ট্রাম্প–শারা বৈঠক শেষে ঘোষণা: আইএসবিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগ দিচ্ছে সিরিয়া
Published: 11th, November 2025 GMT
ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক জোটে যোগ দিচ্ছে সিরিয়া। গতকাল সোমবার এক মার্কিন কর্মকর্তা এ কথা বলেছেন।
হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার ঐতিহাসিক বৈঠকের কয়েক ঘণ্টার মাথায় এ ঘোষণা এল।
গত বছরের শেষ দিকে ইসলামপন্থী শারার নেতৃত্বে বিদ্রোহী বাহিনী সিরিয়ার দীর্ঘদিনের স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে। গতকাল শারা হোয়াইট হাউসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। ১৯৪৬ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর এটি হোয়াইট হাউসে কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্টের প্রথম সফর।
যুক্তরাষ্ট্র তাদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে ৪৩ বছর বয়সী শারার নাম বাদ দেওয়ার কয়েক দিন পরই তিনি ওয়াশিংটন সফরে যান। শারার নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) আগে আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছিল।যুক্তরাষ্ট্র তাদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে ৪৩ বছর বয়সী শারার নাম বাদ দেওয়ার কয়েক দিন পরই তিনি ওয়াশিংটন সফরে যান। শারার নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) আগে আল-কায়েদার সহযোগী সংগঠন হিসেবে পরিচিত ছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, শারার সফরকালে সিরিয়া ইসলামিক স্টেটবিরোধী বৈশ্বিক জোটে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেয়। এর মাধ্যমে সিরিয়া এ জোটের ৯০তম সদস্য হবে।
ওই কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, সন্ত্রাস দমন, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমন্বয় আরও জোরদার করার লক্ষ্যে সিরিয়াকে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আবারও কূটনৈতিক সম্পর্ক চালু করার সুযোগ দেওয়া হবে।
ট্রাম্প বলেছেন, এক দশকের বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর সিরিয়া যেন ‘অত্যন্ত সফল’ দেশ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পারে—সেটাই তাঁর চাওয়া। তাঁর বিশ্বাস শারা তা পারবেন।
ট্রাম্প ও শারার ওই বৈঠকে সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার অনুমতি ছিল না। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (শারা) অত্যন্ত শক্তিশালী এক নেতা। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে থাকা এক দেশ থেকে তিনি এসেছেন। তিনি নিজেও একজন সংগ্রামী মানুষ।’
তিনি (শারা) অত্যন্ত শক্তিশালী এক নেতা। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে থাকা এক দেশ থেকে তিনি এসেছেন। তিনি নিজেও একজন সংগ্রামী মানুষ।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টপরে ট্রাম্প আরও বলেন, ‘মানুষ বলে, তাঁর অতীতটা কঠিন ছিল। আমাদের সবারই তো অতীতটা কঠিন.
ট্রাম্প বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে তাঁর বৃহত্তর শান্তি পরিকল্পনার একটি ‘বড় অংশ’ সিরিয়া। তিনি আশা করছেন, এ শান্তি পরিকল্পনার আওতায় গাজায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে নাজুক যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
শারার সঙ্গে বৈঠকের পর নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি পোস্ট দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি লিখেছেন, সিরিয়াকে একটি স্থিতিশীল ও সফল দেশ হিসেবে দেখাটা গোটা অঞ্চলের সব দেশের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তবে সিরিয়া তার দীর্ঘদিনের শত্রু ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করবে কি না, সে ব্যাপারে ট্রাম্প কিছু বলেননি।
ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের পর শারা মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। তিনি বলেন, গোলান মালভূমি নিয়ে সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান বিরোধের কারণে দুই দেশের মধ্যে শান্তি আলোচনা হওয়াটা কঠিন। তবে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন, ওয়াশিংটনের মধ্যস্থতায় পরিচালিত আলোচনাগুলো দুই দেশের মধ্যে বৈঠকের প্রক্রিয়া শুরু করতে সাহায্য করতে পারে।
ট্রাম্প ও শারার বৈঠকে সাংবাদিকদের উপস্থিত থাকার অনুমতি ছিল না। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (শারা) অত্যন্ত শক্তিশালী এক নেতা। প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করতে থাকা এক দেশ থেকে তিনি এসেছেন। তিনি নিজেও একজন সংগ্রামী মানুষ।’এদিকে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়েছে, শারা ও ট্রাম্প দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে কীভাবে দৃঢ় ও উন্নত করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। দুই দেশের মধ্যকার কিছু অভিন্ন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে সিরিয়ার নতুন নেতৃত্ব তাদের ‘সহিংস’ অতীত থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে। সাধারণ সিরীয় নাগরিকদের পাশাপাশি বিদেশি শক্তিগুলোর কাছে তারা নিজেদের সংস্কারপন্থী হিসেবে উপস্থাপন করতে চাইছে।
এর আগে গত মে মাসে ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় সৌদি আরবের রিয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রথমবারের মতো বৈঠক করেন শারা। তখন ৭৯ বছর বয়সী ট্রাম্প ৪৩ বছর বয়সী শারাকে ‘একজন যুবক ও আকর্ষণীয় ব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
আরও পড়ুনসিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারার নাম ‘সন্ত্রাসী’ তালিকা থেকে বাদ দিল যুক্তরাষ্ট্র০৭ নভেম্বর ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ট র ম প বল সন ত র স
এছাড়াও পড়ুন:
‘কালো হেলমেট পরা দুজন বাইকে এসে ককটেল ফাটিয়ে চলে যায়’
প্রবর্তনার সামনে আজ সোমবার সকালে যখন ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, তখন প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। রাজধানীর মোহাম্মদপুরে খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠানে ককটেল বিস্ফোরণ হয় সকাল সাতটার একটু আগে। এর মূল ফটকের সামনে একটু দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন একজন নিরাপত্তারক্ষী। রাস্তায় লোকজনও ছিল কিছু। সেই সময় ইকবাল রোডের দিক থেকে আসা মোটরসাইকেলে দুই ব্যক্তি ককটেল ফাটিয়ে চলে যান। যদিও তার আগে এই দুই ব্যক্তি কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে ছিলেন।
সিসিটিভির ফুটেজ দেখে, বিস্ফোরণের আগে–পরের পরিস্থিতি তুলে ধরেন প্রবর্তনার ফাইন্যান্স ম্যানেজার মো. তানভীর আহমেদ। আজ বেলা দেড়টার দিকে তিনি জানান, এ ঘটনার পরপরই পুলিশ আসে। তারা তদন্ত করছে। এরপর প্রবর্তনার পক্ষ থেকে মামলা করা হবে।
‘প্রবর্তনা’ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার এবং কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের খাদ্যপণ্যের প্রতিষ্ঠান।
মো. তানভীর আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিসিটিভির ফুটেজে যা দেখেছি, সকাল সাতটার একটু আগে দুজন প্রবর্তনার মূল ফটকের পাশে এসে দাঁড়ায়। তারপর দুজন দুই পাশে তাকাতে থাকে। এ সময় প্রবর্তনার একজন নিরাপত্তারক্ষী ফটকের উল্টো দিকে ছিলেন। দেখা যায়, এ সময় দুই যুবক কোনো কিছু না করে বাইক নিয়ে চলে যায়। খানিকক্ষণ পরে ইকবাল রোডের দিক থেকে তারা বাইক চালিয়ে আসতে থাকে। প্রবর্তনার ফটকের কাছাকাছি এসে ককটেল বা এ রকম কোনো বস্তু ফেলে। সেখানে ধোঁয়া ওঠে এবং প্রচণ্ড শব্দ হয়।’
মো. তানভীর আহমেদ বলেন, বিস্ফোরণের এ সময় রাস্তায় লোকজন চলাচল করছিল। এতে যে কেউ আঘাত পেতে পারত। কিন্তু কিছু হয়নি।
প্রবর্তনার সামনের অংশ