শেখ হাসিনার সরকারের পতনের মাধ্যমে বিএনপি ক্ষমতায় চলে এসেছে ভাবা ভুল হবে বলে মন্তব্য করেছেন চাঁদপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোশারফ হোসেন। 

মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে হাসিনার পতন হয়েছে, মানেই বিএনপি ক্ষমতা পেয়ে গেছে; তা ভেবে রাজপথ ছেড়ে ঘরে বসে থাকলে চরম ভুল হবে। তাই সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থেকে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে একযোগে কাজ করতে হবে।’’

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) চাঁদপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডে বিএনপির রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফার লিফলেট বিতরণকালে পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

সাঁথিয়ায় বিএনপি নেতা শামসুর রহমান বহিষ্কার

যশোরে বিএনপির মিলনমেলা

মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘এই রাষ্ট্র কীভাবে চলবে, সেই রূপরেখা ৩১ দফায় তুলে ধরা হয়েছে। বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের প্রতিটি নেতাকর্মীকে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই ৩১ দফা মুখস্ত রাখতে হবে। একইসঙ্গে প্রতিটি ঘরে ঘরে ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনে দাবিগুলো পৌঁছে দিতে হবে। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপি ক্ষমতায় এসে যোগ্য জনপ্রতিনিধি দ্বারা এ রাষ্ট্র পরিচালনা হবে।’’

এ দিন বিকেলে চাঁদপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের বিদ্যাবতি খাল সড়ক, ছৈয়াল বাড়ী, মাঝি বাড়ী, মোল্লাবাড়ী, প্রফেসর পাড়া, জিয়া হোস্টেল ও চিত্রলেখা মোড়সহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ৩১ দফা সম্বলিত দলীয় লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এতে পথসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন মাঝি, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন আকাশ।

চাঁদপুর পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আলমগীর হোসেন মৃধার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের ছৈয়ালের সঞ্চালনায় পথসভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা দলের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক নার্গিস খান, সদর উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নাল মাতাব্বর, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিরন মাঝি, কাইয়ুম খান প্রমুখ।
 

ঢাকা/জয়/বকুল

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক

রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।

শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।

শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।

তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।

গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ