জুলাই সনদ: গণভোটের ঝুঁকি যেখানে
Published: 5th, October 2025 GMT
রবার্ট ফ্রস্টের কবিতার সেই সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। দুটি ভিন্ন পথ। একদিকে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, অর্থনৈতিক মন্দা, বৈশ্বিক সংকটসহ অনিশ্চয়তা। অন্যদিকে ‘জুলাই সনদ’বিষয়ক ঐকমত্যে পৌঁছে নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথপরিক্রমা।
‘জুলাই সনদ’ এই বছরের জুলাই মাসেই গৃহীত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেই সময়সীমা পার হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ দুবার বাড়ানো সত্ত্বেও এখনো কোনো সমাধান আসেনি। তৃতীয় মেয়াদের সময়সীমা তথা ১৫ অক্টোবরের মধ্যে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জনগণের আস্থা ও সংস্কারের সম্ভাবনা মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে।
জাতিসংঘে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর বক্তব্যে ২০২৬ সালের মধ্য ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলেও, নিউইয়র্কে মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এক সতর্কবার্তা দিয়েছেন। তাঁর মতে, ‘কিছু শক্তি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ যে নির্বাচন যেন অনুষ্ঠিত না হয়.
বিভাজনের পথ
আশার কথা, জুলাই সনদের বিষয়বস্তু নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই। বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। স্বল্পমেয়াদি রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি এই বিতর্ককে আরও উসকে দিচ্ছে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, রাষ্ট্রের মূল কাঠামো নিয়ে অতিরিক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা দীর্ঘ মেয়াদে বিপজ্জনক হতে পারে।
জুলাই সনদের কয়েকটি বিষয়ে সংলাপে অংশগ্রহণকারী ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি। এই পরিস্থিতিতে কেউ কেউ ‘নোট অব ডিসেন্ট’–সংক্রান্ত বিষয় গণভোটের প্রস্তাব করছেন। ঐকমত্য ও ‘নোট অব ডিসেন্ট’–সংক্রান্ত বিষয় আলাদা প্যাকেজে ভোটারদের সামনে উপস্থাপন করতে বলছেন। ঐকমত্য কমিশন এই পদ্ধতি সুপারিশ করলে ভোটারদের ফাঁদে ফেলবে। গণভোটে এই প্রক্রিয়ায় কোনো প্রস্তাবের সমর্থন ও অন্যটির বিরোধিতা করার সুস্পষ্ট মাধ্যম নেই। এইভাবে বিভাজনকে বৈধতা দেওয়া একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ।
সবারই জানা, গণভোট পূর্ব-বিদ্যমান কোনো রাজনৈতিক বিষয়ে ঐকমত্যকে ভিত্তি দান করে। যেমন ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্রে ফেরার ক্ষেত্রে সব দলের সমঝোতা ছিল এবং গণভোট ঐকমত্যকেই অনুমোদন দিয়েছিল। ভোটারদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল: ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান (দ্বাদশ সংশোধন) বিল, ১৯৯১-এ রাষ্ট্রপতি সম্মতি দেবেন কি না?’ এই সংশোধনীতে সংসদীয় সরকার পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু বর্তমানের ‘নোট অব ডিসেন্ট’–এর বিষয়গুলোতে ঐকমত্য নেই। নারী আসনের মতো অগ্রগতিশীল বিষয় যদি গণভোটে আটকে যায়, তবে ভবিষ্যতে ইতিবাচক পরিবর্তনের পথ রুদ্ধ হয়ে পশ্চাৎপদ অবস্থান স্থায়ী রূপ লাভ করতে পারে।
‘জুলাই সনদে’ স্বাক্ষর করা একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। গণভোটের মাধ্যমে রাজনৈতিক বিরোধ মেটানোর চেষ্টা নতুন সংকট সৃষ্টি করবে। যুক্তরাজ্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে প্রত্যাহার (ব্রেক্সিট) বিষয়ক গণভোট অচলাবস্থা ভাঙার বদলে গভীর বিভাজন ডেকে আনে। বাংলাদেশের জন্য এমন ঝুঁকি নেওয়া কোনোভাবেই সমীচীন নয়। গণভোট দিয়ে বিভক্তিকে বৈধতা দেওয়ার পরিণতি ভয়াবহ। রাজনীতির আলাপ–আলোচনায়ই রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে উঠতে হবে।
স্মর্তব্য যে ঐকমত্য কমিশন ও তাদের বিশেষজ্ঞরা জুলাই সনদের আইনি কাঠামো দিতে ‘জুলাই ঘোষণা’র ২২ অনুচ্ছেদের অধীনে সাংবিধানিক আদেশ জারির প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু ঘোষণার ২৭ অনুচ্ছেদে বলা আছে, এটি বাস্তবায়িত হবে পরবর্তী নির্বাচনে গঠিত সংসদ দ্বারা। সুখের খবর, তাঁরা এই পথ অনুসরণ করেননি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক ডিক্রি বা আদেশের মাধ্যমে ‘জুলাই সনদ’ কার্যকর-বিষয়ক আরেকটি বিভাজনকারী প্রস্তাব রয়েছে। এমন পদ্ধতি বৈধতার ঘাটতিতে আক্রান্ত। পাকিস্তানে সামরিক শাসকগোষ্ঠী ডিক্রির মাধ্যমে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ক্ষয় করেছে। লাতিন আমেরিকায় সংসদীয় তত্ত্বাবধান ছাড়াই জারি করা প্রেসিডেনশিয়াল ডিক্রি দীর্ঘস্থায়ী সাংবিধানিক সংকটের জন্ম দিয়েছে।
সব কক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচনী ব্যবস্থা চালুর দাবিতে আন্দোলন চলছে। যদিও ‘জুলাই ঘোষণা’য় নিম্নকক্ষে প্রচলিত পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানবিষয়ক ঐকমত্য রয়েছে; এই বিষয়ে কোনো দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেয়নি। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বভিত্তিক নির্বাচনী ব্যবস্থা তখনই কার্যকর হয়, যখন একটি দেশে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী এবং নির্বাচনী সংস্থাগুলো সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো প্রেক্ষাপটে, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর কাঠামো অত্যন্ত কেন্দ্রীভূত, প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল এবং নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জনগণের আস্থা এখনো পুনরুদ্ধারের পর্যায়ে, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নতুন জটিলতা তৈরি করবে। যেমন শ্রীলঙ্কায় মিশ্র নির্বাচনী ব্যবস্থা রাজনৈতিক বিভাজন হ্রাস করতে ব্যর্থ হয়েছে। নেপালে ২০০৮ সাল থেকে বর্তমান গণ-অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার বাদে ১৩ বার সরকার পরিবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশের বর্তমান মুহূর্তে স্থিতিশীলতা অপরিহার্য। নতুন কোনো জটিলতা এই চাহিদার সম্পূর্ণ বিপরীত।
সমাধানের রাস্তা
গণ-অভ্যুত্থান দ্বারা অপসারিত শাসনের পর যেহেতু সরকারকাঠামোয় শূন্যতা থাকতে পারে না, সেহেতু ‘প্রয়োজনীয়তার নীতি’ (ডকট্রিন অব নেসেসিটি) অনুসারে এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের অধীনে সুপ্রিম কোর্টের প্রদত্ত উপদেশমূলক রেফারেন্সের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সংবিধান স্থগিত বা বাতিল করা হয়নি; এটি বলবৎ রয়েছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো বিপ্লবী সরকার নয়।
‘গাঠনিক ক্ষমতা’ (কন্সটিটিউয়েন্ট পাওয়ার) জনগণের হাতে নিহিত এবং নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ এই ক্ষমতার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনী ও সংসদীয় বৈধতাকে উপেক্ষা করার যেকোনো প্রচেষ্টা জুলাই অভ্যুত্থানের মৌলিক চেতনার সঙ্গেই সাংঘর্ষিক। গণতন্ত্রকে খর্ব না করে পুনরুদ্ধার করাই গণ-অভ্যুত্থানের লক্ষ্য। জনগণের ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রে যাওয়াই স্থায়ী সমাধানের একমাত্র পথ।
এই আলোকে জুলাই সনদের ঐকমত্যপূর্ণ অংশগুলো নির্বাচনী ইশতেহারের মাধ্যমে অথবা গণভোটে উপস্থাপন করা যেতে পারে। অন্য বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন দল তাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। জনগণ চূড়ান্ত রায় দেবেন। কোথাও সমঝোতা, কোথাও প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর সর্বোপরি জনগণই হচ্ছেন চূড়ান্ত বিচারক।
উল্লেখ্য যে জুলাই সনদের কিছু ধারা সংবিধানের মৌলিক কাঠামো (বেসিক স্ট্রাকচার) পরিবর্তন করবে। ভারতের ১৯৭৩ সালের কেসবানন্দ ভারতী মামলা এবং বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো সাধারণ সংশোধনের মাধ্যমে পরিবর্তন করা যাবে না। সনদের যেসব ধারা মৌলিক কাঠামোকে প্রভাবিত করে, সেগুলোর ব্যাপারে গণভোটের আশ্রয় নেওয়া যেতে পারে।
ভোটের মাধ্যমেই সম্ভব
বর্তমান অচলাবস্থা কেবল রাজনৈতিক নয়, অর্থনৈতিক সংকটও বটে। দেশে প্রায় ৯শতাংশ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। প্রতি চারজন উচ্চশিক্ষিত যুবকের মধ্যে একজন বেকার। মূল্যস্ফীতির চাপ শ্রমজীবী ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করেছে। দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক স্থবিরতা ও ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চাপ সামাজিক অস্থিরতার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে।
‘জুলাই সনদ’ মানুষের আত্মত্যাগ ও আকাঙ্ক্ষার জীবন্ত দলিল। জনগণের ভোটের মাধ্যমে এই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পেতে পারে। কমিশনের বর্তমান মেয়াদের মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ করা অপরিহার্য। ‘জুলাই সনদ’ চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, জনগণের মাধ্যমেই এটিকে সুরক্ষিত করতে হবে। জুলাই সনদকে কেন্দ্র করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই বাংলাদেশের অন্তর্নিহিত সম্ভাবনা বাস্তবায়নের ও গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণের একমাত্র পথ।
ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক
মতামত লেখকের নিজস্ব
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ট অব ড স ন ট জ ল ই সনদ র র জন ত ক স গণতন ত র প রক র য় ন অন ষ ঠ প রস ত ব গণভ ট র ঐকমত য জনগণ র ব ভ জন সরক র ব ষয়ক
এছাড়াও পড়ুন:
অধস্তন রাখার দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই নারীদের যথাযথ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি: বদিউল আলম মজুমদার
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো তোলা হয়েছে উল্লেখ করে কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সে আলোচনায় নারীর ন্যায্য রাজনৈতিক অধিকার পরাজিত হয়েছে। সেখানে পুরুষেরা জয়ী হয়নি। কিংবা কেউ জয়ী হয়নি। জয়ী হয়েছে পুরুষতন্ত্র।
বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, নারীদের অধস্তন রাখার দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই নারীদের যথাযথ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার চিত্র পর্যবেক্ষণবিষয়ক এক প্রতিবেদন উপস্থাপন নিয়ে আজ শনিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন বদিউল আলম মজুমদার। সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে চলতি বছরের প্রথম আট মাসে দেশে কন্যাশিশুর প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতার চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদনের তথ্য তুলে ধরেন ফোরামের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা আহসানা জামান।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত পুরুষতন্ত্র আমাদের ওপর এমনভাবে জেঁকে বসেছে এবং আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি যেদিকে অগ্রসর হচ্ছে, তাতে নারীদের প্রতি আমরা বৈষম্য করেছি। তাদের বঞ্চিত করেছি। তাদের অধস্তন করে রেখেছি। তাদের নিগৃহীত করেছি। নিপীড়িত রেখেছি।’ এটি জাতির এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিরাট প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়িয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুনআট মাসে ৩৯০ কন্যাশিশু ধর্ষণের শিকার১ ঘণ্টা আগেসরকার ইচ্ছাকৃতভাবে নারীবিষয়ক কমিশনের প্রতিবেদনকে বাদ দেয়নি উল্লেখ করে জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরামের সভাপতি বদিউল আলম মজুমদার বলেন, যেসব সুপারিশে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে না, কিংবা রাজনৈতিক দলের দ্বিমত করার সুযোগ থাকবে না, এগুলো বাস্তবায়ন করার সুযোগ সরকারের আছে।
নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সার্বিক সচেতনতার ওপর জোর দেন বদিউল আলম মজুমদার। নিজেও ব্যক্তিগতভাবে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে সোচ্চার থাকবেন বলেও জানান তিনি।
অপরাজেয় বাংলাদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক ওয়াহিদা বানুর সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের পলিসি, অ্যাডভোকেসি, ইনফ্লুয়েঞ্জিং অ্যান্ড ক্যাম্পেইনের পরিচালক নিশাত সুলতানা, আইনজীবী ফাহমিদা রিংকী প্রমুখ।