শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পালের পাসপোর্ট জব্দ এবং দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

সোমবার (৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শেরপুর জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ জহিরুল কবির রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। ওই আদালতের পিপি আব্দুল মান্নান এ তথ্য জানিয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞার খবরে হাঁকডাকে মুখর চাঁদপুরে ইলিশের বাজার 

পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেদের আগ্রাসন বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি

আদালত সূত্রে জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা চন্দন কুমার পাল সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হতাহতের ছয় মামলায় উচ্চ আদালত থেকে এবং সর্বশেষ আরো একটি মামলায় গত ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা দায়রা আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে কারাগার থেকে ছাড়া পান। এরপর থেকে রাজনৈতিক অঙ্গন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। গুঞ্জন ওঠে তিনি জামিনে ছাড়া পেয়ে দেশত্যাগ করছেন।

এই গুঞ্জন ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে আবেদনে জানায়, অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে থাকা চন্দন কুমার পাল যে কোনো মুহূর্তে দেশত্যাগ করতে পারেন। তাই পাসপোর্ট জব্দ ও দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার প্রার্থনা করা হয়। 

এদিকে, চন্দন কুমার পালের জামিন ও দেশত্যাগের গুঞ্জনের ইস্যুতে জেলা জজ, পিপি ও জিপির অপসারণসহ সাত দফা দাবিতে সোমবার (৬ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে শেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যরা। 

পরিবেশ স্বাভাবিক করতে শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনকারীদের দাবিগুলো সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌঁছানোর আশ্বাস দিলে কর্মসূচি স্থগিত করে আন্দোলনকারীরা।

ঢাকা/তারিকুল/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ দ শত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রিটসের রেকর্ডভাঙা সেঞ্চুরিতে দ. আফ্রিকার জয়

ইন্দোরের গরম বিকেলে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এক ঠাণ্ডা মাথার ঝড় তুললেন তাজমিন ব্রিটস। ৩৪ বছর বয়সেও যেন সময়ের চেয়ে অনেক এগিয়ে থাকা এই ব্যাটার খেললেন এক অনবদ্য ইনিংস, ৮৭ বলে ১০১ রানের ঝলমলে সেঞ্চুরি। যা শুধু জয় এনে দেয়নি, ইতিহাসও লিখে দিয়েছে নতুন করে।

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২৩২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্রিটস ও লুইসের ব্যাটে ভর করে ৪০.৫ ওভারে জয় ছিনিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দল। এটি ছিল আইসিসি নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ-২০২৫ এর সপ্তম ম্যাচ। কিন্তু তাজমিন ব্রিটসের ইনিংস এটিকে পরিণত করেছে এক স্মরণীয় অধ্যায়ে।

আরো পড়ুন:

লো স্কোরিং ম্যাচে রংপুরের জয়, বরিশাল-রাজশাহীর পয়েন্ট ভাগাভাগি

বাংলাদেশ সিরিজ থেকে ছিটকে গেলেন সালিম

এই ইনিংস খেলার মাধ্যমে ব্রিটস ভেঙে ফেললেন ভারতের স্মৃতি মান্ধানার রেকর্ড, এক ক্যালেন্ডার বছরে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডে সেঞ্চুরির। এটি ছিল ২০২৫ সালে তার পঞ্চম সেঞ্চুরি। আর সর্বমোট সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। তাও মাত্র ৪১ ইনিংসে। যা তাকে করে তুলেছে ইতিহাসের দ্রুততম নারী ক্রিকেটার হিসেবে এই মাইলফলক ছোঁয়ার অধিকারী। আগের রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার মেগ ল্যানিংয়ের (৪৪ ইনিংসে ৭ সেঞ্চুরি)।

ব্রিটসের ইনিংসটি আরও বিশেষ হয়ে ওঠে তার পার্টনার সুনে লুইসের সঙ্গে ১৫৯ রানের অসাধারণ জুটিতে। সেই জুটিই আসলে ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দেয়। যেখানে ধীরে ধীরে নিউ জিল্যান্ডের আশা হারিয়ে যেতে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং দৃঢ়তায়। ব্রিটস ৮৯ বলে ১৫টি চার ও ১ ছক্কায় ১০১ রান করে আউট হলেও লুইস ১০টি চার ও ১ ছক্কায় অপরাজিত ৮৩ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন।

আজকের ইনিংসের মাধ্যমে তাজমিন ব্রিটস যেন বয়স ভুলে গেছেন। ৩৪ বছর বয়সেও ব্যাটে তার সেই তেজ, টেম্পারামেন্ট আর আত্মবিশ্বাস চোখে পড়ার মতো। আগ্রাসন আর স্থিরতা; দুটোকেই তিনি একসঙ্গে নিয়ে এগিয়েছেন। যে পিচে নিউ জিল্যান্ড ব্যাটাররা হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে ব্রিটস খেললেন এমন এক ইনিংস, যা ছিল নিখুঁত ব্যাটিংয়ের পাঠ। এটি তার শেষ পাঁচ ওয়ানডেতে চতুর্থ সেঞ্চুরি। যা এক অভূতপূর্ব ধারাবাহিকতা এবং যা নারী ক্রিকেটে খুব কমজনই দেখাতে পেরেছেন।

এই ইনিংস কেবল রেকর্ড নয়, দক্ষিণ আফ্রিকা নারী দলের জন্য এক মানসিক উত্থান। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মাত্র ৬৯ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর সমালোচনায় মুখ থুবড়ে পড়েছিল তারা। কিন্তু ব্রিটসের এই ব্যাটিং দলটিকে ফিরিয়ে এনেছে আত্মবিশ্বাসের জায়গায়। তার ব্যাটে যে দৃঢ়তা, যে তাড়না; তা পুরো দলের ভেতর নতুন এক প্রাণসঞ্চার করেছে।

নিউ জিল্যান্ড ম্যাচটি শুরু করেছিল বেশ দৃঢ়ভাবে। একসময় তাদের স্কোরবোর্ডে ৩ উইকেটে ছিল ১৮৭ রান। মনে হচ্ছিল বড় সংগ্রহ আসছে। কিন্তু আফ্রিকান স্পিনার ননকুলুলেকো ম্লাবার নেতৃত্বে বোলাররা দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত কিউই নারীরা অলআউট হয় ২৩১ রানে। শেষ ৭ উইকেট তারা মাত্র ৪৪ রানের ব্যবধানে। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৮৫ রান করেন সোফি ডিভাইন। ৪৫ রান আসে ব্রুকি হ্যালিডের ব্যাট থেকে। এছাড়া জর্জিয়া পিলমার ৩১ ও অ্যামেলিয়া কের করেন ২৩ রান।

বল হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্লাবা ১০ ওভারে ৪০ রান দিয়ে ৪টি উইকেট নেন।

লক্ষ্য তাড়া করতে দক্ষিণ আফ্রিকার অবশ্য খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। ৬ উইকেটে জয়, হাতে রইল আরও ৯.১ ওভার।

এ নিয়ে প্রথম দুই ম্যাচেই হার মানল নিউ জিল্যান্ড। অন্যদিকে প্রথম ম্যাচ বাজেভাবে হেরে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল দক্ষিণ আফ্রিকা।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ