‘জুলাই সনদ বাস্তবায়নে বিলম্ব হলে আবার অভ্যুত্থান অনিবার্য’
Published: 5th, October 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সবাই একমত হলেও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে অহেতুক সাংবিধানিক বিতর্ক তুলে বারবার জটিলতা তৈরি করা হচ্ছে। সংবিধানের দোহাই দিয়ে যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করা হয়, তবে আরেকটি অভ্যুত্থান অনিবার্য হয়ে পড়বে।”
রবিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে সভা শেষে মধ্যাহ্ন বিরতিতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না: মামুনুল হক
সাভারে শহীদ ছায়াদ হত্যায় ‘ভুয়া তথ্যে’ মামলার অভিযোগ পরিবারের
দীর্ঘ বিরতির পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আবার শুরু হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী সাংবাদিক মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এবং কমিশনের সহ-সভাপতি ড.
তিনি সবাইকে সতর্ক করে বলেন, “আরেকটি অভ্যুত্থান হলে গণরোষ থেকে পালিয়ে বাঁচার জন্য জটিলতা সৃষ্টিকারীদের অনেকগুলো বড় বড় হেলিকপ্টার লাগতে পারে। সনদ মোটামুটি চূড়ান্ত হওয়ার পর এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমরা অনেকে অতিমাত্রায় আইন ও সাংবিধানিক বিতর্কের অবতারণা করছি। অথচ শেখ হাসিনা সংবিধানের দোহাই দিয়ে সংবিধানকে চরমভাবে ভুলুণ্ঠিত করে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চালিয়েছিলেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের বাধ্য হয়ে গণঅভ্যুত্থান করতে হয়েছে।”
এবি পার্টির পক্ষ থেকে তিনি প্রস্তাব দিয়ে বলেন, “গণঅভ্যুত্থান হলো জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার চূড়ান্ত প্রকাশ। সব পক্ষের মতামত সন্নিবেশিত করে জুলাই সনদকে ‘সংবিধান আদেশ’ এর মাধ্যমে জারি করতে হবে। সেই সঙ্গে সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদের আলোকে সুপ্রিম কোর্টের মতামত গ্রহণ এবং সর্বোপরি জনগণের সমর্থন যাচাইয়ের জন্য গণভোট আয়োজনের মাধ্যমে একটি সফল সমাধানে পৌঁছাতে হবে।”
এবি পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক কমিশনে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, “সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার যুক্তিতে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন পরবর্তী সংসদের ওপর ন্যস্ত করার প্রস্তাবটি অন্যায্য এবং জুলাই অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি।”
তিনি বলেন, “বিদ্যমান সংবিধানের কাঠামোর ভেতরে সরকারকে উৎখাতের কোনো ধারণা নেই। অথচ জুলাই অভ্যুত্থান কোনো সাংবিধানিক বিধান মেনে সংঘটিত হয়নি। ফলে সংবিধানের ধারাবাহিকতার যুক্তিটি দুর্বল, অগ্রহণযোগ্য এবং এটি রাষ্ট্রের কাঙ্ক্ষিত কাঠামোগত পরিবর্তন সাধনে বিলম্ব ঘটাবে, যা মোটেই কাম্য নয়।”
ব্যারিস্টার সানী আরও বলেন, “জুলাই সনদের বাস্তবায়নের প্রশ্নটি যতখানি আইনি, তার চেয়েও বেশি রাজনৈতিক। তাই, রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ও কাঠামোগত পুনর্সজ্জায় রাজনৈতিক দলগুলো ও অংশীজনদের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই।”
ঢাকা/এএএম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল ই গণঅভ য ত থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটে একমত সব দল: আলী রীয়াজ
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
রবিবার (৫ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চতুর্থ দিনের আলোচনা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, “আজকের আলোচনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একধরনের ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জনগণের সম্মতি অর্জনের জন্য গণভোটের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “দলীয় অবস্থান থেকে সরে এসে রাজনৈতিক দলগুলো একটি জাতীয় ইস্যুতে এক জায়গায় আসার জন্য সচেষ্ট হয়েছে। এটি ইতিবাচক অগ্রগতি।”
অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানান, রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি গণমাধ্যমের কাছ থেকেও কমিশন অভূতপূর্ব সহযোগিতা পেয়েছে।
চতুর্থ দিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
ঢাকা/এএএম/রফিক