বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেছেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সরাসরি ভোটে দল থেকে কমপক্ষে ৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। এর মাধ্যমে নারীরা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবেন।”

মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) খুলনা প্রেস ক্লাবে ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’ আয়োজিত খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

দুই স্ত্রীর বিবাদে প্রাণ গেল যুবদল নেতার

জামায়াতের ধারণা তারা ক্ষমতায় গেছে: দুলাল

বেগম সেলিমা রহমান বলেন, “দেশে নারী শিক্ষা ও পেশাজীবী অঙ্গনে নারীদের যে অবস্থান, তা জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার হাত ধরেই এগিয়েছে। এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে নারী জাগরণ ঘটবে।”

সভায় নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরী বলেন, “আগামী নির্বাচনে বিএনপি অবশ্যই যোগ্য নারীদের দলীয় মনোনয়ন দেবে এবং তারা জনগণের ভোটে বিজয়ী হবেন।” 

তিনি বলেন, “বিএনপি নারীদের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য বদ্ধপরিকর এবং এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে বিএনপির কেন্দ্রীয় তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, “বিএনপি নারীর অধিকার রক্ষায় সবসময় সোচ্চার। আমরা বিশ্বাস করি, নারীদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি ছাড়া দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।”

খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, “বিএনপি নারীদের জন্য একটি নিরাপদ ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে চায়। আমরা নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের সুযোগ নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আগামী নির্বাচনে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণের জন্য বিএনপি সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।”

খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার বিএনপির নারী নেত্রীরা সমন্বয় সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- খুলনা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ড, শফিকুল আলম মনা, এম এ সালাম, রহমত উল্লাহ পলাশ, মনিরুজ্জামান মন্টু, শফিকুল আলম তুহিন। সভা সঞ্চালনা করেন ফোরামের কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব নিপুন রায় চৌধুরী।

ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

আসামে নিষিদ্ধ হলো বহুবিবাহ, আইন ভাঙলে ১০ বছরের জেল  

বহুবিবাহ প্রতিরোধে আসামের বিধানসভায় বৃহস্পতিবার পাস হয়েছে  ‘আসাম প্রোহিবিশন অফ পলিগ্যামি বিল, ২০২৫’। এই আইনের মাধ্যমে ভারতের এই  রাজ্যে বহুবিবাহকে দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। আইন ভাঙলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ও জরিমানার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। 

তবে তফসিলি জনজাতি (এসটি) এবং সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিলভুক্ত এলাকা যেমন বডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল রিজিয়ন, ডিমা হসাও, করবি আংলং ও পশ্চিম করবি আংলং এই আইনের আওতার বাইরে থাকবে।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মা আইন পাশ হওয়ার পর বলেছেন, দিনটি ঐতিহাসিক। আসামের নারীদের সামাজিক ও পারিবারিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে এই আইন চালু করা হল। ‌

বৃহস্পতিবার আসা বিধানসভায় শীতকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনেই বিলটি তোলা হয়। বিলটি পাশ হওয়ার আগে তুমুল বিতর্ক হয়। একাধিক মুসলিম বিধায়ক দাবি করেন, এর ফলে সংখ্যালঘুদের ব্যক্তিগত অধিকার ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।‌ তাদের বক্তব্য, এই আইনে অনেক জটিলতা তৈরি হবে। কারণ মুসলিম পার্সোনাল ল রাজ্য আইনের ঊর্ধ্বে। রাজ্যের আইনে যা নিষিদ্ধ সেটাই কেন্দ্রীয় আইনে বৈধ। মামলা হলে আদালত রাজ্যের আইনকে গ্রাহ্য করবে না।

জবাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী এবং বিজেপি সরকারের মন্ত্রী ও বিধায়কেরা বিধানসভায় ঘোষণা করেন, যদি মুসলিম পার্সোনাল ল আসামের আইন বাস্তবায়নে বাধা হয়ে দাঁড়ায় তখন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বলবৎ করা হবে।‌ তখন আর ব্যক্তিগত আইনের সুবিধা পাওয়া যাবে না। 

মুখ্যমন্ত্রী চ্যালেঞ্জের সুরে বলেন, “বিরোধীরা আমাকে আটকাতে না পারলে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিও বলবৎ হবে আসামে।”

প্রসঙ্গত বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ডে গত বছর অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হয়েছে। ‌ উত্তরপ্রদেশ,গোয়া মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান এবং আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করার ভাবনা আছে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারগুলোর।

এই বিলের আওতায় যারা অপরাধী বলে চিহ্নিত হবেন, তাদের জন্য কড়া শাস্তির বিধান বেঁধে দিয়েছে হিমন্তের সরকার। পাশ হওয়া বিল অনুযায়ী, কেউ যদি একটি বিবাহ থাকা সত্ত্বেও আরো একটি বিয়ে করেন, তা হলে তার সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। আর কেউ যদি তার দ্বিতীয় বিয়ে লুকানোর চেষ্টা করেন, তাহলে সেই অভিযুক্তের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। পাশাপাশি, এই গোটা বিবাহ প্রক্রিয়ায় জড়িত কাজি, পুরোহিত, গ্রামপ্রধান, পিতামাতা কিংবা আইনি পরামর্শদাতা, যারা সেই বহুবিবাহে উৎসাহ জোগাবেন, তাদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এদিন বিল পাশের পর বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেন, “বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ মুসলিম সমাজের মেয়েদের জন্য অভিশাপের সমান। দেশের নাগরিক হিসাবে তারাও মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার পেয়েছেন। কিন্তু এই রীতি তাদের সেই মর্যাদা ও অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করে।”
 

সুচরিতা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ