শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মাচাদো কি আসলেই শান্তিকামী?
Published: 11th, October 2025 GMT
ভেনিজুয়েলার গণতন্ত্র কর্মী মারিয়া করিনা মাচাদোকে ২০২৫ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে তিনি কি আসলেই শান্তিকামী? সমালোচকদের ভাষ্য, মাচাদো ইসরায়েল এবং গাজায় বোমাবর্ষণকে সমর্থন করেন। শুধু তাই নয়, তিনি তার দেশে সরকার উৎখাতের জন্য বিদেশী হস্তক্ষেপের আহ্বানও জানিয়েছিলেন।
নোবেল পুরস্কার কমিটি মাচাদোকে ‘শান্তির রক্ষক’ হিসেবে প্রশংসা করেছে, যিনি ক্রমবর্ধমান অন্ধকারের মধ্যে ভেনিজুয়েলায় গণতন্ত্রের শিখাকে জ্বালিয়ে রেখেছেন। কমিটির সভাপতি জর্গেন ওয়াটনে ফ্রাইডনেস মাচাদোকে ভেনিজুয়েলার ‘একসময় বিভক্ত রাজনৈতিক বিরোধী দলের মূল, ঐক্যবদ্ধ ব্যক্তিত্ব’ বলে অভিহিত করেছেন।
নোবেল কমিটি নাম ঘোষণার পরপরই সমালোচকরা মাচাদোর ইসরায়েল এবং বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর লিকুদ পার্টির প্রতি তার সমর্থন ব্যক্ত করা পুরনো পোস্টগুলো শেয়ার করেছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, গাজায় ইসরায়েলের ‘গণহত্যার’ প্রতি সমর্থন ছিল এই শান্তিকামী নেত্রীর।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আশ্চর্যজনক হামলার পর মাচাদো ইসরায়েলের প্রতি সংহতি প্রকাশ করলেও, তিনি কখনও ফিলিস্তিনিদের গণহত্যার ঘটনায় তার সহানুভূতি প্রকাশ করেননি। বছরের পর বছর ধরে তার পোস্টগুলো নিশ্চিত করে যে তিনি ইসরায়েলি যুদ্ধবাজ নেতা নেতানিয়াহুর একজন মিত্র।
মাচাদো এক পোস্টে বলেছিলেন, “ভেনিজুয়েলার সংগ্রাম ইসরায়েলের সংগ্রাম।” দুই বছর পর আরেক পোস্টে তিনি ইসরায়েলকে ‘স্বাধীনতার প্রকৃত মিত্র’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এমনকি মাচাদো ক্ষমতায় এলে ভেনিজুয়েলার দূতাবাস তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে স্থানান্তর করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন।
নরওয়ের একজন আইনপ্রণেতা বজর্নার মক্সনেস জানিয়েছেন, মাচাদো ২০২০ সালে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির সাথে একটি সহযোগিতা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। অথচ এই লিকুদ পার্টি ‘গাজায় গণহত্যার’ জন্য দায়ী। তাই মাচাদোকে দেওয়া এই পুরস্কার নোবেলের উদ্দেশ্যের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর শাসনের অবসান ঘটনাতে বিদেশী হস্তক্ষেপের আহ্বানও জানিয়েছিলেন মাচাদো। ২০১৮ সালে, তিনি তার দেশে শাসন পরিবর্তনের জন্য ইসরায়েল এবং আর্জেন্টিনার সমর্থন চেয়ে একটি চিঠি লিখেছিলেন।
মাচাদো অনলাইনে সেই চিঠির একটি অনুলিপি শেয়ার করেছিলেন। সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন, “আজ, আমি আর্জেন্টিনার প্রেসিডেন্ট এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিঠি পাঠাচ্ছি, যাতে তারা মাদক পাচার এবং সন্ত্রাসবাদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত অপরাধী ভেনিজুয়েলার শাসনব্যবস্থা ভেঙে ফেলার জন্য তাদের শক্তি এবং প্রভাব প্রয়োগ করতে পারেন।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় হামাসের সঙ্গে গোত্রের সংঘর্ষ, নিহত অন্তত ২৭
ফিলিস্তিনের গাজা নগরীতে হামাসের নিরাপত্তা বাহিনী ও দুগমুশ গোত্রের সশস্ত্র সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২৭ জন নিহত হয়েছেন। দক্ষিণ গাজা নগরীতে জর্ডানিয়ান হাসপাতালের কাছে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন শাখার সদস্যরা নগরীর ভেতরে অবস্থানরত সশস্ত্র গোষ্ঠীর একদল সদস্যকে ঘিরে ফেলে। তাদের গ্রেপ্তারের সময় উভয় পক্ষ তীব্র লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় নিরাপত্তা বাহিনীর আটজন সদস্য নিহত হন।
স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে দুগমুশ গোত্রের ১৯ সদস্য এবং হামাসের আটজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তেল আল-হাওয়ার একটি আবাসিক ভবনে দুগমুশ যোদ্ধারা অবস্থান করছেন। এমন খবর পেয়ে হামাসের তিন শতাধিক যোদ্ধা সেখানে অভিযান চালাতে গেলে সংঘর্ষের শুরু হয়।
দুপক্ষের তীব্র গোলাগুলির মধ্যে ভয় আর আতঙ্কে অসংখ্য পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তাদের অনেকেই ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার কারণে একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
সেখানকার একজন বাসিন্দা বলেন, ‘মানুষ এবার ইসরায়েলি হামলা থেকে পালাচ্ছিল না। তারা পালাচ্ছিল নিজেদের লোকদের কাছ থেকে।’
দুগমুশ গাজার সবচেয়ে প্রভাবশালী গোত্রগুলোর একটি। হামাসের সঙ্গে তাদের দীর্ঘদিনের বিরোধপূর্ণ সম্পর্ক। এর আগেও তাদের সশস্ত্র সদস্যরা একাধিকবার হামাসের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা থেকে জিম্মিমুক্তি শুরু কখন, কীভাবে১৩ ঘণ্টা আগেগাজায় হামাস পরিচালিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মাঠে কাজ করছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, প্রতিরোধ আন্দোলনের বাইরে যেকোনো ধরনের সশস্ত্র কর্মকাণ্ডের বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সংঘর্ষের জন্য উভয় পক্ষই একে অপরকে দায়ী করেছে।
হামাসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দুগমুশের সদস্যরা তাদের দুজন যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তাদের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত পাঁচজন হামাস সদস্য। এর পরিপ্রেক্ষিতেই তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়।
আরও পড়ুনমিসরে ট্রাম্পের ‘শান্তি’ সম্মেলনে থাকছে না হামাস-ইসরায়েল২৬ মিনিট আগেতবে দুগমুশ গোত্রের একটি সূত্র স্থানীয় গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, হামাস যোদ্ধারা এক সময় জর্ডানিয়ান হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহৃত একটি ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করে। ঘরবাড়ি ধ্বংস হওয়ার পর সম্প্রতি আল-সাব্রা পাড়া থেকে সেখানে আশ্রয় নিয়েছিল তাদের গোত্রের বেশ কিছু পরিবার।
ওই সূত্রের দাবি, হামাস পরিবারগুলোকে উচ্ছেদ করে সেখানে তাদের বাহিনীর নতুন ঘাঁটি বানাতে চেয়েছিল।