পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের এমডি-পিডিকে অপসারণের দাবি
Published: 12th, January 2025 GMT
পটুয়াখালীর পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদুল আলম ও প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মাওলাকে অপসারণসহ ৯ দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভূমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্তরা।
রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুর বারোটায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য রবিউল আউয়াল অন্তর, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মাহবুবুল আলম নাঈম, মেহেদী হাসান ইলিয়াস, শহিদুল ইসলাম, রেজাউলর প্যাদা ও বিলকিস বেগমসহ অনেকে।
২০১৭ সালে উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে ১ হাজার একর জমির উপর নির্মাণ করা হয় পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র। ভূমি অধিগ্রহণের সময় ক্ষতিগ্রস্থদের বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন ধরে এমন কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বক্তারা ভূমি অধিগ্রহনকৃত পরিবারকে তিন গুণ অর্থ প্রদান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি প্রদান, দ্রুত সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের আটকে থাকা জায়গার টাকা প্রদান ও স্বপ্নের ঠিকানায় বসবাসকারীদের জীবনমান উন্নয়নসহ ৯ দফার দাবি জানান।
তাদের দাবি মানা না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান ফটকে অবস্থান কর্মসূচিসহ আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুশিয়ারি দেন।
ধানখালী ইউনিয়নের মাছুয়াখালী গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্য মেহেদী হাসান ইলিয়াস বলেন, “পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কোনো শেষ নেই। নির্বাহী প্রকৌশলী জার্জিস তালুকদার জর্জ নিজেই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে অন্তত ৪০ থেকে ৫০টি মহিষ পালন করেন, গোপনে কয়লা বিক্রি করেন। কোন আইনে সরকারি অফিসে মহিষ পালনের নিয়ম আছে? আমরা আমাদের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে দাঁড়িয়েছি। আমাদের দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচি পালন করা হবে।”
একই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আরেক সদস্য রবিউল আওয়াল অন্তর বলেন, “আমরা বার বার রাস্তায় দাঁড়িয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবির বিষয়ে বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বিশেষ করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুই কর্মকর্তা ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্লান্ট অন্তহীন দুর্নীতি করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।”
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী (অ্যাডমিন) জার্জিস তালুকদার বলেন, “এটি একটি ছোট খাটো মহিষের খামারের মতো। এটি নিয়ে অভিযোগ করার মতো কিছু দেখছি না। তবে একজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে তো যে কোনো বিষয় নিয়েই করা যায়।”
পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আব্দুল মাওলা বলেন, “তাদের সকল দাবি দাওয়া মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তারা যেগুলো করছে তা উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আর আমাদের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫