বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদের অনুরোধে ১৩৪ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন আমজনতার দলের সাধারণ সম্পাদক ও তরুণ নেতা তারেক রহমান।

রবিবার (৯ নভেম্বর) রাতে তিনি অনশন ভাঙেন।

নিবন্ধনের দাবিতে তারেক রহমান টানা অনশন চালিয়ে যান। তার দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন না পাওয়ায় তিনি অনশন শুরু করেছিলেন।

মঙ্গলবার বিকাল থেকে তিনি ইসি ভবনের সামনে এ অনশন চালিয়ে যান। নিবন্ধন না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

তবে তিনি এখন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। রবিবার রাতে তাকে দেখতে ছুটে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তার অনুরোধে ১৩৪ ঘণ্টা পরে অনশন ভাঙেন তারেক। এরপর তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

সন্ধ্যায় বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ছবিতে দেখা যায়, রবিবার সন্ধ্যায় তারেক রহমানকে দেখতে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে যান সালাহউদ্দিন আহমেদ। পরবর্তী আপিলে নির্বাচন কমিশনকে সহানুভূতি দেখানোর আহবান জানান তিনি।

এর আগে দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে তাকে দেখতে ছুটে যান বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। বৃহস্পতিবার আমজনতা দলের দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অনশনস্থলে উপস্থিত হন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

ওইদিন সন্ধ্যায় বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত এক ভিডিওতে দেখা যায়, রিজভী আমজনতা দলের নিবন্ধন দাবিতে অনশনরত মো.

তারেক রহমানের পাশে অবস্থান করছেন এবং তাকে বিএনপির পক্ষ থেকে সংহতি জানাচ্ছেন।

এ সময় বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, “তারেকের আমজনতার দল নিবন্ধিত হয়নি। আমি দেখিছি কিছু গুরুত্বহীন দলও নিবন্ধিত হয়েছে। কিন্তু তারেকের দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলো না কেন আমি বুঝতে পারলাম না। তারেক এ দেশের স্বার্থে, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলেছন, দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে কথা বলেছেন।”

তিনি আরো বলেন, “তারেক একটি রাজনৈতিক দল গঠন এবং সেটির নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছেন। তিনি তো কোনো গোপন রাজনৈতিক দল করতে চাননি। তিনি আইনসম্মতভাবে রাজনীতি করতে চেয়েছেন। তিনি স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করেছেন। আজকে তার দলের নিবন্ধন দেবেন না, তাহলে আপনারা কাদের নিবন্ধন দেবেন?”

গত ৪ নভেম্বর চূড়ান্ত পর্যালোচনা শেষে নির্বাচন কমিশন তিনটি দল—জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্ক্সবাদী) এবং বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টিকে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনের অনুমোদন দেয়। এরপর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির পর চূড়ান্ত নিবন্ধন দেওয়ার কথা জানানো হয়।

তবে তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় তারেক রহমানের ‘আমজনতার দল’। সেই দিন বিকাল থেকেই নির্বাচন ভবনের প্রধান ফটকে অনশন শুরু করেন তিনি।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত র ক রহম ন ব এনপ র অনশন ভ ত র দল

এছাড়াও পড়ুন:

‘দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন’ লিখে রেখে যাওয়া নবজাতকের অভিভাবক হতে কয়েক শ ফোনকল

কেউ এসেছেন সৈয়দপুর থেকে, কেউ–বা নওগাঁ থেকে। কেউ নিঃসন্তান, কারও আবার ছেলেসন্তান থাকলেও মেয়ে নেই। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিরকুট লিখে এক মায়ের রেখে যাওয়া বাচ্চার অভিভাবক হতে আগ্রহী তাঁরা। কর্তৃপক্ষের পরামর্শে তাঁরা আবেদনও করেছেন। এ ছাড়া বাচ্চাটির অভিভাবক হওয়ার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাসপাতালের পরিচালকসহ কর্মকর্তাদের কাছে কয়েক শ ফোনকল এসেছে।

গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের পঞ্চম তলায় শিশু ওয়ার্ডের শয্যায় এক নবজাতক কন্যাসন্তান রেখে যান তাঁর স্বজনেরা। শয্যার পাশে একটি বাজারের ব্যাগে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। শিশুটির মা চিরকুটে লিখেছেন, ‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম, দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন।’ এরপর এ নিয়ে প্রথম আলোসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপর থেকে বাচ্চাটির অভিভাবক হতে বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন হাসপাতালে ছুটে আসছেন এবং কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ শিশুবিশেষজ্ঞ শেখ সাদেক আলী বলেন, ‘বাচ্চাটির আজ একটু খিঁচুনির মতো দেখা দিয়েছে। দুধ পান করছে কম। অন্য সবকিছু স্বাভাবিক আছে। একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, সবার আগে বাচ্চাটির সুস্থতা। পরে অন্য সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

আজ শনিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের সামনে মানুষের ভিড়। কেউ বাচ্চাটির দত্তক নিতে, কেউ–বা একনজর দেখতে এসেছেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বাচ্চা রেখে যাওয়ার বিষয়টি জানাজানির পর হাসপাতালের পরিচালক, ওয়ার্ড মাস্টারসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে তিন শতাধিক ফোন এসেছে।

দুপুর সাড়ে ১২টায় হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার সুমন কুমারের কক্ষে বাচ্চা নিতে আসেন মুনিরা-আনোয়ার দম্পতি। তাঁদের বাড়ি জেলার বিরামপুর উপজেলায়। মুনিরা জানান, তাঁদের দুই ছেলে আছে। কিন্তু মেয়ে নেই। তাঁর একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। কিন্তু ছেলেরা তাঁদের একটি বোন চায়।

বাচ্চাটির অভিভাবক হওয়ার জন্য হাসপাতালের পরিচালক বরাবর অনেকে আবেদন করেছেন। পেশায় ব্যবসায়ী এক ব্যক্তি আবেদনপত্রে লিখেছেন, বিয়ের ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও তিনি এখনো বাবা হতে পারেননি। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তিনি বাচ্চাটির অভিভাবক হতে চান।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথমত শিশুটির সুস্থতা। এরপর সমাজসেবা অধিদপ্তরের শিশুকল্যাণ বোর্ড আছে। বোর্ডের সদস্যরা বসে যাঁরা আবেদন করেছেন, সেগুলো পর্যালোচনা করা হবে। এ ক্ষেত্রে আর্থিকভাবে সচ্ছল নিঃসন্তান দম্পতিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে।’

সমাজসেবা কার্যালয়ের পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) হা‌বিবা আক্তার বলেন, বাচ্চাটির দায়িত্ব নিতে আগ্রহী অনেক দম্পতি ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছেন। কেউ কেউ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর আবেদনও করেছেন। তবে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের শিশুকল্যাণ কমিটি আছে। বাচ্চাটির সুস্থতা সাপেক্ষে ওই কমিটি আবেদনপত্রগুলো যাচাই-বাছাই করবে। বিভিন্ন শর্তসাপেক্ষে রেজল্যুশনের পর বাচ্চা হস্তান্তর হবে।

বাচ্চাটির জন্য তারেক রহমানের উপহার

এদিকে নবজাতক শিশুটির জন্য উপহারসামগ্রী পাঠিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ দুপুরে তারেক রহমানের পক্ষে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক এবং নিপীড়িত নারী-শিশু আইনি ও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেলের প্রধান সমন্বয়কারী রফিকুল ইসলাম হাসপাতালের পরিচালকের হাতে উপহারসামগ্রী তুলে দেন। এতে বাচ্চাটির জন্য পোশাক ও নগদ কিছু অর্থ আছে।

এ সময় বিএনপির নিপীড়িত নারী-শিশু আইনি ও স্বাস্থ্যসেবা সহায়তা সেলের দিনাজপুর শাখার সদস্য চিকিৎসক মাসতুরা বেগম, জিয়াউল হক, নুর জামান সরকার, তামান্না নুসরাত, হাফিজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে বাচ্চা রেখে গেলাম, দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন’০৭ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আকুর বিল পরিশোধের পর কমল রিজার্ভ
  • ‘জেমস বন্ড’ সিরিজের পরিচালক মারা গেছেন
  • পোস্টাল ভোট বিডি অ্যাপের উদ্বোধন ১৮ নভেম্বর
  • তারেককে আপিল করার আহ্বান ইসির
  • গলায় ছুরিকাঘাত নিয়ে তিন কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন অটোরিকশাচালক, পরে মৃত্যু
  • কাটা গলা নিয়ে রিকশাচালিয়ে ৩ কিলোমিটার, হাসপাতালে মৃত্যু
  • শরীয়তপুরে জাতীয় যুবশক্তির কমিটি ঘোষণার ২০ মিনিট পরই সদস্যসচিবের পদত্যাগ
  • ৩৭ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের কাছে সিরিজ হারল দ. আফ্রিকা
  • ‘দয়া করে কেউ নিয়ে যাবেন’ লিখে রেখে যাওয়া নবজাতকের অভিভাবক হতে কয়েক শ ফোনকল