বিশ্বব্যাংকের তালিকাভুক্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বৃত্তি আছে। সম্পূর্ণ বিনা মূল্যে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ আছে এ বৃত্তিতে। বৃত্তির কিতাবি নাম ‘জয়েন্ট জাপান ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপ’। জাপান ও বিশ্বব্যাংক স্নাতকোত্তরে বৃত্তি নিয়ে বিশ্বের ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ মেলে এ বৃত্তি পেলে।

প্রতিবছর শিক্ষার্থীরা দুটি সময়ে এ বৃত্তির জন্য আবেদন করার সুযোগ পান। অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডো-১–এ বছরের ১৩ জানুয়ারি থেকে আবেদন শুরু হবে। ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন আগ্রহী প্রার্থীরা। এ ধাপের নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয় মার্চে। অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডো-২–এ আবেদন শুরু হবে ২৫ মার্চ থেকে। এ ধাপে আবেদন চলবে আগামী ২৪ মে পর্যন্ত। নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে ২০২৪ সালের জুনের দিকে।

জয়েন্ট জাপান ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্র্যাজুয়েট স্কলারশিপের আওতায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস, হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব টোকিও, ইউনিভার্সিটি অব লিডস, ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ মিলবে। বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাংকের তালিকাভুক্ত উন্নয়নশীল দেশগুলোর শিক্ষার্থীরা এ স্কলারশিপে আবেদনের সুযোগ পাবেন।

সুযোগ-সুবিধা—

*সম্পূর্ণ টিউশন ফি মুক্ত

*বিমানে যাতায়াতের খরচ

*চিকিৎসা বিমা সুবিধা দেবে

*মাসিক উপবৃত্তি দেবে (আবাসন, খাবার ও বই ক্রয়ের ব্যয় বহন করা যাবে);

আবেদনের যোগ্যতা—

*বিশ্বব্যাংকের সদস্যভুক্ত উন্নয়নশীল দেশের নাগরিক হতে হবে

*কোনো উন্নত দেশের দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকা যাবে না

*সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে হবে

*আবেদনের তারিখের ন্যূনতম তিন বছর আগে স্নাতক সম্পন্ন করতে হবে

*স্নাতকের পর ন্যূনতম তিন বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে

*যুক্ত থাকতে হবে কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে

*সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে হবে

যে যে খরচ শিক্ষার্থীকে বহন করতে হবে—

আরও পড়ুনব্রুনেই দারুসসালাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃত্তি, মাসে ভাতা ২ লাখ টাকার সঙ্গে নানা সুবিধা০৮ জানুয়ারি ২০২৫

*ভিসা আবেদনের খরচ;

*পরিবারের সদস্যদের খরচ;

*অতিরিক্ত একাডেমিক কোর্স বা প্রশিক্ষণ খরচ;

*স্টাডি প্রোগ্রাম চলাকালে অতিরিক্ত ভ্রমণ;

*গবেষণাবিষয়ক খরচ, সম্পূরক শিক্ষা উপকরণ, ফিল্ড ট্রিপ, ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বা ইন্টার্নশিপ ও শিক্ষাগত সরঞ্জাম। যেমন কম্পিউটার;

*আবাসিক পারমিট ফি;

আরও পড়ুনসব পাঠ্যবই পেতে অপেক্ষা দীর্ঘ হচ্ছে০৭ জানুয়ারি ২০২৫আবেদনের শেষ তারিখ—

অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডো-১: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

অ্যাপ্লিকেশন উইন্ডো-২: ২৪ মে ২০২৫;

আবেদন যেভাবে—

আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন করতে হবে অনলাইনে। আবেদনের পদ্ধতিসহ অন্য বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।

https://www.

worldbank.org/en/programs/scholarships

আরও পড়ুনদশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে হবে এক বছরে০৫ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনসুইজারল্যান্ডের জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেলোশিপ, জিআরই–আইইএলটিএস–টোয়েফলে আবেদন, মিলবে ১০–১৫ হাজার সুইস ফ্রাঙ্ক০৭ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনজাপানে ৩-৬ মাসের ইন্টার্নশিপ, বিমান টিকিট-আবাসন-ইনস্যুরেন্সের সঙ্গে দিনে ২৪০০ ইয়েন০৬ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়

‘তাণ্ডব’ সিনেমার গান ‘লিচুর বাগানে’ প্রকাশের পর রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে। কফি শফ থেকে বাস, মেট্রোরেল আশপাশে কান পাতলে গানটা শোনা যাচ্ছে। কেউ না কেউ শুনছেন। সামাজিক মাধ্যমের স্টোরি ও রিলসেও গানটি ভেসে বেড়াচ্ছে। চরকি ও এসভিএফের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত গানটির আজ পর্যন্ত (১২ এপ্রিল ২০২৫) ভিউ হয়েছে যথাক্রমে ১২ মিলিয়ন ও ৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন।

উচ্ছ্বসিত অনেক দর্শক গানটি নিয়ে মন্তব্যও করেছেন। তাহসিন নামের এক শ্রোতা লিখেছেন, ‘গানটির প্রতিটি সুর, দৃশ্য ও পরিবেশনায় বাঙালির ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অপূর্ব রূপ ফুটে উঠেছে। যাত্রাপালার ফিল্মের আবহে তৈরি এই গানটি যেন গ্রামীণ বাংলার প্রাণস্পন্দন তুলে ধরেছে। লোকেশন থেকে শুরু করে কস্টিউম, প্রতিটি ডিটেইলে আছে নিখুঁত যত্ন।’

গানটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে বন্ধুদের মধ্যে খুনসুটিও চলছে। বন্ধুকে মেনশন দিয়ে কেউ যেমন প্রশ্ন করছেন, ‘কী রে, বেড়া ডিঙাতে পারলি?’ আবার কেউ জিজ্ঞেস করছেন বল তো, ‘“লিচুর বাগানে” কেন “পিরিতের বেড়া” দিতে হয়?’

প্রশ্নটির উত্তর খোঁজার চেষ্টা করা যাক। শুরুতেই ‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, ‘কে এই ছত্তার পাগলা’ শীর্ষক প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে কিছু তথ্য জেনে নেওয়া যাক। গবেষক সরোজ মোস্তফার মতে ‘কে দিল পিরিতের বেড়া লিচুরও বাগানে’ পঙ্‌ক্তির রচয়িতা ও সুরকার ছত্তার পাগলা। তবে সংগীতগবেষক গৌতম কে শুভর মত ভিন্ন। তাঁর মতে, ‘এটি মূলত প্রচলিত ঘেটু গান। “কে দিল পিরিতির বেড়া লিচুর বাগানে?” অংশটি মূল গানের অংশ। ছত্তার পাগলা নিজের মতো করে এর সঙ্গে কথা সংযোজন করেছেন। নেত্রকোনায় ছত্তার পাগলার লেখা রূপটিই বিখ্যাত হয়েছে।’ ২০১৪ সালের এপ্রিলে মারা গেছেন ছত্তার পাগলা। জীবদ্দশায় রচনা ও সুরারোপ করেছেন কয়েক শ গান। মৃত্যুর বছর তিনেক আগে তাঁর কাছ থেকে গানটি শুনে হাতে লিখে রেখেছিলেন আল মামুন চৌধুরী।

আল মামুন চৌধুরীর লেখা অনুযায়ী গানটির কথা:
কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে
লিচুরও বাগানে গো সই…লিচুরও বাগানে …(ঐ)
পাখি খাইছ না লিচু, বন্দে খাইবো
বন্দে লিচু খাইয়া, খুশি হইবো
আমার কাছে আইসা কইবো
কত শান্তি দিবো আমার মনেপ্রাণে (ঐ)
ছোট ছোট লিচুগুলি, বন্দে তুলে আম্বো তুলি
বন্দে দেয় গো আমার মুখে,
আমি দিতে চাই বন্ধুর মুখের পানে…(ঐ)
মিষ্টি লিচু খাইয়া বন্দে, বাঁশি বাজায় মন আনন্দে
আমার মনে লাগে সন্দে বন্ধু সম্ভব জাদু জানে (ঐ)
বাঁশি হাতে পলায় মালা, তারে চায় ছত্তার পাগলা,
করব লইয়া উলামেলা, (২) প্রাণবন্ধুর সনে…(ঐ)

সরল অর্থে ‘বেড়া’ হচ্ছে  প্রতিবন্ধকতা তথা বাধা তৈরির উপকরণ। আর ‘পিরিতের বেড়া’ মানে ভালোবাসায় বাধা। কিন্তু ভালোবাসার এই বাধা তথা প্রতিবন্ধকতা ‘লিচুর বাগানে’ কেন? কবিতা তথা গানে অর্থের তারতম্য অর্থের অনুগত না হয়ে বোধ কিংবা ভাবনার পরবশে প্রস্ফুটিত হয়। ব্যক্তিবিশেষে তা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ লাভ করে, ভিন্ন ভিন্ন মূল্য পায়।

আরও পড়ুন‘লিচুর বাগানে’ গানটি দিয়ে আলোচিত, কে এই ছত্তার পাগলা ০৬ জুন ২০২৫

‘কে দিল পিরিতের বেড়া, লিচুরও বাগানে’ একটি ‘ঘাটু গান’ বা ‘ঘেটু গান’। এই গান প্রসঙ্গে জানা যায়, এই গানের অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল নৃত্য। অল্প বয়সী একটি ছেলেকে মেয়ে সাজিয়ে তার নৃত্যের মধ্য দিয়ে ঘেটু গান পরিবেশিত হতো। সঙ্গে থাকত ঢোল, হারমোনিয়াম, বাঁশি ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র। কয়েকটি ‘ঘেটু গানে’র দৃষ্টান্ত দেখা যাক।
(১)
‘তুই আমারে চিনলে নারে
আমি তো রসের কমলা।
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি
মধ্যে নলের বেড়া।’
(২)
ঘুমাইলা ঘুমাইলারে বন্ধু
পান খাইলায়না
এক বালিশে দুইটি মাথা
সুন্দর কইরা কওরে কথা।
গানগুলো থেকে উপলব্ধি করতে কষ্ট হয় না যে ‘ঘেটু গানে’ যেমন ভাষার সারল্য আছে, তেমনিভাবে রূপকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে যাপিত জীবনের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্ঠে থাকা নানা উপকরণ। আর এ ক্ষেত্রে গান রচনার সময় রচয়িতা তাঁর আশপাশ থেকেই গান নির্মাণের উপকরণগুলো যে নিয়ে থাকবেন, সেই ধারণাও পাওয়া যায়। ‘লিচুর বাগানে’ গানের ক্ষেত্রেও বোধ করি এটা ঘটেছে। তাই এই গানে যেমন ‘লিচু বাগানে’র কথা আছে, একইভাবে আছে ‘পাখি’, ‘বাঁশি’ ও ‘লিচু’র কথাও। পাখিকে লিচু না খাওয়ার অনুরোধ করলেও পাখি যেন খেতে না পারে সে কারণেই যে বেড়া দেওয়া হয়েছে; সেই ব্যথাও গানটিতে ফুটে উঠেছে। সব মিলিয়ে ‘লিচুর বাগান’ শেষ পর্যন্ত ‘লিচুর বাগানে’ সীমাবদ্ধ থাকেনি। হয়ে উঠেছে ভালোবাসার প্রতীক।

কথায় আছে, ভালোবাসা জয় করে নিতে হয়। জিতে নেওয়ার মধ্যেই আছে অপার আনন্দ। ভালোবাসায় প্রতিবন্ধকতা থাকাটা মোটেও দোষের নয়। বরং বাধা না থাকাটাই যেন আশ্চর্যের। একইভাবে ভালোবাসা জিতে নেওয়ার পরও পেয়ে গেছি বলে হাল ছেড়ে দিলে চলে না। ‘লিচুর বাগান’কে এ ক্ষেত্রে ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করলে, ‘লিচুর বাগানে’ ‘পিরিতের বেড়া’ তথা ভালোবাসার বেষ্টনী দেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত। কেননা ‘ভালোবাসা’কে ভালোবাসা দিয়েই আগলে রাখতে হয়। প্রবল যত্নে আঁকড়ে রাখতে হয়। যেন কোনো কৌতূহলেই তা দুলে না ওঠে, হারিয়ে না যায়।

আরও পড়ুনসাবিলা তো ‘লিচুর বাগানে’ দিয়ে কী যে আগুন লাগিয়ে দিল...০৫ জুন ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সেরা
  • একঝলক (১৫ জুন ২০২৫)
  • ‘লিচুর বাগানে’ যে কারণে ‘পিরিতের বেড়া’ দিতে হয়
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৫ জুন ২০২৫)
  • অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আরও যাঁরা পেয়েছেন ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০২৫’
  • সৌদি আরবের ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, আবেদনের শেষ তারিখ আজ 
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৪ জুন ২০২৫)
  • মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কে মাস্টার্স, ক্লাস শুক্র ও শনিবার
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৩ জুন ২০২৫)