এনসিপির কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানির (নেসকো) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে নিজের ফেসবুক আইডিতে পোস্ট করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। এতে ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে যে উপমা ব্যবহার করেছেন, সেটা করা উচিত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

আজ রোববার সন্ধ্যায় সারজিস আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে এই পোস্ট করেন।

সারজিস আলম ফেসবুক পোস্টে লেখেন, বিগত এক মাসে পঞ্চগড় জেলায় এনসিপির তিনটি আয়োজনেই তিনি যখন বক্তব্য দিতে শুরু করেন, তার এক–দুই মিনিট পরেই বিদ্যুৎ চলে যায়। গতকাল শনিবারও তাঁর বক্তব্যের সময় একই ঘটনা ঘটে। কথা বলা শেষ হলে আবার বিদ্যুৎ আসে।

তিন দিন ভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠান হলেও এ ধরনের ঘটনাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে সারজিস আলম বলেন, ‘জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সেক্টরের কিছু কর্মকর্তা এ ধরনের ছোটলোকি কিংবা অন্য দলের দালালিমূলক আচরণ করে থাকে। একজনকে ডিস্টার্ব করতে পারলে তাদের রাজনৈতিক সফলতা মনে করে।’

বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় নেসকোর কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়ে বক্তব্য দেওয়ার বিষয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘প্রত্যেকবারই প্রোগ্রামের আগে তাদেরকে প্রোগ্রাম সম্পর্কে বলে রাখা হয়। প্রোগ্রামের পরও ভদ্র ভাষায় বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরও যখন একই চিত্র দেখা যায়, তখন তাদের সঙ্গে সুশীলতা প্রদর্শন করা প্রয়োজন মনে করি না। তবে ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে যে উপমা ব্যবহার করেছি, সেটা করা উচিত হয়নি বলে মনে করি।’

এনসিপির সচেতনতামূলক কার্যক্রম ও মিডিয়ার বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘চাঁদাবাজি, দখলদারত্ব, সিন্ডিকেট, দুর্নীতি ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে এনসিপির পক্ষ থেকে লংমার্চে ১০ ঘণ্টা ধরে প্রায় ২ হাজার মানুষ মোটরসাইকেলে করে সাধারণ মানুষকে সচেতন করে তুলতে পুরো পঞ্চগড় জেলার ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করেছি। আশা করি, মিডিয়ার ফোকাস সেদিকেও থাকবে।’

এর আগে গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে পঞ্চগড় জেলা শহরের শেরেবাংলা পার্কসংলগ্ন জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে চাঁদাবাজি, দখলদারত্ব, সিন্ডিকেট, দুর্নীতিসহ সব অপকর্মের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত লংমার্চ শেষে বক্তব্যের সময় বিদুৎ চলে গেলে সারজিস আলম ক্ষুব্ধ হয়ে নেসকোর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত এনস প র ফ সব ক

এছাড়াও পড়ুন:

আসামে নিষিদ্ধ হলো বহুবিবাহ, আইন ভাঙলে ১০ বছরের জেল  

বহুবিবাহ প্রতিরোধে আসামের বিধানসভায় বৃহস্পতিবার পাস হয়েছে  ‘আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’। এই আইনের মাধ্যমে ভারতের এই  রাজ্যে বহুবিবাহকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

তবে তফসিলি জনজাতি (এসটি) এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকা যেমন বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন, ডিমা হসাও, করবি আংলং ও পশ্চিম করবি আংলং এই আইনের আওতার বাইরে থাকবে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা আইন পাশ হওয়ার পর বলেছেন, দিনটি ঐতিহাসিক। আসামের নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই আইন চালু করা হল। ‌

বৃহস্পতিবার আসা বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিলটি তোলা হয়। বিলটি পাশ হওয়ার আগে তুমুল বিতর্ক হয়। একাধিক মুসলিম বিধায়ক দাবি করেন, এর ফলে সংখ্যালঘুদের ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।‌ তাদের বক্তব্য, এই আইনে অনেক জটিলতা তৈরি হবে। কারণ মুসলিম পার্সোনাল ল রাজ্য আইনের ঊর্ধ্বে। রাজ্যের আইনে যা নিষিদ্ধ সেটাই কেন্দ্রীয় আইনে বৈধ। মামলা হলে আদালত রাজ্যের আইনকে গ্রাহ্য করবে না।

জবাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা বিধানসভায় ঘোষণা করেন, যদি মুসলিম পার্সোনাল ল আসামের আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করা হবে।‌ তখন আর ব্যক্তিগত আইনের সুবিধা পাওয়া যাবে না। 

মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, “বিরোধীরা আমাকে আটকাতে না পারলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও বলবৎ হবে আসামে।”

প্রসঙ্গত বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে গত বছর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হয়েছে। ‌ উত্তরপ্রদেশ,গোয়া মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার ভাবনা আছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোর।

এই বিলের আওতায় যারা অপরাধী বলে চিহ্নিত হবেন, তাদের জন্য কড়া শাস্তির বিধান বেঁধে দিয়েছে হিমন্তের সরকার। পাশ হওয়া বিল অনুযায়ী, কেউ যদি একটি বিবাহ থাকা সত্ত্বেও আরো একটি বিয়ে করেন, তা হলে তার সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। আর কেউ যদি তার দ্বিতীয় বিয়ে লুকানোর চেষ্টা করেন, তাহলে সেই অভিযুক্তের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। পাশাপাশি, এই গোটা বিবাহ প্রক্রিয়ায় জড়িত কাজি, পুরোহিত, গ্রামপ্রধান, পিতামাতা কিংবা আইনি পরামর্শদাতা, যারা সেই বহুবিবাহে উৎসাহ জোগাবেন, তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এদিন বিল পাশের পর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ মুসলিম সমাজের মেয়েদের জন্য অভিশাপের সমান। দেশের নাগরিক হিসাবে তারাও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার পেয়েছেন। কিন্তু এই রীতি তাদের সেই মর্যাদা ও অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।”
 

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ