সমুদ্র সৈকতে বারবিকিউর নামে পচা মাছ খাচ্ছেন না তো
Published: 11th, January 2025 GMT
সাগরকন্যা কুয়াকাটা, বাংলাদেশে একমাত্র সমুদ্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত উভয়ই দেখা যায়। তাই সারা বছর দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটকের আনাগোনা কুয়াকাটার সমুদ্র সৈকতে। কিন্তু কুয়াকাটা যেন পচা মাছের আখড়া। পর্যটকদের অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে পচে যাওয়া মাছগুলোই তাজা মাছ হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। পর্যটকদের চোখে ধুলো দিয়ে তাজা মাছ বলে পচা মাছ বারবিকিউ কিংবা ফ্রাই হিসেবে পরিবেশন করছেন এখানকার এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী।
মাছগুলো রান্নার পর দুর্গন্ধ ঢাকতে ব্যবহৃত হচ্ছে অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টিং সল্ট, আজিনামটো, সুগন্ধির মতো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর পদার্থ। যা খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা। চোখের সামনেই বারবিকিউ কিংবা ফ্রাই করে দেওয়া হবে এই ছলনার সুযোগ নিয়ে পর্যটকদের পরিবেশন করা হচ্ছে এসব পচা মাছ। বাস্তবে এসবের আড়ালে প্রতিটা স্তরে স্তরে মিশে আছে প্রতারণা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাজিয়ে রাখা মাছগুলো এতটাই পুরোনো থাকে যে মাছের চোখ পর্যন্ত শরীর থেকে বাইরে বেরিয়ে আসে। দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মাছগুলো প্রদর্শন করা হয় বাল্বের উজ্জ্বল আলোর নিচে, কোনো বরফের ব্যবহার ছাড়াই। ফলে তাপ ও আলোর উত্তাপে আরো দ্রুত পচন শুরু হয় মাছগুলোতে।
অধিকাংশ মাছই যে পচা তা বোঝা যায় কয়েকটি নমুনা দেখলেই। মাছগুলোর চোখ বেরিয়ে এসেছে শরীর থেকে। কানকো ফ্যাকাশে কিংবা পুরোপুরি কালো। কোনোটার আবার পেট থেকে বেরিয়ে আসছে নাড়িভুঁড়ি। আঁশওয়ালা মাছগুলোর আঁশগুলো অবিন্যস্ত, খুলে খুলে পড়ছে। এগুলো নির্দেশ করে মাছগুলো অনেক পুরোনো। এই পচা মাছের দামও চাওয়া হয় আকাশচুম্বী। এ ছাড়াও অসাধু ব্যবসায়ীরা মাছগুলো এমন করে প্রদর্শন করে কিংবা মাছগুলো সম্পর্কে বর্ণনা করে যে পর্যটকেরা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয় যে এগুলো তাজা মাছ।
পর্যটকেরা এভাবে প্রতারিত হলে সমুদ্র সৈকতগুলোতে ঘুরতে আসতে নিরুৎসাহিত হবে। এতে আমাদের পর্যটন খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পচা মাছ চেনার অনেক উপায় আছে। যেমন পচা মাছের চোখের চারপাশ বিবর্ণ, সাদা ও ঘোলাটে হয়ে যাবে। ফরমালিন দিয়েও চোখের রঙের পরিবর্তন সম্ভব না। ফ্রেশ মাছের কানকো হবে উজ্জ্বল লাল কিংবা গারো মেরুন। কানকোতে রং ব্যবহার করা হয়েছে কিনা তা মাছের কানকোতে হাত দিয়ে যাচাই করা যেতে পারে। পচা মাছের শরীরে চাপ দিলে তা পূর্বের অবস্থায় ফিরে আসবে না, চাপ দেওয়ার অংশ দেবে যাবে।
পর্যটকদের সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উচিত নিয়মিত এ সকল ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোকে মনিটরিং করা এবং এ সকল লোভী ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা। এর মাধ্যমে সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকেরা এই প্রতারণার থেকে কিছুটা হলেও রেহাই পাবে। পাশাপাশি তাদের পছন্দনীয় তাজা সামুদ্রিক মাছের স্বাদ গ্রহণ করতে পারবে। পর্যটন খাত যেহেতু আমাদের অর্থনীতির জন্য একটি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র, তাই প্রশাসনের এ বিষয়ে নজরদারি অতীব জরুরি।
প্রজ্ঞা
শিক্ষার্থী, অর্থনীতি বিভাগ
ইডেন মহিলা কলেজ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদে পানি বেড়ে যাওয়ায় ডুবে গেছে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু। দুর্ঘটনা এড়াতে পর্যটকদের সেতুটিতে উঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে রাঙামাটি পর্যটক কমপ্লেক্স।
পর্যটক কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে গত সোমবার সেতুর কিছু অংশে পাটাতনের ওপর পানি ওঠে। তবে আজ বুধবার সকাল ছয়টার দিকে পানি বেড়ে সেতুটি তলিয়ে যায়। এ পরিস্থিতিতে সকাল ১০টার দিকে সেতুতে উঠতে পর্যটকদের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা সকালে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেতুর পাটাতনের ওপর এখন চার ইঞ্চির মতো পানি রয়েছে। পর্যটকদের জন্য সেতুতে উঠতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও নিকটবর্তী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দারা সেতু দিয়ে পারাপার করতে পারবেন।’