বেসরকারি শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ভবনের একাডেমিক কার্যক্রমের উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়েছে। ৯ অক্টোবর বিকেলে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত, দোয়া অনুষ্ঠান ও ফিতা কেটে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করা হয় দ্বিতীয় ভবনের একাডেমিক কার্যক্রমের।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এর মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.

ইমামুল কবীর শান্ত’র স্বপ্নের আরেক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে। নতুন ভবনের এই অংশে এএমএমটির সুইং ল্যাব ও ডিসপ্লে সেন্টার, কম্পিউটার ল্যাব, ফাইন আর্টের পেইন্টিং ল্যাব, ক্যানটিনসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

রাজধানীর উত্তরায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. শাহ-ই-আলম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান চিত্রশিল্পী অধ্যাপক মোস্তাফিজুল হক। এ সময় শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য আহসানুল কবীর, বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যান্য সদস্য, শান্ত-মারিয়াম ফাউন্ডেশন ও সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পাড় মশিয়ূর রহমান, শান্ত-মারিয়াম হোংহে কনফুশিয়াস ক্লাসরুমের চীনা ও বাংলাদেশি পরিচালক জাংশি ফ্লিপ ও মহিউদ্দিন তাহেরসহ শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান ও শিক্ষক-কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুনঅক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রি অনলাইন কোর্স, ঘরে বসেই শিখুন নতুন দক্ষতা০৫ অক্টোবর ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনে হরিণ শিকার রোধে টানা অভিযান, তিন দিনে সাড়ে ৯ হাজার ফুট ফাঁদ উদ্ধার

মোংলার সুন্দরবনসংলগ্ন পশুর নদের তীরের কানাইনগর এলাকা। চারদিকে নোনা হাওয়া আর নদীর গন্ধে ভরা নীরবতা। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সেই নীরবতা ভাঙে কোস্ট গার্ড ও পুলিশের যৌথ অভিযানে।

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে স্থানীয় একটি ঝুপড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় ৩২ কেজি হরিণের মাংস, দুটি মাথা, আটটি পা ও আড়াই হাজার মিটার লম্বা ফাঁদ। ঘটনাস্থল থেকেই একজন শিকারিকে আটক করা হয়।

সুন্দরবনের বিভিন্ন টহলফাঁড়ি এলাকায় টানা অভিযান চলছে। গত তিন দিনে উদ্ধার করা হয়েছে ৯ হাজার ৪১০ ফুট ফাঁদ।

এ বিষয়ে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম–উল–হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আটক শিকারির সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে সুন্দরবনের বন্য প্রাণী শিকারের নানা আলামত। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান চলবে।’

বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার বন বিভাগের চরপুটিয়া টহলফাঁড়ির বনরক্ষীদের টহলে গহিন জঙ্গলের চরের খাল এলাকা থেকে উদ্ধার হয় ৮০০ ফুট লম্বা হরিণ শিকারের পেতে রাখা ফাঁদ। একই দিনে হুলার ভারানী ও সূর্যমুখী খালসংলগ্ন বনাঞ্চলে হেঁটে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় আরও ১৩৫ ফুট লম্বা ফাঁদ।

এর আগের দিন মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চরপুটিয়া ফাঁড়ির টহলে উদ্ধার হয় আরও দুটি ফাঁদ—একটি ৫০০ ফুট লম্বা, আরেকটি বস্তায় ভরা অবস্থায়। একই দিনে শেলার চর এলাকার ভাঙ্গার খাল থেকে উদ্ধার করা হয় ৩০০ ফুট লম্বা ফাঁদ।

আরও পড়ুনসুন্দরবনের খালে নৌকায় ‘হিমায়িত’ ৪৮ কেজি হরিণের মাংস উদ্ধার১৪ অক্টোবর ২০২৫

সোমবার শেলার চর টহলফাঁড়ির বনরক্ষীরা আদানি–গুড়গুড়ি বনাঞ্চলে টহলের সময় কেওড়া ও গরানগাছের মাঝখানে মালা ফাঁদ দেখতে পান। প্রায় ২০০ ফুট লম্বা এসব ফাঁদ জব্দ করে ধ্বংস করা হয়। একই দিনে জোংড়া টহলফাঁড়ির বনাঞ্চল থেকে উদ্ধার হয় আরও ২৫০ ফুট ফাঁদ। তার আগের দিন ২৩ নভেম্বর মুচিরদোয়ানি খালের পাশের বনাঞ্চল থেকে ১৫০ মিটার ফাঁদ উদ্ধার করে বন বিভাগ।

স্থানীয় গ্রামবাসী ও শিকারি হিসেবে পূর্বে দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সুন্দরবনের যেখানে কেওড়াগাছ বেশি, সেসব এলাকায় হরিণ চলাচল তুলনামূলক বেশি। শিকারিরা দড়ি দিয়ে ‘ডোয়া’ নামে লম্বা ফাঁদ তৈরি করে হরিণের চলার পথে রাখে। এতে চলাফেরার সময় হরিণ আটকা পড়ে। ‘ছিটকে ফাঁদ’ নামে আরেক ধরনের ফাঁদে ধরা পড়ে হরিণ। শিকারিরা সাধারণত দড়ির বোঝা নিয়ে বনে ঢোকে এবং ভেতরেই ফাঁদ তৈরি করে। পরে এসব ফাঁদ বস্তায় ভরে মাটির নিচে লুকিয়ে রাখা হয়, বারবার ব্যবহারের জন্য।

আরও পড়ুনসুন্দরবনে ফাঁদে আটকে ছটফট করছিল প্রাণীটি১৯ অক্টোবর ২০২৫

সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, এখন ‘প্যারালাল লাইন সার্চিং’ পদ্ধতিতে সারিবদ্ধভাবে বনের ভেতর হেঁটে টহল দেওয়া হয়, যাতে চিরুনির মতো অগ্রসর হয়ে ফাঁদ দ্রুত শনাক্ত করা যায়। বাঘ–কুমিরের ঝুঁকি থাকলেও নিয়মিত কাউন্ট ও কথা বলতে বলতে বনের ভেতর দিয়ে এগোলে নিরাপত্তা থাকে। তিনি বলেন, ‘হরিণকে বাঁচাতেই হবে, না হলে বাঘও বাঁচবে না। হেঁটে টহল দেওয়ায় অনেক ফাঁদ আগেই শনাক্ত হচ্ছে, এতে বহু হরিণ রক্ষা পাচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনসংলগ্ন এলাকা থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ১৮ বস্তা শামুক-ঝিনুক উদ্ধার
  • সুন্দরবনে হরিণ শিকার রোধে টানা অভিযান, তিন দিনে সাড়ে ৯ হাজার ফুট ফাঁদ উদ্ধার