ডাক সঞ্চয়পত্র জনপ্রিয় করতে উদ্যোগ: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
Published: 8th, October 2025 GMT
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, “ডাক জীবন বিমা ও ডাক সঞ্চয়পত্রকে আরো সহজ ও জনপ্রিয় করতে বিভাগ কাজ করছে। সঞ্চয়পত্রের সীমা বৃদ্ধি ও বিক্রয় প্রক্রিয়া সহজ করতে শিগগিরই অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেওয়া হবে।”
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত ডাক ভবনে বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “ই–কমার্স খাতে প্রতারণা ও অর্থ লোপাট ঠেকাতে ‘সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম’ চালু করতে যাচ্ছে সরকার। নতুন এই ডিজিটাল ব্যবস্থায় ক্রেতার দেওয়া অর্থ সরাসরি বিক্রেতার কাছে না গিয়ে একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টে সংরক্ষিত থাকবে। পণ্য সঠিকভাবে ডেলিভারি ও যাচাই–বাছাই সম্পন্ন হওয়ার পর ওই অর্থ বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে পৌঁছাবে।”
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং বাংলাদেশ ডাক বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হচ্ছে।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “দেশের শহর ও গ্রামে ডিজিটাল অ্যাড্রেস ম্যানেজমেন্ট ও জিও-ফেন্সিং চালুর বিষয়টি সময়ের দাবি। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ বেসরকারি ই–কমার্স প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। এর মাধ্যমে নাগরিকদের ঠিকানা ও তথ্য নিরাপদভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করা সম্ভব হবে।”
তিনি জানান, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ডাক আইন হালনাগাদ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিগগিরই অ্যাড্রেস ম্যানেজমেন্ট পাইলট প্রোগ্রাম চালু হবে, যা সরকারি–বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করা হবে।
বিশেষ সহকারী বলেন, “জাতীয় লজিস্টিক্স নীতিমালা–২০২৪ এর অংশ হিসেবে শতভাগ লজিস্টিক্স ডিজিটাল ট্র্যাকিং বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে ডাক বিভাগ। এ লক্ষ্যে বিভাগের বর্তমান ডিএমএস (ডিজিটাল মেইল সিস্টেম) আরো উন্নত করা হচ্ছে, যাতে সার্ভার ডাউনসহ কোনো প্রযুক্তিগত সমস্যা না থাকে।”
ই–কমার্স খাতে আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার যে পদক্ষেপ নিচ্ছে, তা তুলে ধরে ফয়েজ তৈয়্যব বলেন, “প্রতারণা রোধে সরকার একটি নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে সেন্ট্রাল লজিস্টিক ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম। এই প্ল্যাটফর্মে ক্রেতার অর্থ সরাসরি বিক্রেতার অ্যাকাউন্টে না গিয়ে একটি ভার্চুয়াল অ্যাকাউন্টে থাকবে এবং পণ্য ডেলিভারির পর যাচাই–বাছাই শেষে অর্থ বিক্রেতার কাছে যাবে। এতে লোভনীয় অফারের নামে প্রতারণা ও অর্থ লোপাট বন্ধ হবে বলে আশা করছি।”
তিনি জানান, গত অর্থবছরে ডাক বিভাগ তার ইএমটি সার্ভিসসহ বিভিন্ন সেবার মাধ্যমে প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকার লেনদেন সম্পন্ন করেছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও লজিস্টিক সেবা জোরদারে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আব্দুন নাসের খান এবং মহাপরিচালক এস এম শাহাব উদ্দীন।
ঢাকা/এএএম/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ল য টফর ম অ য ক উন ট উদ য গ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্পে জাহাঙ্গীরনগরের নতুন হলে ফাটল, ঝুঁকির কিছু নেই বলছেন প্রকল্প পরিচালক
গতকাল শুক্রবারের ভূমিকম্পে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলসহ কয়েকটি হলে ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে হলের দেয়াল বা মেঝেতে ফাটলে ঝুঁকিপূর্ণ কিছু নেই বলে জানিয়েছেন অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) পরিচালক নাসির উদ্দীন।
গতকাল সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূকম্পন অনুভূত হয়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৫ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী।
ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা তাঁদের স্ব স্ব হলের বিভিন্ন ফাটলের ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। এসব পোস্টে তাঁরা নতুন হলগুলো নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। এরপর গতকাল বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প কার্যালয়, সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও জাকসুর নেতৃবৃন্দ সরেজমিনে হলগুলো পরিদর্শন করেন। তবে হলগুলোতে যে ফাটল দেখা গিয়েছে তাতে কোনো ঝুঁকি নেই বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক নাসির উদ্দীন।
আরও পড়ুনঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভূমিকম্প, কেন্দ্রস্থল নরসিংদীর মাধবদী, আতঙ্কে অনেকে রাস্তায়২১ নভেম্বর ২০২৫আজ শনিবার সকালে নাসির উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হলগুলো পরিদর্শন করেছি। এর মধ্যে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ফাটল দেখেছি। তবে সেগুলো মেঝেতে ফাটল। একটি ভবনের ফ্লোরে ও দেয়ালে ফাটল ধরতেই পারে। যদি কোনো ভবনে স্ট্রাকচারাল এলিমেন্ট ঠিক থাকে (কলাম, বিম, ভিত) তাহলে সেগুলোতে কোনো ঝুঁকি নেই। ভূমিকম্পে যেসব ফাটল ধরেছে সেগুলো স্ট্রাকচারাল এলিমেন্টজনিত সমস্যা নয়। তারপরও আমরা প্রশাসনকে বলেছি, যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে বুয়েটের এক্সপার্ট টিম দিয়ে খতিয়ে দেখা যেতে পারে। সব কাজই স্বচ্ছভাবে হয়েছে।’
আরও পড়ুনশ্রীপুরে ভূমিকম্পে কারখানা থেকে নামার সময় হুড়োহুড়িতে দেড় শতাধিক শ্রমিক আহত২১ নভেম্বর ২০২৫বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ভূমিকম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হলের নবম তলার ফ্লোরে ফাটল দেখা গেছে। এ ছাড়া জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হলে ৬ তলার বি-ব্লকের ওয়াশরুমে এবং ৭ তলার ফ্লোরে ফাটল দেখা গেছে। নবনির্মিত ফজিলতুন্নেসা হলেও ফাটল দেখা দিয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ১০ তলা বিশিষ্ট ৬টি আবাসিক হলের নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে। এসব নবনির্মিত হলের মধ্যে ভূমিকম্পে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও ফজিলতুন্নেসা হলের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া ২০১৮ সালে নির্মাণকাজ শেষ হওয়া বেগম সুফিয়া কামাল হলেও অনেক স্থানে ফাটল দেখা গেছে। নবনির্মিত এসব বহুতল ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
ভূমিকম্পের পর হল পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদের (জাকসু) সমাজসেবা সম্পাদক আহসান লাবিব। তিনি বলেন, সামান্য কয়েক সেকেন্ডের ভূমিকম্পে নতুন হলগুলোতে এই পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে কী পরিমাণ ক্ষতি হতে পারে, চিন্তাই করা যাচ্ছে না। এসব হল নির্মাণে ব্যাপক লুটপাট এবং দুর্নীতি হয়েছে, না হলে নতুন হলগুলোতে ফাটল ধরার কথা নয়।
আরও পড়ুনভূমিকম্পে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন তিন হলে ফাটল, নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ২২ ঘণ্টা আগেসার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও ইঞ্জিনিয়ারিং কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক সোহেল আহমেদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।