মনীষী অতীশ দীপঙ্করের জ্ঞান, দর্শন, ধর্মচর্চা, কর্ম, শিক্ষা আরো বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দিতে জন্মভূমি বাংলাদেশে তার নামে একটি বিশ্ব মানের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

শুক্রবার (১০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ঢাকা জেলার আশুলিয়ায় বোধিজ্ঞান কেন্দ্র (বৌদ্ধ বিহার) আয়োজিত কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন নিয়ে সব সংশয় ধুয়ে মুছে গেছে: প্রেস সচিব 

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় ১১ অধ্যাদেশ, ৩ প্রস্তাব অনুমোদন

তিনি বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শন চর্চা এবং প্রচার-প্রসারের ক্ষেত্রে পূর্ব এশিয়া তথা বিশ্বজুড়ে স্মরণীয় নাম অতীশ দীপঙ্কর। তিব্বতীরা তাকে অতীশ উপাধিতে ভূষিত করেন, যার অর্থ ‘শান্তি’। তিনি একাধারে ধর্মগুরু, শিক্ষক, পণ্ডিত, লেখক, দার্শনিক, বিতার্কিক এবং বাগ্মী। বাংলাদেশের সন্তান হিসেবে মনীষী অতীশ দীপঙ্করের কীর্তি ও বিশ্বব্যাপী খ্যাতিতে আমরা গর্বিত।

উপদেষ্টা বলেন, মনীষী অতীশ দীপঙ্করের জ্ঞান, দর্শন, ধর্মচর্চা, কর্ম, শিক্ষা আমাদের সারাদেশে আরো বিস্তৃত পরিসরে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন। সেজন্য তার জন্মভূমি বাংলাদেশে অতীশ দীপঙ্করের নামে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা করা সময়ের দাবি। বৌদ্ধ ধর্মের মূলনীতি হলো অহিংসা, সাম্য, মৈত্রী ও প্রীতির বন্ধনে সবাইকে আবদ্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যে বুদ্ধের অনুসারীরা কাজ করে যাচ্ছেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে সর্বদা বদ্ধপরিকর। তিনি জানান, দেশের সকল বৌদ্ধ বিহারে আশ্বিনী পূর্ণিমার পর হতে কার্তিকী পূর্ণিমা পর্যন্ত মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান কর্ম শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত শ্রীলঙ্কার হাইকমিশনার ধর্মপাল বীরাক্কোদি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী দয়াল কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শুভাশীষ চাকমা, কর্নেল দিদারুল আলম প্রমুখ।

ঢাকা/এমআর/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

আসামে নিষিদ্ধ হলো বহুবিবাহ, আইন ভাঙলে ১০ বছরের জেল  

বহুবিবাহ প্রতিরোধে আসামের বিধানসভায় বৃহস্পতিবার পাস হয়েছে  ‘আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’। এই আইনের মাধ্যমে ভারতের এই  রাজ্যে বহুবিবাহকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

তবে তফসিলি জনজাতি (এসটি) এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকা যেমন বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন, ডিমা হসাও, করবি আংলং ও পশ্চিম করবি আংলং এই আইনের আওতার বাইরে থাকবে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা আইন পাশ হওয়ার পর বলেছেন, দিনটি ঐতিহাসিক। আসামের নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই আইন চালু করা হল। ‌

বৃহস্পতিবার আসা বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিলটি তোলা হয়। বিলটি পাশ হওয়ার আগে তুমুল বিতর্ক হয়। একাধিক মুসলিম বিধায়ক দাবি করেন, এর ফলে সংখ্যালঘুদের ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।‌ তাদের বক্তব্য, এই আইনে অনেক জটিলতা তৈরি হবে। কারণ মুসলিম পার্সোনাল ল রাজ্য আইনের ঊর্ধ্বে। রাজ্যের আইনে যা নিষিদ্ধ সেটাই কেন্দ্রীয় আইনে বৈধ। মামলা হলে আদালত রাজ্যের আইনকে গ্রাহ্য করবে না।

জবাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা বিধানসভায় ঘোষণা করেন, যদি মুসলিম পার্সোনাল ল আসামের আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করা হবে।‌ তখন আর ব্যক্তিগত আইনের সুবিধা পাওয়া যাবে না। 

মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, “বিরোধীরা আমাকে আটকাতে না পারলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও বলবৎ হবে আসামে।”

প্রসঙ্গত বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে গত বছর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হয়েছে। ‌ উত্তরপ্রদেশ,গোয়া মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার ভাবনা আছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোর।

এই বিলের আওতায় যারা অপরাধী বলে চিহ্নিত হবেন, তাদের জন্য কড়া শাস্তির বিধান বেঁধে দিয়েছে হিমন্তের সরকার। পাশ হওয়া বিল অনুযায়ী, কেউ যদি একটি বিবাহ থাকা সত্ত্বেও আরো একটি বিয়ে করেন, তা হলে তার সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। আর কেউ যদি তার দ্বিতীয় বিয়ে লুকানোর চেষ্টা করেন, তাহলে সেই অভিযুক্তের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। পাশাপাশি, এই গোটা বিবাহ প্রক্রিয়ায় জড়িত কাজি, পুরোহিত, গ্রামপ্রধান, পিতামাতা কিংবা আইনি পরামর্শদাতা, যারা সেই বহুবিবাহে উৎসাহ জোগাবেন, তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এদিন বিল পাশের পর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ মুসলিম সমাজের মেয়েদের জন্য অভিশাপের সমান। দেশের নাগরিক হিসাবে তারাও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার পেয়েছেন। কিন্তু এই রীতি তাদের সেই মর্যাদা ও অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।”
 

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ