জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের স্বার্থে এনসিপি এককভাবেও আগামী নির্বাচনে যেতে পারে। আবার কোনো অ্যালায়েন্সের মধ্য দিয়েও নির্বাচনে যেতে পারে। তবে যদি সেটা অ্যালায়েন্স হয়, তাহলে এনসিপি নামেই নির্বাচন করবে। আমরা প্রত্যাশা করছি, শাপলা প্রতীকেই নির্বাচন করব।’

আজ সোমবার দুপুরে জামালপুর জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এনসিপির জেলা ও উপজেলার সমন্বয় সভা শেষে সারজিস আলম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

শাপলা প্রতীক নিয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের আইন অঙ্গন থেকে শুরু করে যাঁরা এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ আছেন, সচিব, নির্বাচন কমিশনসহ সবার সঙ্গে কথা বলেছি। শাপলা প্রতীক দিতে আইনগত কোনো বাধা নেই। যেহেতু আইনগত বাধা নেই, তাই আমরা প্রত্যাশা করি, আমাদের সঙ্গে অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে, এমন একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন কোনোভাবেই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে স্বেচ্ছাচারমূলক আচরণ করবে না। আমরা প্রত্যাশা করি, আমরা শাপলা প্রতীক পাব এবং সেই প্রতীকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।’

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনে এনসিপির সম্মতি আছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে সারজিস আলম বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নের ভিত্তি ও নিশ্চয়তা পেলে এবং গণ–অভ্যুত্থানের সময় হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দৃশ্যমান হলে এ সময়ের মধ্যে নির্বাচনে তাঁর দলের আপত্তি নেই। তিনি বলেন, ‘একটি কনফারেন্সে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর নিজেই আমাদের কাছে বলেছিলেন, শেখ হাসিনাসহ এই খুনগুলোর সঙ্গে যাঁরা সরাসরি নির্দেশদাতা ও সরাসরি সম্পৃক্ত, তাঁদের বিচারের রায় আগামী ডিসেম্বরে কার্যকর হবে। আমরা সেটার অপেক্ষায় আছি। এ রকম আস্থা যদি আমরা পাই, তাহলে আমরা মনে করি, এই ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন হওয়াতে কোনো বাধা থাকতে পারে না।’

সমন্বয় সভার সভাপতিত্ব করেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব লুৎফর রহমান। অন্যদের মধ্যে এনসিপির ময়মনসিংহ বিভাগের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকিন আলমসহ দলের জামালপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবির বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘এনসিপি মনে করে যে বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় উচ্চকক্ষে পিআর হতে পারে এবং এটা জানিয়েছিল ঐকমত্য কমিশন। আমরা মনে করি, উচ্চকক্ষে যদি পিআর বাস্তবায়নযোগ্য হয়, সফলতার মুখ দেখে এবং বাস্তবায়ন হয়, আগামী দিনে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে নিম্নকক্ষে পিআর হবে কি না। এ মুহূর্তে এনসিপির স্পষ্ট অবস্থান, আগামী নির্বাচনে আমরা উচ্চকক্ষে পিআরের পক্ষে এবং এ মুহূর্তে নিম্নকক্ষে পিআরের পক্ষে নই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এনস প র

এছাড়াও পড়ুন:

নায়িকা পপিকে আইনি নোটিশ

মানহানিকর বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপিকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন তার চাচাতো বোনজামাই মো. তারেক আহমেদ চৌধুরী। বুধবার (২৬ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. ইলিয়াছ আলী মণ্ডলের মাধ্যমে পপির খুলনা ও ঢাকার ঠিকানায় রেজিস্টার্ড ডাকযোগে নোটিশটি পাঠানো হয়।  

এসব তথ্য গণমাধ্যমে নিশ্চিত করে তারেক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “আমার স্ত্রী সম্পর্কের আত্মীয় সাদিকা পারভীন পপি বিভিন্ন সময় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তার যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে পারিবারিকভাবে কথা বলতে পারেন কিংবা আইনিভাবে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন। কিন্তু তিনি সেটা না করে বিভিন্ন মাধ্যমে আমার নামে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছেন। যেজন্য আইনিভাবে তাকে এই বিষয়গুলো আমি জানিয়েছি।”

আরো পড়ুন:

শাকিবের নায়িকা রহস্য

শীতের সকালে একটু নদীতে নামলাম: ভাবনা

পূর্বের ঘটনা উল্লেখ করে তারেক আহমেদ চৌধুরী বলেন, “এর আগেও তিনি (পপি) আমাকে দোষারোপ করে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছিল। ফলে আমি তার বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছি।”

পপিকে আইনি নোটিশ পাঠানো প্রসঙ্গে আইনজীবী মো. ইলিয়াছ আলী মণ্ডল গণমাধ্যমকে জানান, তার মক্কেল ঢাকায় একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সর্বোচ্চ পদে আছেন। সাদিকা পারভীন পপির প্রয়াত চাচা প্রয়াত মিয়া কবির হোসেনের জামাতা হলেন তার মক্কেল তারেক আহমেদ চৌধুরী। বৈবাহিক সূত্রে তার সঙ্গে পপির আত্মীয়তার সম্পর্ক। 

আইনি নোটিশে বলা হয়, “একটি সম্পত্তি নিয়ে তাদের পারিবারিক বিরোধ রয়েছে। ওই সম্পত্তিটি সাদিকা পারভীন পপির প্রয়াত চাচার মালিকানাধীন ছিল, যা একটি বৈধ হেবা দলিলের মাধ্যমে তারেক আহমেদ চৌধুরীর স্ত্রী এবং তার মাকে উপহার হিসেবে প্রদান করা হয় এবং তারা আইনগতভাবে উক্ত সম্পত্তির মালিক হন। আমার মক্কেল উক্ত সম্পত্তির কোনো আইনগত উত্তরাধিকারী নন এবং উক্ত সম্পত্তির ওপর তার কোনো দখল, মালিকানা বা আইনি স্বার্থ নেই; সম্পত্তিটির হস্তান্তর ও বণ্টন সম্পূর্ণরূপে উক্ত হেবা দলিল ও প্রযোজ্য উত্তরাধিকার আইনের অধীন পরিচালিত হয়। আমার মক্কেলের সঙ্গে উক্ত সম্পত্তিগত বিরোধের কোনো আইনগত বা বাস্তবিক সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও, নোটিশ গ্রহীতা গত ২১ নভেম্বর প্রচারিত একটি টিভি অনুষ্ঠানে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও মানহানিকর অভিযোগ করেছেন এবং তা প্রকাশ করেছেন। 

ইলিয়াছ আলী বলেন, “টিভি অনুষ্ঠানে পপি বলেছেন, আমার মক্কেল তাকে তার নিজ এলাকায় চলাফেরায় বাধা দিচ্ছেন এবং তাকে উক্ত সম্পত্তিতে তার অংশ থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্যে এমনটি করছেন।” 

পপির ধারাবাহিক, বিদ্বেষমূলক ও ভিত্তিহীন জনসমক্ষে প্রদত্ত অভিযোগসমূহ তারেক আহমেদ চৌধুরীর পেশাগত অবস্থান ও নৈতিক সুনামকে গুরুতরভাবে হুমকির মুখে ফেলছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে নোটিশো অভিযোগ করা হয়। 

নোটিশে বলা হয়, আপনি অবিলম্বে আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে টিভি বা অন্য কোনো জনসমক্ষে মিথ্যা ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান থেকে বিরত থাকবেন এবং যে টিভি চ্যানেলে অভিযোগ প্রচারিত হয়েছিল সেই একই সময় টিভি চ্যানেলে প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করবেন। স্পষ্টভাবে উল্লেখ করবেন যে, আমার মক্কেলের বিরুদ্ধে আপনার অভিযোগসমূহ সম্পূর্ণ অসত্য ও ভিত্তিহীন ছিল। এছাড়া, আপনি উক্ত সম্পত্তি সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে আমার মক্কেলকে আর সম্পৃক্ত করবেন না, কারণ উক্ত বিষয়ে তার কোনো আইনগত অবস্থান বা সম্পৃক্ততা নেই। 

এছাড়া এই আইনি নোটিশ দেওয়ার তারিখ থেকে সাত দিনের মধ্যে উপরোক্ত নির্দেশসমূহ পালন করতে ব্যর্থ হলে পপির বিরুদ্ধে যথাযথ ফৌজদারি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবেন; যার মধ্যে মানহানি মামলা দায়ের ও তার ব্যক্তিগত ও পেশাগত সুনামে সৃষ্ট ক্ষতির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করাসহ সকল আইনানুগ প্রতিকার অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানান আইনজীবী মো. ইলিয়াছ আলী মণ্ডল।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নায়িকা পপিকে আইনি নোটিশ