জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানার একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার আসামির কাছ থেকে আইফোনসহ দুটি দামি মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছিল। তবে সেটা জব্দ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিষয়টি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

৪ অক্টোবর জয়পুরহাটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো.

সোহেল রানা এ আদেশ দেন। আজ বুধবার প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. সাঈদ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গোপীনাথ গ্রামে নিজ বাড়িতে ছুটিতে আসেন মালয়েশিয়াপ্রবাসী সোহেল রানা। ৪ সেপ্টেম্বর ভোরে ৮ থেকে ৯ জনের একটি ডাকাত দল জানালার গ্রিল কেটে বাড়িতে ঢুকে সোহেল রানা ও তাঁর বাবা রুবেল হোসেনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে হাত–পা বেঁধে ফেলে। ঘর থেকে ২৯ হাজার টাকা ও ১৭ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে পালিয়ে যায় তারা।

এ ঘটনায় আক্কেলপুর থানায় একটি মামলা হয়। পরে মামলাটি পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) হস্তান্তর করা হয়। ২ অক্টোবর ঢাকার দক্ষিণ বনশ্রীর একটি ফ্ল্যাট থেকে লুট হওয়া মালামালসহ ডাকাত দলের সরদার কামাল গাজীকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়।

জব্দ তালিকা প্রস্তুতকারী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম।

আদালত সূত্র জানায়, গ্রেপ্তারের সময় আসামি কামাল গাজীর কাছে চারটি মুঠোফোন ছিল। কিন্তু জব্দের তালিকায় দুটি মুঠোফোনের কথা উল্লেখ করা হয়।

আদালত আদেশে বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৫১ ধারা অনুযায়ী সব মালামাল জব্দ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হয়। কিন্তু জব্দকারী ও তদন্ত কর্মকর্তা তা করেননি। এতে প্রতীয়মান হয়, তাঁরা অসৎ উদ্দেশ্যে মূল্যবান দুটি ফোন জব্দ তালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন। তাঁরা সেগুলো আত্মসাৎ করেছেন কি না, তা তদন্তের জন্য পিবিআইসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন আদালত।

আদালতের আদেশের বিষয়ে জানেন না বলে দাবি করেছেন অভিযুক্ত এসআই আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আসামি কামাল গাজীর কাছে যে চারটি ফোন পাওয়া গেছে, সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। কামাল গাজীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ২৪টি মামলা আছে।

এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার এ কে এম মনিরুল ইসলাম।

এসআই আমিনুল ইসলাম এর আগে আক্কেলপুর থানায় কর্মরত ছিলেন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে তাঁর বিরুদ্ধে ঘুষ নিয়ে দুই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। পরে তাঁকে ডিবিতে বদলি করা হয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইসল ম তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা 

বন্দরে মাদ্রাসা ছাত্রীকে  যৌন হয়রানি  ঘটনাকে  পুঁজি করে   আটক বানিজ্যের  তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকের ওপর সন্ত্রাসী  হামলার ঘটনায়  সোর্স আক্তার সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে থানায়  মামলা  হয়েছে।

এ ব্যাপারে  দৈনিক  মানবজমিন পত্রিকার বন্দর প্রতিনিধি আহত  নূরুজ্জামান মোল্লা বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন৷ এর আগে  গত  বৃহস্পতিবার  ( ২৫ সেপ্টম্বর) দুপুরে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের ভেতরে এ হামলার ঘটনা ঘটে।

এছাড়াও চিড়ইপাড়া এলাকায় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন চলাচলের রাস্তা দখল করে  দোকান ঘর নির্মাণে বাঁধা দেয়ায় মোবারক নামে ব্যক্তিকে কুপিয়ে জখম করেছে সোর্স আক্তার হোসেন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। বর্তমানের মামলাটি নারায়ণগঞ্জ পিবিআই'র কাছে তদন্ত করছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, উপজেলার ধামগড় ইউপির  কামতাল ডাক সমাজ কবরস্থান হাফেজিয়া মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে  যৌন নিপীড়নের ঘটনায়  গত বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টম্বর) সকালে সহকারী  শিক্ষক হাফেজ ফুসাইন আহাম্মেদ মাহফুজ (২৪)কে  পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে উত্তেজিত এলাকাবাসী।

পরবর্তীতে কামতাল তদন্ত কেন্দ্রের  এসআই জহিরুল ইসলাম ওই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুস ছাত্তারকে  ডেকে  নিয়ে একটি কক্ষে আটক করে রাখে। প্রিন্সিপাল মামলার আসামি না হওয়ায় তাকে আটক করে রাখার  বিষয়টি  ওই ছাত্রীর দাদা নূরুল হক সাংবাদিকদের ফোন করে জানিয়েছেন।

পরে সাংবাদিক নূরুজ্জামান মোল্লা,  সাংবাদিক সানাউল্লাহ মুন্সী, মনির হোসেন ও সাংবাদিক সুমন হাসান  কামতাল তদন্ত কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে  প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুস ছাত্তারকে  আটকের বিষয়ে  এসআই জহিরুল ইসলামের কাছ থেকে   জানতে চাওয়া হয়।

এসময় পুলিশের  সোর্স আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বলে ছাত্তার মাওলানা বিষয়টি শেষ করে দেওয়া  হয়েছে । এক পর্যায়ে এসআই জহিরুলের কক্ষে এবং তার সামনে এলোপাতাড়ি  কিলঘুষিতে মূখে রক্তাক্ত জখম হয়। এখবর পেয়ে  স্বজনরা সাংবাদিক নূরুজ্জামান মোল্লাকে  উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।

এঘটনায় সাংবাদিক নূরুজ্জামান মোল্লা বাদী হয়ে বন্দর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন  পরবর্তীতে  গত ২ অক্টোবর  অভিযোগটি আমলে নিয়ে থানা মামলা রেকর্ড করেন।

এলাকাবাসী জানান, চিড়ইপাড়া কলোনীর  মেইন সড়ক হইতে আমিনুল মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন চলাচলের রাস্তা দখল করে দোকান নির্মাণ কাজ শুরু  সোর্স আক্তার।  

এসময়  ধামগড় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেনের বরাত দিয়ে মোবারক হোসেন তার পরিবারের লোকজন রাস্তা দখলে বাধা দেয়ায় তাদেরকে কুপিয়ে জখম করেছে পুলিশের সোর্স  আক্তার ও তার লোকজন।

এ ঘটনায় আদালতে দায়েরকৃত মামলাটি নারায়ণগঞ্জ পিবিআই'র কাছে তদন্তাধীন।  আক্তার পুলিশের  সোর্স  হিসাবে এলাকায়  পরিচিত।  

এখন নাগরিক টিভি সাংবাদিক পরিচয়ে ছিনতাই, চাঁদাবাজি প্রতারণা সহ চিড়ইপাড়া কলোনী এলাকার মাদক কারবারি নিয়ন্ত্রণ সহ নানান অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি লিয়াকত আলী বলেন, সাংবাদিক নূরুজ্জামান মোল্লা'র ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে।  আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।   
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হবিগঞ্জে চোরাই মুঠোফোন উদ্ধারে গিয়ে হামলার শিকার ৫ পুলিশ সদস্য
  • কে এই ‘এসআই মাহফুজ আলম’
  • বগুড়ায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় এসআই প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন
  • বন্দরে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা 
  • হাতকড়াসহ আ.লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার ২১