয়ের সাহায্য চান। আর চীন সাহায্য করার পর তিনি চীনকে ‘ভালো প্রতিবেশী’ এবং ‘বিশ্বস্ত বন্ধু’ বলে প্রশংসা করেন।

চীন প্রায়ই বিশ্বকে শেখায় যে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে কোনো বিদেশি দেশ হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। অথচ সবাই জানে, সিপিবি যুগ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত মিয়ানমারের রাজনীতিতে চীনের কতটা হাত রয়েছে। মিয়ানমারের সংকটকে তারা যখন ‘দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে দাবি করে, তখন একই সঙ্গে সক্রিয়ভাবে হস্তক্ষেপও করে। এভাবে চীনই হয়ে উঠেছে মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি হস্তক্ষেপকারী বিদেশি শক্তি।

আরও পড়ুনমিয়ানমার নিয়ে আমাদের কূটনৈতিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

চীন যদি মিয়ানমারের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করত, তবে দেশটি নিজের ভবিষ্যৎ নিজে গড়তে পারত। কিন্তু বেইজিং যদি দেশটির রাজনীতিতে এভাবে জড়িয়ে থাকতে থাকে, তবে তা কেবল মিয়ানমারের দুর্ভোগ বাড়াবে এবং একনায়কতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করবে। এখন মিয়ানমারের জনগণের সামনে দুটি শত্রু। সবচেয়ে কাছে আছে মিন অং হ্লাইংয়ের শাসন আর বাইরে আছে সেই বিদেশি শক্তিগুলো, যারা জান্তাকে সহায়তা করছে। বিশেষ করে চীন।

মিয়ানমারের বিপ্লবীদের এখন শুধু জান্তাকে হারালেই হবে না, চীনের হস্তক্ষেপকেও নিবৃত্ত করতে হবে। চীন হয়তো মনে করে, তারা খুব বুদ্ধিমানভাবে খেলছে। কিন্তু বাস্তবে তারা আগুন নিয়ে খেলছে। জান্তাকে সমর্থন করলে মিয়ানমারের মানুষের মধ্যে চীনবিরোধী মনোভাব আরও গভীর হবে। আর একদিন সেই আগুন চলে যেতে পারে নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

ক্যো জ্ওয়া মো দ্য ইরাবতীর নির্বাহী সম্পাদক
দ্য ইরাবতীর থেকে নেওয়া, ইংরেজিতে থেকে সংক্ষিপ্তাকারে অনূদিত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শঙ্কা ও ভীতি দূর না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়  
  • জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়, জনগণের জীবন বদলানোর বেলায় নেই
  • সুষ্ঠু-গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য সেনাবাহিনীর পূর্ণ ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োজন
  • বার্বির জয়যাত্রা: নারীর অবমাননা নাকি ক্ষমতায়নের পক্ষে
  • বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে: দীপেন দেওয়ান
  • গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পাস করলে কী হবে, ‘না’ পাস করলে কী হবে
  • মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী বিপ্লব যেভাবে নষ্ট করল চীন
  • যশোরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা: রিজভী
  • শেখ হাসিনার রায় দেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে: গণসংহতি আন্দোলন