নিখোঁজের চার দিন পর সুদীপ্ত রায় (১৭) নামে ক্যামব্রিয়ান কলেজের এক শিক্ষার্থীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহ আলী থানাধীন তুরাগ সিটি এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ফ্ল্যাট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

ভাটারা থানা–পুলিশ জানায়, সুদীপ্তকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে বারিধারায় ক্যামব্রিয়ান কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ভাটারার শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে ক্যামব্রিয়ান কলেজের হোস্টেলে থাকত সে।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় দুজনকে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনের একজন সুদীপ্তর পরিচিত। সুদীপ্তকে বাসায় ডেকে নিয়ে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চেয়েছিলেন গ্রেপ্তার দুজন।

ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, সুদীপ্ত নিখোঁজ হন গত শুক্রবার বিকেলে। ওই দিন রাতে মুঠোফোনে সুদীপ্তের পরিবারের কাছে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আবদুল্লাহ (২২) ও জুনায়েদ দেওয়ান (২২) নামে দুই যুবককে শনাক্ত করে তাঁদের টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে তুরাগ সিটিতে নির্মাণাধীন একটি ১০ তলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে সুদীপ্তের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসআই হাসমত বলেন, গ্রেপ্তার দুজন ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করে ঢাকায় চাকরির জন্য এসেছিলেন। তাঁরা দিয়াবাড়ির ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহর বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। নিহত সুদীপ্ত রায়ের বাড়িও ঠাকুরগাঁওয়ে। একই এলাকার হওয়ায় আগে থেকেই দুজনের পরিচয় ছিল।

এসআই হাসমত বলেন, ওই পরিচয়ের সূত্র ধরে শুক্রবার বিকেলে মুঠোফোনে সুদীপ্তকে দিয়াবাড়ির ফ্ল্যাটে ডেকে নেন আবদুল্লাহ। সেখানে যাওয়ার পর রাতে কৌশলে সুদীপ্তর মুঠোফোন নিয়ে নেন তিনি। সুদীপ্ত ঘুমানোর পর গ্রেপ্তার দুজন পরিবারের কাছে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান।

এসআই হাসমত বলেন, সকালে সুদীপ্ত নিজের মুঠোফোন খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তখন আবদুল্লাহ ও জুনায়েদ মুঠোফোনটি দিতে চাননি। একপর্যায়ে মুঠোফোন নিয়ে সুদীপ্ত তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন। তখন সুদীপ্তকে তাঁর বাবা রাতে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার কথা জানান। পরে এ নিয়ে আবদুল্লাহ ও জুনায়েদের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় সুদীপ্তর।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুদীপ্তর গলায় আঘাত করেন আবদুল্লাহ। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুদীপ্তর গলায় আরও আঘাত করা হয়। সুদীপ্তর মৃত্যুর পর মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেন দুজন। কিন্তু সেটি না পেরে তাঁরা সেখান থেকে পালিয়ে যান।

এদিকে গত শনিবার সুদীপ্তর বাবা হিমাংশু কুমার রায় বাদী হয়ে ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার সূত্র ধরেই হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয় বলে জানান এসআই হাসমত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ র প ত র দ জন আবদ ল ল হ স দ প তর উদ ধ র মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণকারীদের দেওয়া তথ্যে ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার

নিখোঁজের চার দিন পর সুদীপ্ত রায় (১৭) নামে ক্যামব্রিয়ান কলেজের এক শিক্ষার্থীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শাহ আলী থানাধীন তুরাগ সিটি এলাকায় নির্মাণাধীন একটি ভবনের ফ্ল্যাট থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

ভাটারা থানা–পুলিশ জানায়, সুদীপ্তকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। সে বারিধারায় ক্যামব্রিয়ান কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। ভাটারার শহীদ আব্দুল আজিজ সড়কে ক্যামব্রিয়ান কলেজের হোস্টেলে থাকত সে।

পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় দুজনকে টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনের একজন সুদীপ্তর পরিচিত। সুদীপ্তকে বাসায় ডেকে নিয়ে আটকে রেখে পরিবারের কাছে মুক্তিপণ চেয়েছিলেন গ্রেপ্তার দুজন।

ভাটারা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাসমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, সুদীপ্ত নিখোঁজ হন গত শুক্রবার বিকেলে। ওই দিন রাতে মুঠোফোনে সুদীপ্তের পরিবারের কাছে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় আবদুল্লাহ (২২) ও জুনায়েদ দেওয়ান (২২) নামে দুই যুবককে শনাক্ত করে তাঁদের টাঙ্গাইলের মধুপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে তুরাগ সিটিতে নির্মাণাধীন একটি ১০ তলা ভবনের তৃতীয় তলার ফ্ল্যাট থেকে সুদীপ্তের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গ্রেপ্তার দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে এসআই হাসমত বলেন, গ্রেপ্তার দুজন ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করে ঢাকায় চাকরির জন্য এসেছিলেন। তাঁরা দিয়াবাড়ির ওই ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। তাঁদের মধ্যে আবদুল্লাহর বাড়ি ঠাকুরগাঁওয়ে। নিহত সুদীপ্ত রায়ের বাড়িও ঠাকুরগাঁওয়ে। একই এলাকার হওয়ায় আগে থেকেই দুজনের পরিচয় ছিল।

এসআই হাসমত বলেন, ওই পরিচয়ের সূত্র ধরে শুক্রবার বিকেলে মুঠোফোনে সুদীপ্তকে দিয়াবাড়ির ফ্ল্যাটে ডেকে নেন আবদুল্লাহ। সেখানে যাওয়ার পর রাতে কৌশলে সুদীপ্তর মুঠোফোন নিয়ে নেন তিনি। সুদীপ্ত ঘুমানোর পর গ্রেপ্তার দুজন পরিবারের কাছে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চান।

এসআই হাসমত বলেন, সকালে সুদীপ্ত নিজের মুঠোফোন খুঁজে পাচ্ছিলেন না। তখন আবদুল্লাহ ও জুনায়েদ মুঠোফোনটি দিতে চাননি। একপর্যায়ে মুঠোফোন নিয়ে সুদীপ্ত তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেন। তখন সুদীপ্তকে তাঁর বাবা রাতে ৮০ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়ার কথা জানান। পরে এ নিয়ে আবদুল্লাহ ও জুনায়েদের সঙ্গে কথা–কাটাকাটি হয় সুদীপ্তর।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুদীপ্তর গলায় আঘাত করেন আবদুল্লাহ। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুদীপ্তর গলায় আরও আঘাত করা হয়। সুদীপ্তর মৃত্যুর পর মরদেহ গুম করার চেষ্টা করেন দুজন। কিন্তু সেটি না পেরে তাঁরা সেখান থেকে পালিয়ে যান।

এদিকে গত শনিবার সুদীপ্তর বাবা হিমাংশু কুমার রায় বাদী হয়ে ভাটারা থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার সূত্র ধরেই হত্যাকারীদের শনাক্ত করা হয় বলে জানান এসআই হাসমত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ